রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভারতীয় প্রমোদ তরী ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ বরিশালে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৬:০৬ পিএম

বরিশাল ড্রেজার বেইজ ঘাটে বুধবার দুপুরে ভারতীয় প্রমোদ তরী ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ নোঙর করে।


সুইজারল্যান্ড ও জর্মানীর ২৮ পর্যটকবাহী ভারতীয় প্রমোদ তরী ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ বুধবার দুপুরে বরিশাল পৌছলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সহ বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাগন স্থানীয় ড্রেজার বেইজ ঘাটে স্বাগত জানান। নৌযানটি বুধবার বরিশালে রাত্রীযাপন শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরের আগেই ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে বলে জানা গেছে। ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’এর পর্যটকগন বুধবার দুপুর আড়াইটায় বরিশালে পৌছার পরে সড়কপথে বরিশাল থেকে বানরীপাড়ার সন্ধা নদীতে ভাসমান চালের হাট পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে পিরোজপুরের নাজিরপুরের বিভিন্নস্থানে ভাসমান সবজী বীজ উৎপাদন খামার ছাড়াও কয়েকটি ভাসমান বাজার পরির্দশন শেষে রাতেই বরিশালে নৌযনটিতে ফিরে আসার কথা।

গত ১১ জানুয়ারী উত্তর প্রদেশের বারানসী’তে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫১ দিনে ৩ হাজার ২শ কিলোমিটার নৌপথ ভ্রমনে ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’এর প্রমোদ ভ্রমনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। গত শণিবার তা ভারত-বাংলাদেশের নৌ সীমান্তের সুন্দরবনের গহীনে আংটিহারা হয়ে মোংলাতে পৌছে। প্রায় ২শফুট দৈর্ঘ ও ৪০ ফুট প্রস্থ তিনতলা এ নৌযানটির ২৮টি বিলাসবহুল কক্ষে ২৭ স্ইুস ও ১ জার্মান নাগরিক ভ্রমন করছেন।
পর্যটকবাহী নৌযনটি পদ্মা-যমুনা সহ ভারত-বাংলাদেশের ২৭টি নদী পাড়ি দিয়ে ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আসামে ডিব্রুগড়ে ৫১ দিনে নৌ ভ্রমন শেষ করবে। বিশে^র দীর্ঘতম এ নৌ ভ্রমনে খাবার সমেত প্রতি পর্যটকের কাছ থেকে ৫১ দিনে ১২ লাখ ৫৯ হাজার ভারতীয় রূপি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। যা বাংলাদেশী টাকায় ১৫ লাখ টাকারও বেশী।
এদিকে ভারত থেকে বিলাসবহুল প্রমোদতরী ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশে ৬দিনের সফরে এলেও বাংলাদেশের যাত্রীবাহী নৌযানের পরীক্ষামূলক পরিচালন-এর ৪ বছর পরেও বানিজ্যিক কার্যক্রম আর শুরু হয়নি। বিষয়টির ভবিষ্যত নিয়ে রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি‘র দায়িত্বশীল সূত্রও কিছু বলতে পারেননি।
ভারত-বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও আন্তঃদেশীয় নৌ প্রটোকলের আওতায় ২০১৯-এর ২৯ মার্চ রাতে বিআইডব্লিউটিসি‘র যাত্রীবাহী নৌযান ‘এমভি মধুমতি’ ঢাকা থেকে যাত্রা করে ৩০ মার্চ সকালে বরিশাল হয়ে পুরনো চালনা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিনে সুন্দরবনের গহীনে ‘আংটিহারা’তে বাংলাদেশÑভারত নৌ সীমান্তে পৌছে। রাত্রী যাপন করে পরদিন কোলকাতার খিদিরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় মধুমতি। নৌযানটিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় এবং বিআইডব্লিউটিসি ও টিএ‘র একাধীক কর্মকর্তা ছাড়াও প্রায় ৮৫জন টিকেটধারী যাত্রী ভ্রমন করেছিলেন। পরিক্ষামূলক সে নৌযাত্রায় সমস্ত সমস্যা ও সম্ভবনা খতিয়ে দেখে দুটি সংস্থার পক্ষ থেকে মন্ত্রনালয়ে একটি সার-সংক্ষেপও প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী ৪ বছর ধরে পুরো বিষয়টি অনিশ্চয়তার কবলেই আটকে আছে।
ঢাকা-বরিশালÑমোংলা-কোলকাতা রুটে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালন শেষে এমভি মধুমতি এক সপ্তাহ পরে একই পথে ফিরে এলেও পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় আর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।
ফলে প্রায় ৭০ বছর পরে দুই দেশের সরকার প্রধানের সিদ্ধান্তের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আন্তঃদেশীয় নৌপথে এ যাত্রীবাহী সার্ভিসের পরীক্ষামূলক পরিচালন-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হলেও তা মুখ থুবরে পড়ে আছে। সেসময়ে কোলকাতা থেকেও অনুরূপ একটি যাত্রীবাহী নৌযান বাংলাদেশে আসেছিল। এমনকি পরবর্তি সময়ে ভারত থেকে মোংলা-বরিশাল হয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকা সফরে ভারতীয় একাধিক পর্যটকবাহী নৌযান আসলেও বাংলাদেশ থেকে আর কোন নৌযান ভারতে যাবার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক- বানিজ্য আশিকুজ্জামানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে কোন অগ্রগতির নেই বলেই জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন