সরকারিভাবে চলতি ১৪৪৪ হিজরী সালের হজ প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার হজের খরচ বাড়লো প্রায় সর্বোচ্চ এক লাখ ৬২ হাজার টাকা। সরকারিভাবে একটি প্যাকেজ চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে।
গত বছর হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল জনপ্রতি ৫ লাখ ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এবার বিমান ভাড়া বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে হজ প্যাকেজ ঘোষণা উপলক্ষে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন। রিয়াল ও ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হজের ব্যয় বাড়ছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বিমান সচিব মোকাম্মেল হক, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) মতিউল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব আব্দুল আউয়াল, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নায়েব আলী, হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার, হজ অফিসের পরিচালক হজ মো. সাইফুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (হজ) আবুল কাসেম মো. শাহীন। হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সাংবাদিকদের জানান, হজযাত্রীদের এবার বিমান ভাড়া অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া আরো সহনীয় হওয়া উচিৎ ছিল। একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে তাদের মতামতের ভিত্তিকে হজযাত্রীদের ভাড়া নির্ধারণ করা হলে আরো কম টাকায় হজে যাওয়ার সুযোগ হতো। হাব সভাপতি বলেন, সউদী অংশের ইমিগ্রেশন চলতি বছর ঢাকায়ই সম্পন্ন করা হবে। এতে হজযাত্রীদের ভোগান্তি হ্রাস পাবে। আজ বৃহস্পতিবার হাব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে বলেও হাব সভাপতি উল্লেখ করেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর হজ পালনে গত ৯ জানুয়ারি সউদী আরবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। হজ চুক্তি অনুযায়ী এ বছর আগের মতোই এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞাও উঠে গেছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিনার তাঁবুর সি-ক্যাটাগরির মূল্য অনুসারে সরকারি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মিনার তাঁবুর অবস্থান সংক্রান্ত ক্যাটাগরি গ্রহণের ভিত্তিতে বেসরকারি এজেন্সিগুলো সরকারি প্যাকেজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্ব-স্ব হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে। তাঁবুর অবস্থান ছাড়া অন্য সুযোগ-সুবিধা সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজের মতো নিশ্চিত করতে হবে।’এ বছর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সউদী আরবে গমনকারী শতভাগ হজযাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ‘রুট টু মক্কা চুক্তি’ অনুযায়ী ওই বিমানবন্দরেই অনুষ্ঠিত হবে।
গত বছর থেকে এবার হজ প্যাকেজের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণ তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর রিয়ালের মূল্য ছিল ২১ টাকা, এখন সেই রিয়ালের মূল্য ৩০ টাকা। এক লাখ টাকার বেশি এখানেই চলে আসে। আনুষঙ্গিক ব্যয় খুব একটা বাড়েনি। বিভিন্ন খাতে সমন্বয় করে এ প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। এবার বিমানভাড়া কত জানতে চাইলে ফরিদুল খান বলেন, ‘এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। বিমানভাড়া কেন বেড়েছে তা আপনাদের বিবেচনা করা উচিত। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানভাড়া বেড়েছে। বিমানভাড়া নিয়ে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনদিন বসেছি। বর্তমান সময় আমাদের অনুক‚লে না থাকার কারণে বিমানভাড়া বাড়াতে হয়েছে।’ আগের মতো তিনটি বিমান সংস্থা (বিমান বাংলাদেশ, সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও নাস এয়ার) এবারও হজযাত্রীদের পরিবহন করবে বলেও জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। এবার একটি প্যাকেজ কেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার একটি প্যাকেজই আমাদের থাকবে। এটার বিষয়ে অন্য কোনো ব্যাখ্যা নেই।’
বেসরকারিভাবে মিনায় ডি-ক্যাটাগরি অনুসারে ছয় লাখ ৫৭ হাজার ৯৬০ টাকার মতো পড়বে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মূলত আমরা ব্যয়ের খাত দিয়ে দিয়েছি। হাব (হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) এটা নির্ধারণ করবে। সি-ক্যাটাগরি নিয়েও তারা প্যাকেজ নির্ধারণ করতে পারবে। আমরা তাদের গাইডলাইন দিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন