শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

মাদকে সর্বনাশ

তারেক সালমান | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৭ এএম

মাদক হলো এমন এক ধরনের অবৈধ ও বর্জনীয় বস্তু, যা গ্রহণ বা সেবন করলে ব্যক্তির এক বা একাধিক কার্যকলাপের অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা বিকৃতি ঘটতে পারে। মাদকাসক্তিতে মানুষের কোনো না কোনো ক্ষতি তো হয়ই এবং ধীরে ধীরে তা আসক্ত ব্যক্তিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। মাদক কেবল একক অপরাধ নয়, মাদকাসক্তির সঙ্গে সন্ত্রাস ও অন্যান্য অপরাধ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। মাদকাসক্ত, মাদক প্রস্ততকারক, মাদক প্রস্তুতের উপদেষ্টা, মাদক বহনকারী, যার কাছে মাদক বহন করা হয়, যে মাদক পান করায়, মাদক বিক্রেতা, মাদকের মূল্য গ্রহণকারী সবাই অপরাধী।
বর্তমানে আমাদের যুব সমাজ অসংখ্য সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এসব সংকট ও সমস্যার মধ্য অন্যতম সংকট ও সমস্যা হলো মাদক সেবন ও নেশা করা। ইসলামে সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ হলেও ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে যুব সমাজ মাদকের মরণ নেশায় মেতে উঠেছে। বাংলা ‘নেশা’ শব্দটি মূলত ফার্সি শব্দ ‘নাশাতুন’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হচ্ছে ‘মত্ততা’। বর্তমান সময়ে যুব সমাজের একাংশ মাদক-আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মাদক যুবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াতে তারা কোনো না কোনো উপায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। মাদক বর্তমানে এত ব্যাপক আকার ধারণ করছে, যার ভয়ানক প্রভাব ও বিস্তার লক্ষ করা যায় মানুষ গড়ার আঙ্গিনা-শিক্ষাঙ্গনগুলোতেও। যুব সমাজের জন্য এটি এক ভয়ানক অশনি সংকেত।
মাদকাসক্তি একটি সামাজিক ব্যাধি, জনগণের সামাজিক আন্দোলন, গণসচেতনতা ও সক্রিয় প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর প্রতিকার করা সম্ভব। ঘর থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাড়া-মহল্লা ও এলাকায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ঘৃণা প্রকাশের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকদ্রব্যের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে নিয়মিত সভা-সমিতি, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করা উচিত। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, চোরাচালান, ব্যবহার, বিক্রয় প্রভৃতি বিষয়ে প্রচলিত আইনগুলোর বাস্তব প্রয়োগ ও কঠোর বিধান কার্যকর করা দরকার। সমাজজীবনে ঘৃণ্য মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ও প্রসার রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে যারা মাদকদ্রব্য প্রস্তুত, এর প্রচলন ও সরবরাহের কাজে জড়িত, তাদের দেশ ও জাতির স্বার্থে এহেন অনৈতিক কাজ অবশ্যই বর্জন করা উচিত। মাদকের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে মাদকের অবৈধ উৎপাদন, বিপণন, ব্যবহার ও চোরাচালান রোধসহ সকল স্তরের মানুষের কঠোর অবস্থানে মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব।

লেখক: সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন