দেশে আহলে হাদিস অনুসারীদের দুই কোটি ভোট রয়েছে, সেগুলো নিজের পকেটে বলে দাবি করেছেন ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ। তিনি নিজেকে আহলে হাদিসের লোক দাবি করে জানিয়েছেন, চলতি সংসদে আহলে হাদিসের ৩০ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন, তবে তারা নিজেদের এই পরিচয় দেন না।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
নিজেকে আহলে হাদিসের প্রধান উপদেষ্টা দাবি করে রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমাকে সভাপতি (আহলে হাদিস) করতে চেয়েছিল। আমার অফিসে বসে কমিটি বানিয়ে দিই। আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই। এরা কোনোদিন জামায়াত করে না। আহলে হাদিস হলো- একমাত্র আমি যেদিকে যাবো, তারাও সেদিকে থাকবে।’
ওয়ান ইলেভেনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আপা (প্রধানমন্ত্রী) তখন আমেরিকা থেকে লন্ডনে এসেছেন। আমি ইতালি থেকে লন্ডনে যাই। রিজেন্ট পার্কে একটি ফ্ল্যাটে উঠেছেন। আমাকে খবর পাঠিয়েছেন। আমাকে বললেন- রহমতুল্লাহ, ঢাকায় তো মায়া (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) নেই, আজম (মির্জা আজম), নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) নেই। আপনি না গেলে সাহারা কী কোনো লোক জোগাড় করতে পারবেন? তখন আমি ঢাকায় আসি।’
ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, ‘যেহেতু আমি অনেস্ট (সৎ) লোক। এলাকার সব রাস্তাঘাট করে দিয়েছি। উন্নয়ন করেছি। আমি এসে কেমনে কেমনে দুই লাখ লোক জোগাড় করে ফেললাম। তারপর আপাকে রিসিপশন দিলাম। আপা বললেন, এত লোক কেমনে জোগাড় করলেন? আমি বলেছিলাম, আমি এটা পারি।’
রহমতুল্লাহ বলেন, ‘অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে মিনিস্টার করলো না কেন? তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাকে মেয়র করতে চেয়েছেন, মিনিস্টার করতে চেয়েছেন।’
‘আপনার পয়েন্ট অব অর্ডারটা কী?’ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে (একটি পত্রিকায়) ফখরুল বলেছেন, এক-এগারোর পর কারা পালিয়েছিলেন মানুষ জানে। এটা তিনি আমাদেরকে মিন করেছেন। আমি পেপারটা আপনার কাছে পাঠিয়ে দেবো। আপনি পড়লে বুঝতে পারবেন।’
এর আগে গত রোববার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রহমতুল্লাহর দেওয়া বক্তব্য আলোচিত হয়।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু ঢাকার এমপি। এখনকার মধ্যে মোস্ট সিনিয়র এমপি এখানে মতিয়া আপা আছেন। আমার চেয়ে মোস্ট সিনিয়র পাঁচ-ছয় জন আছেন। আমার বয়স এখন ছিয়াত্তর চলতেছে। আমি আর ফিরোজ রশীদ একসঙ্গে পড়তাম। আমার ছেলের বয়সই ৪৯। অনেকই প্রশ্ন করে, আমি পাঁচবারের এমপি। মন্ত্রী হলাম না কেন?’
রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, হানিফ সাহেব মারা যাওয়ার পরে মেয়র অফার করেছিলেন। আমি আপারে বললাম ওখানে যাবো না। এখানে টেবিলে চুরি করে, বাতাসে চুরি করে এবং এখানের মধ্যে সব চোর। আমি যাবো না।’
তিনি দাবি করেন, এরপর তাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এইসব কারণে সেইসময়ও রাজি হননি।
সরকারি দলের এই এমপি বলেন, আমি ঢাকা শহরে সর্বপ্রথম ট্যাক্স বাহাদুর নির্বাচিত হয়েছি। আমার অনেক কোম্পানি আছে। খালি দুইটা নামই বলবো। একটা হলো এপেক্স ট্যানারি। আপনারা এপেক্স ট্যানারিকে খুব ভালোভাবে চেনেন। আরেকটা হলো এফডি ফুটওয়্যার। এটা আমার ছেলে করছে। এটারও টার্নওভার ৫শ কোটি টাকার মতো। আমার ছেলে বাংলাদেশের বড় ওষুধ কারখানা করবে, জায়গাও কেনা হয়ে গেছে ৮০ বিঘা। আল্লাহর রহমতে ব্যাংকে কোনও দেনা নাই। আমাদের কী সম্পত্তি আছে, এটা ওপেনলি বলবো না। এটা শুধু মতিয়া আপা এবং প্রধানমন্ত্রীকেই বলবো।
এ সময় বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করেন তিনি। রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমি আহলে হাদিসের প্রধান উপদেষ্টা। সারাদেশে এর প্রায় আড়াই কোটি ভোটার আছেন। আমার চামড়ার সাপ্লাইয়ার ও তাদের পরিবার মিলিয়ে আছেন প্রায় এক কোটির মতো। ধাক্কা দিয়ে সরকার ফেলা দূরের কথা, তারা (বিএনপি) আওয়ামী লীগের একটা সিটও নিতে পারবে না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন