পর্যটনের উন্নয়নে কক্সবাজারকে ঘিরে সরকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ পর্যন্ত অপরিকল্পিত উন্নয়নে কক্সবাজারের যেমন সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়েছে। তেমনিভাবে পর্যটন শিল্প বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অপরিকল্পিত স্থাপনা। বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার কক্সবাজারের পর্যটন এলাকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে
কক্সবাজার পরিদর্শনে এসে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এসময় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের পর্যটন খাতে অপরিকল্পিত এবং অব্যবস্থাপনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির
সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি ।
তিনি বলেছেন, এখানে পর্যটনের নামে যে সব অবকাঠামো হচ্ছে তার কোন পরিকল্পনা নেই। তাই পর্যটন শিল্পের বিকাশে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংসদ সচিবালয়ের আয়োজনে জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সুপরিকল্পিতভাবে ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে ।
সভায় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেন, বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ
করেছি। কোথাও সৈকতে হকার দেখা যায় না। অথচ কক্সবাজার সৈকতে হকারের ছড়াছড়ি। এছাড়া সৈকত জেলা প্রশাসনের অধিনে পরিচালিত হতে পারে না। এটা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অধিনে দেয়া জরুরী
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমদ, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান ।
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের
সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলি কদর, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলামসহ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে রক্ষায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বীপটিতে থাকা জেলা প্রশাসনের তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে কমিটির ৩৩তম সভা সম্পন্ন হয়।
এদিকে কক্সবাজারের সৈকতের দীর্ঘ এলাকা এবং সেন্টমার্টিনকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এখানে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও দীর্ঘদিন ধরে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ওই পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন, বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ও হোটেল মোটেল।
বিশেষজ্ঞদের মতে এই কারণে কক্সবাজার সৈকতে সম্প্রতি ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে নজরবিহীন ভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনেও।
তাই কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় পর্যটন বিকাশে স্থাপনা নির্মাণ ও সড়ক নির্মাণ সহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা নির্মানে পরামর্শ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
অভিজ্ঞ জনদের মতে কক্সবাজারের শহরে যে পরিমাণ অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মিত হয়েছে
অদূর ভবিষ্যত কক্সবাজার শহর একটি কনক্রিটের স্তুপে পরিণত হবে। এতে করে মাঝারী ধরনের কোন ভূমিকম্প হলেও এসব স্থাপনা রক্ষার পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন