গোপালগঞ্জে মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামে নিখোঁজের ৬দিন পরে মৎস্য শিকারী নির্ভসা বৈরাগীর (৬০) লাশ উদ্ধার এবং লাশ গুমের মূল হোতা অরুন দাসকে খুলনা হতে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার গভীর রাতে আটক অরুন দাসের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি মুকসুদপুরের চান্দার বিলের কচুরি পানার নীচ থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার বিকেল ৪টায় মুকসুদপুর থানায় অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোঃ মোহাইমিনুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, গত ২৫ জানুয়ারী মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের মৃত. যতীনময় বৈরাগীর ছেলে মৎস্য শিকারী নির্ভসা বৈরাগী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাড়ি হতে বড়শী নিয়ে মাছ ধরার জন্য চান্দার বিলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় পরদিন ২৬ জানুয়ারী তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোজখবর নেয়ার একপর্যায় জানতে পারেন চান্দারবিলে মাছ ধরার সময় একই উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের ঠান্ডা দাসের ছেলে অরুন দাসের ইরি ধানের ক্ষেতে ইঁদুর নিদনের জন্য স্থাপিত জেনারেটরের বৈদ্যুতিক সঞ্চলন লাইনের তারে জড়িয়ে নির্ভসা বৈরাগী মারা যান। পরে নিখোঁজ নির্ভসা বৈরাগীর লোকজন কলিগ্রামের আরেক মৎস্য শিকারী মিনি বৈরাগীর বাড়িতে খোজ খবর নিতে গেলে নিখোঁজ নির্ভসা বৈরাগীর ব্যবহৃত মাছ রাখার পাতিল, ঢাকনা, মোবাইল ফোন ও কাপড়চোপড় দেখতে পান। এব্যপারে মিনি বৈরাগীকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, নির্ভসা বৈরাগী ওনদিন তার নিজ কুঁড়ে ঘরে অবস্থান করেন এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বড়শী নিয়ে মাছ ধরতে চলে যান। তার পর সে আর ফিরে আসেননি। সে কারনে তার ব্যবহৃত মালজিনিস তিনি তার বাড়িতে নিয়ে যান।
এরপর বিষয়টি চাপা দেওয়ার জন্য চান্দার বিলের দূর্জয়ধনের জোড়া পুকুরের উত্তর পশ্চিম পাশে অরুন দাস ও মিনি বৈরাগী পরস্পর যোগসাজসে নির্ভসা বৈরাগীর লাশ পানির মধ্যে কচুরি পানার নীচে লুকিয়ে রেখে দেয়। এ সংবাদের প্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারী গভীর রাতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অরুন দাসকে খুলনা থেকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। পরে মুকসুদপুর সার্কেলের এএসপি মোঃ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ওইরাতে পুলিশের একটি দল অরুন দাসকে সাথে নিয়ে চাঁন্দার বিলের দূর্জধনের জোড়া পুকুরে যান। সেখানে তার কথা মতো তল্লাশী চালিয়ে নির্ভসের লাশ উদ্ধার কওে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এব্যপারে ভিকটিম নির্ভসা বৈরাগীর ছেলে পিংকু বৈরাগী বাদী হয়ে তার বাবার মৃত্যুর ঘটঁনায় অরুন দাস ও মিনি বৈরাগীকে আসামী করে মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা (নং-২ তারিখ, ০১.০২.২০২৩) দায়ের করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসময় অন্যান্যের মধ্যে মুকসুদপুর সার্কেলের এএসপি মোঃ কামরুজ্জামান , মুকসুদপুর থানার অফিসার ইন চার্চ মোঃ আবু বকর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন মুকসুদপুর থানায় এসআই রফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
চৌধূরী হাসান মাহমুদ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন