ঢাকা বাসের অনুপযোগী হয়েছে বহু আগে। ঐতিহ্যবাহী এই শহরের করুণ পরিণতি একদিনে হয়নি। বহুদিন থেকে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নানা সংকট বাড়তে বাড়তে বর্তমান পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছে। সিডনির ইন্সটিটিউট ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড পিসের ‘ইকোলজিক্যাল থ্রেট রিপোর্ট-২০২২ মতে, বিশ্বের সবচেয়ে কম টেকসই ২০টি শহরের মধ্যে চতুর্থ ঢাকা। ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ২০২২ সালের বাসযোগ্য শহরের তালিকায় বিশ্বের ১৭২টি শহরের মধ্যে ঢাকা ১৬৬তম।
ঢাকাকে তিলোত্তমা নগরী করার জন্য বহু প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং অধোগতি বেড়েছে! ঢাকার সংকটগুলোর অন্যতম ভয়াবহ যানজট। তাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত বিআইডিএস’র তথ্য মতে, রাজধানীর যানজটের কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ১,০১,০৩৬ কোটি টাকা। বুয়েটের মতে, রাজধানীর সড়কে প্রতিদিন মানুষের ৮০ লাখের বেশি কর্ম ঘণ্টা বিনষ্ট হচ্ছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঢাকার যানজটের কারণে শুধু আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৩%। এছাড়া, অন্য ক্ষতি তো রয়েছেই। ঢাকার ভয়াবহ যানজটের কারণ, অতিরিক্ত মানুষ ও যানবাহন, যানবাহনের বিরাট অংশ অযান্ত্রিক, যান্ত্রিক যানেরও বেশিরভাগ মেয়াদ উত্তীর্ণ, প্রয়োজনীয় রাস্তার অভাব, যেটুকু রাস্তা আছে তার অধিকাংশই ভাঙ্গা এবং যানবাহন, দোকান, আন্তঃজেলা বাস-ট্রাকের টার্মিনাল/স্ট্যান্ড ও স্থাপনায় ভরপুর। এছাড়া বেশিরভাগ রাস্তা ভাঙ্গাচোরা। তাই নির্বিঘেœ মানুষ ও যান চলাচল করতে পারে না। ফুটপাত দিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারে না। দোকান ও মোটরসাইকেলে ভরপুর থাকে। মানুষ বাধ্য হয়ে ফুটপাত ছেড়ে মূল রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। তাতে নানা দুর্ঘটনা ঘটে প্রায়ই।
ফুটপাতে দোকান নিয়ে চলে কোটি কোটি টাকার সেলামি ও চাঁদাবাজি। গত ২৯ অক্টোবর খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের হিসাবে তিন লাখ হকারের কাছ থেকে দৈনিক গড়ে ২০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। এ হিসাবে ফুটপাত থেকে প্রতিদিন চাঁদা ওঠে ৬ কোটি টাকা; মাসে ১৮০ কোটি টাকা। কোন এলাকায় কারা হকারের কাছ থেকে চাঁদা নেয়, কার মাধ্যমে নেয় তার বিস্তারিত তথ্য বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে বহুবার। চাঁবাদাজিতে লিপ্ত প্রধানত ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা। এতে কিছু পুলিশের সংশ্লিষ্টতার কথাও জানা যায়। হকারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি নিয়ে হানাহানিও হয় প্রায়ই। তবুও ফুটপাতের দোকানের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। ব্যাপক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কখনো কখনো কোথাও কোথাও হকার উচ্ছেদ হয়। কিন্তু তা একদিক দিয়ে উচ্ছেদ হয়, অন্যদিক দিয়ে পুনরায় চালু হয়! আবার চাঁদার টাকা না পেলেও উচ্ছেদ হয়। অপরদিকে, হকারদের উচ্ছেদ করতে গেলেই তাদের পুনর্বাসনের দাবি উঠে। তাই কতিপয় মার্কেটে কিছু হকারকে দোকান দেয়া হয়েছিল। দেখা গেছে, কিছুদিন পরই তারা সেটা বিক্রি করে পুনরায় ফুটপাতে বসেছে প্রভাবশালীদের সহায়তায়। ফলে ঢাকার ফুটপাত হকার মুক্ত হচ্ছে না। মানুষের ভোগান্তিও কমছে না। হকাররা যে সেলামি ও দৈনিক চাঁদা দেয়, সেটা তারা বাড়ি থেকে দেয় না। পণ্যের মূল্য বাড়িয়েই তা দেয়, যা পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
তথ্য মতে, ঢাকায় হকারের সংখ্যা ৫ লাখের অধিক। হকার প্রতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন করে হলেও ৫ লাখ হকারের মোট পরিবারের সদস্য সংখ্যা ২০ লাখের অধিক। এরা ফুটপাতের দোকানের আয়ের উপর নির্ভরশীল। হকারদের ফুটপাত থেকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করলে তারা পরিবার নিয়ে চরম সংকটে পড়বে। অনেকেই অনাহারের মুখে পড়বে। তারা গ্রাম থেকে আসা লোক, যাদের অধিকাংশই ভূমিহীন এবং নদী ভাঙ্গন ও দুর্যোগপূর্ণ উপকূল এলাকার ঘরবাড়িহীন। তাই তারা আর গ্রামে ফিরে যাবে না। আবার তাদের একসঙ্গে পুনর্বাসন করাও কঠিন। তাই এক নিবন্ধে বলেছিলাম, ঢাকায় হলিডে মার্কেট চালু করা হলে উভয় কূল রক্ষা হবে। ইতোপূর্বে ঢাকায় হলিডে মার্কেট চালু করা হয়েছিল। তার সুফলও পাওয়া গিয়েছিল। তবুও সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনের পাশের সড়কে (পর্যটন ভবন থেকে নির্বাচন কমিশন ভবন পর্যন্ত) চালু করা হয়েছে হলিডে মার্কেট। ডিএনসিসি ও ঐক্য ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এটা হয়েছে। এই মার্কেট উদ্বোধনকালে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি সপ্তাহের ছুটির দিনে (শুক্র-শনিবার) সড়কটির উত্তর ও দক্ষিণ দুই পাশের বিস্তৃত গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে মার্কেটের স্টল বসবে। এই মার্কেটের একপাশে একটি ‘কালচারাল কর্নার’ থাকবে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকা- চলবে। পরীক্ষামূলকভাবে চলা মার্কেটটি সফল হলে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডেই এমন ‘হলিডে মার্কেট’ চালু করা হবে। এছাড়া, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এ রকম মার্কেট চালু করা গেলে উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়বে। এ ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিলে তাদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তাতে সমাজ এগিয়ে যাবে, দেশ এগিয়ে যাবে। এ উদ্যোগটিতে যাতে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা না হয়, সে ব্যাপারে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিবিসির খবরে প্রকাশ, থাইল্যান্ড, হংকং, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হলিডে মার্কেট যুগ যুগ ধরে চলে আসলেও বাংলাদেশে এই মার্কেট স্থায়িত্ব পায়নি। অন্য খবরে প্রকাশ, গত ২০ জানুয়ারি আগারগাঁও হলিডে মার্কেটে মোট ১০,১৭,৮২৯ টাকা বিক্রি হয়েছে, যার সবই দেশীয় পণ্য। অনেক পণ্যে বিশেষ ছাড় দেয়া হচ্ছে। নিত্যপণ্যের অধিকাংশই পাওয়া যাচ্ছে এই মার্কেটে। তবে, দোকানের ফি বেশি, পরিষ্কার শৌচাগার ও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।
পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা আগারগাঁওয়ের হলিডে মার্কেট ভালভাবেই চলছে বলতে হবে। এ ব্যাপারে কারো কোনো আপত্তিও উঠেনি। তবে, কিছু সমস্যা রয়েছে, যা সহজেই দূর করা সম্ভব। ঢাকার সব ওয়ার্ডেই পর্যায়ক্রমে হলিডে মার্কেট চালু করা দরকার। পাশাপাশি শহরের সর্বত্রই হকারদের ব্যবসার সময় দিনের বেলায় বন্ধ করে সন্ধ্যাকালীন তথা বিকেল ৫টা থেকে চালু করা প্রয়োজন। এতে কারো আপত্তি থাকবে না। উপরন্তু সব রাস্তা থেকে অবৈধ যানবাহন চলাচল ও নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময় বিকেল ৪.৩০টা পর্যন্ত করতে হবে। এসব হলে দিনের বেলায় রাস্তা ফাঁকা থাকবে। মানুষ ও যানবাহন নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারবে। যানজট অনেক কমে যাবে। তবে, এ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে কঠোরতা দরকার। যেমন: নির্দিষ্ট সময় ছাড়া যারা রাস্তায় দোকান বসাবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে তাৎক্ষণিকই। উপরন্তু যে দোকান/অফিস/বাড়ির সামনে রাস্তায় দিনের বেলায় দোকান/যানবাহন থাকবে, তার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোপরি যারা হকারদের কাছ থেকে চাঁদা নেবে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া, সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কাজ বছরে শুধু একবার করতে হবে একসাথে। হলিডে মার্কেটের স্থান নির্ধারণসহ এসব বিষয়ে তদারকির দায়িত্ব দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে। তিনি পুলিশের সহায়তায় সার্বিক বিষয়টি দেখভাল করবেন। তাঁদের কার্যক্রম তদারকি করবেন মেয়রদ্বয়। অপরদিকে, হলিডে মার্কেটে দোকানের ফি হ্রাস, পরিষ্কার শৌচাগার, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আবশ্যক। হলিডে মার্কেটে সাংস্কৃতিক কর্মকা- নিঃষ্প্রয়োজন।
বর্ণিত পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে ঢাকার যানজটের মাত্রা অনেক কমবে। আর যানজট মুক্ত হবে মেয়রদ্বয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার ভেতরে আন্তঃজেলা বাস ও ট্রাক ঢুকতে না দিলে এবং বাস রেশনালাইজেশনের প্রচেষ্টা শতভাগ সফল হলে। সর্বোপরি আমিনবাজার হতে টঙ্গী পর্যন্ত নদীতে ওয়াটার বাস চালু করতে পারলে ঢাকার ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। নদীগুলোর ব্রিজের উচ্চতা কম হওয়ায় দ্বিতল বাস চলাচল করতে পারছে না। তাই ব্রিজ ভেঙে নৌ চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হলে নদী দিয়ে দ্বিতল ওয়াটার বাস চলাচল করতে পারবে। মেট্রোরেলের প্রথম রুট চালু হয়েছে। মোট ৫টি রুটের সর্বশেষ ৫ম রুটের কাজ শেষ হবে ২০৩০ সালে। মেট্রোরেলের সব রুট চালু হলে ঢাকার পরিবহন খাতে ব্যাপক কল্যাণ হবে। দেশে প্রথম পাতাল রেল করা হচ্ছে। আজ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এর নির্মাণকাজের ফলক উন্মোচন করবেন। এটি বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, নদ্দা, বাড্ডা ছুঁয়ে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। ৩১.২৪ কিলোমিটার লাইনের দুটি অংশ থাকবে। প্রথমটি বিমানবন্দর-কমলাপুর পর্যন্ত ১৯.৮৭ কিলোমিটার অংশ ভূগর্ভস্থ হবে, ১২টি স্টেশন থাকবে, সময় লাগবে ২৪ মিনিট। দ্বিতীয়টি নতুন বাজার-পূর্বাচল পর্যন্ত ১১.৩৬ কিলোমিটার উড়াল হবে, ৯টি স্টেশন থাকবে, সময় লাগবে ২০ মিনিট। এ রুটের নদ্দা ও নতুন বাজার স্টেশন থাকবে ভূগর্ভে এবং এতে স্টেশন যাত্রীদের রুট পরিবর্তনের জন্য ইন্টার চেঞ্জ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। উপরন্তু দুটি টিউব করা হবে, যাতে দুটি লাইনে নিরবচ্ছিন্নভাবে ট্রেন চলতে পারে। প্রতি ১০০ সেকেন্ড পরপর ট্রেন চলাচল করবে। ৫২.৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালে। তার পর এই রুটে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। অন্যদিকে, টঙ্গী-নারায়ণগঞ্জ ডবল রেল লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের কাঁচা বাজারের আড়ত সায়েদাবাদে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিমানবন্দরের সামনে থেকে বনানী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসয়ে’ হচ্ছে ভায়া হাতিরঝিল। প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এই এক্সপ্রেসওয়ের সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে ৩১টি সংযোগ সড়ক। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে। পদ্মাসেতু দিয়ে এসে যারা পূর্ব দিকে যাবে, তারা যাত্রাবাড়ীর দিকে এবং যারা পশ্চিম দিকে যাবে তারা আমিন বাজারের দিকে যাবে ডাইভার্ট রোড দিয়ে। সেতুতেও যাবে একইভাবে। ঢাকার ভেতরে ঢুকতে হবে না। সে রাস্তা হচ্ছে। আর যারা ঢাকার ভেতরে আসবে তারা শুধু ঢাকায় ঢুকতে পারবে। এসব কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন এবং সব রাস্তা প্রশস্ত ও সার্বক্ষণিক মেরামত করা হলে ঢাকা যানজটমুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। এতে মানুষের ভোগান্তি ও ক্ষতি দূর হবে। জাতীয় উন্নতি বৃদ্ধি পাবে।
রাজধানী ঢাকার ন্যায় দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শহরেও চলছে ব্যাপক যানজট, যার প্রধান কারণ প্রয়োজনীয় রাস্তা না থাকা। উপরন্তু যেটুকু রাস্তা আছে, তার অধিকাংশ ভাঙ্গা ও দখল করে দোকান, স্থাপনা ও যানবাহন রাখা। এতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই ঢাকার ন্যায় সব বিভাগীয় ও জেলা শহরেও হলিডে মার্কেট ও সান্ধ্যকালীন মার্কেট চালু, সব রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা ও যানবাহন উচ্ছেদ করতে হবে। সড়ক ও মহাসড়কেও ব্যাপক যানজট হচ্ছে প্রতিদিনই। এরও প্রধান কারণ, অপ্রশস্ততা, অবৈধ হাট বাজার, দোকান ও অবৈধ যান চলাচল। এতে অনেক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, দুর্ঘটনাও ঘটছে এবং যান বাহনের গতি কম হচ্ছে। গত মে মাসে প্রকাশিত আইএমএফ’র প্রতিবেদন মতে, সড়ক পরিবহনের গতির দিক দিয়ে ১৬২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তলানিতে। গতিবেগ প্রতি কিমি/ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে ১০৭, পাকিস্তানে ৮৬, বাংলাদেশ ৪১। বুয়েটের তথ্য মতে, ২০১৮-২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১.০৯ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০২২ সালে ৬,৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯,৯৫১ জন নিহত ও ১২,৩৫৬ জন আহত হয়েছে। তাই দেশের সব সড়ক ও মহাসড়ক ব্যাপক প্রশস্ত ও দ্বিতল সড়ক নির্মাণ, অবৈধ হাটবাজার, দোকান ও যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। এসব করার দায়িত্ব দিতে হবে সংশ্লিষ্ট মেয়র/পৌর সভার চেয়ারম্যানকে। এছাড়া, নৌ ও রেল পথের কার্যক্রম দ্বিগুণ করতে হবে। তাহলে সড়কে চাপ কমবে। তবেই দেশ যানজট মুক্ত হবে। যানবাহনের চলার গতিবেগ বাড়বে। দুর্ঘটনা কমবে। দেশীয় শিল্পের প্রসার ঘটবে। বছরে ৪-৫% প্রবৃদ্ধি বেশি হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন