সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে গম আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্য অতিক্রম হতে যাচ্ছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:০১ পিএম

ছত্রাকবাহী ব্লাষ্ট সহ নানা প্রকৃতিক দূর্যোগ কাটিয়ে বিগত ৫ বছর পরে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় চলতি রবি মৌসুমে লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর বেশী জমিতে আবাদের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার টন গম উৎপাদন লক্ষ্য অতিক্রম করতে যাচ্ছে। ফলে আগামী বছরগুলোতে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গম আবার একটি ভাল অর্থকারী দানাদার খাদ্য ফসল হিসেবে অবস্থান সংহত করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলের ১১ জেলায় কৃষি মন্ত্রনালয় ৪৯ হাজার ৫৯৯ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্য নির্ধারন করলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রকৃত আবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার হেক্টরে। ফলে এ অঞ্চলে গমের উৎপাদন এবার প্রায় ১.৬৫ লাখ টনে উন্নীত হবার বিষয়ে আশাবাদী মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন।
চলতি অর্থ বছরে প্রায় ১০ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে আমন, আউশ, বোরো ও গম মিলিয়ে প্রায় ৫০ লখ টন দানাদার খাদ্যফসল উৎপাদনের আশা করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। চলতি রবি মৌসুমে দেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমিতে গম আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম সম্ভব হচ্ছে। গত বছর অবশ্য আবাদি জমির পরিমান লক্ষ্যমাত্রার কিছুটা পেছনে ছিল।
তবে বছর চারেক আগে ছত্রাকবাহী ‘ব্লাষ্ট’ রোগের সংক্রমনে গম অবাদে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা নিরুৎসাহী মনোভাব সৃষ্টি হয়। সে সময় সরকারও অক্রান্ত এলাকায় পরবর্তি ৩টি মৌসুমে গম আবাদকে নিরুৎসাহিত করেছিল। ফলে অত্যন্ত সম্ভবনাময় এ ফসল অবাদে অগ্রগতি থেমে যায়। তবে গত ৩বছর দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের কোথাও গমের ব্লাষ্ট রোগের সংক্রমন হয়নি। প্রকৃতিক ন্ বাধা অতিক্রম করেও দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় এবার ৪৯ হাজার ৫৯৯ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে প্রায় ৫৬ হাজার হেক্টরে গম অবাদ সম্পন্ন করেছেন কৃষি যোদ্ধাগন। তবে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় এখনো গমের গড় উৎপাদন জতীয় পর্যায়ের চেয়ে কিছুটা নিচে, হেক্টর প্রতি ২.৩২টন। অরদিকে বৃহত্বর ফরিদপুরের ৫ জেলায় তা ৩ টনের কিছুটা বেশী। তবে গত কয়েকটি বছরের খড়া কাটিয়ে এবার কৃষকরা গমের খুব ভাল দাম পাবার ব্যাপারেও আশাবাদী। গত বছর মনপ্রতি ১ হাজার থেকে হাজার ৫০ টাকায় গম বিক্রী করলেও এবার নুন্যতম দেড় হাজার টাকা পাবার ব্যাপারে আশাবাদী দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিযোদ্ধাগন।
ফেব্রুয়ারীর শেষ থেকে মার্চের শেষভাগে গম ঘরে তুলে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততাও শুরু হবে। চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় প্রায় ৩ লাখ ৬৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৪ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে এখন মাঠে কৃষি যোদ্ধাগন। তবে আবাদ লক্ষ্য অতিক্রম করে এবার বোরো উৎপাদন ১৭ লাখ টনে উন্নীত হবার বাপারেও আশাবাদী মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। অঅআদ ও গতছরের চেয়ে অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে বেশী হতে পারে।
তবে দক্ষিনাঞ্চলে কৃষি সেচব্যবস্থা আরো সম্প্রসারনের যথেষ্ঠ সুযোগ ও সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। শুধুমাত্র বরিশাল বিভাগেই সেচযোগ্য জমির পরিমান প্রায় ৫ লাখ হেক্টর হলেও চলতি মৌসুমে মাত্র ২ লাখ হেক্টরের সামান্য বেশী জমিতে বোরো এবং গমের সেচাবাদ হচ্ছে।
তবে বৃহত্বর ফরিদপুরে সেচযোগ্য জমির প্রায় ৮০ ভাগই বোরো ও গম আবাদে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষিবীদদের মতে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় সেচযোগ্য জমির অন্তত ৮০ ভাগ ধান ও গম আবাদের আওতায় আনা সম্ভব হলে এঅঞ্চলে দানাদার খাদ ফসলের উৎপাদন অরো অন্তত ৫ লাখ টন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে কৃষিপণ্যের মূল্য উৎপাদন ব্যায়ের সাথে সংগতিপূর্ণ রাখারও তাগিদ দিয়েছেন কৃষি অর্থনীতিবীদগন ।
বর্তমানে বরিশাল কৃাষি অঞ্চলের ১১ জেলা প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকা। যারমধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলাতেই উদ্বৃত্তের পরিমান প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন