ফোর লেন সড়ক নির্মাণে কোয়ালিটি (মান) ঠিক হচ্ছে না জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বছর না যেতেই ফোর লেনের অবস্থা ছেঁড়া কাঁথার মতো। গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ক প্যাকেজ-৩ এর চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা যদি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই তবে স্মার্ট রাস্তা দরকার। ফোর লেন দুই বছর পরে সংস্কার করতে হচ্ছে, এই ফোর লেন করে লাভ কী? ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই বছর পরে সংস্কার করতে হচ্ছে। এজন্য আবার আলাদা প্রকল্প নিতে হচ্ছে। নবীনগর-চন্দ্রা ফোর লেন সড়ক এক বছর না যেতেই ছেঁড়া কাঁথার মতো জোড়াতালি অবস্থা? এই ফোর লেন দিয়ে কী হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাজের মতো কাজ করতে হবে। কোয়ালিটির বিষয়ে প্রথমে নজর দিতে হবে। আমাদের রাস্তাগুলো রক্ষা করতে হবে। ২৮টি লোড কন্ট্রোল স্টেশন হওয়ার কথা। কিন্তু এটা কবে হবে কেউ জানে না। আমরা রাস্তাগুলো রক্ষা করতে পারছি না। কিছুদিন পরে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। রাস্তা রক্ষা করতে যা দরকার তা করতে হবে। ২৮টি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-সিলেট ফোর লেন সড়কে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে এডিবি ঋণ দিচ্ছে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এডিবি ও সরকার মিলে কাজটা করছি। ভালো ঠিকাদার এই কাজ পেয়েছে, সময়মতো শেষ করবে বলে আশা করি। তিনি বলেন, সওজের প্রধান প্রকৌশলী এলে তাকে প্রথমে বলি আপনার প্রধান কাজ সড়ক রক্ষা করতে হবে। এক্সেল লোড কন্ট্রোল মেশিন স্থাপন করতে হবে। নবীনগর-চন্দ্রার কী অবস্থা? একেবারে বেহাল অবস্থা। আমি যা দেখছি তাই বলছি। এসব নিয়ে দরকার হয় সেমিনার করেন। আমরা যদি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই তবে স্মার্ট রাস্তা দরকার। নতুন সড়ক দরকার নেই, বিদ্যমান সড়ক স্মার্ট করতে হবে। চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করবো কোয়ালিটি বজায় রেখে। এই মুহূর্তে সড়কের নতুন প্রকল্প দরকার নেই।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুরুত্ব তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক চেষ্টার সবুজ ফসল ঢাকা-সিলেট ছয় লেন। এজন্য এডিবিকে বারবার ঋণ দিতে অনুরোধ করেছিলাম। সিলেট আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কানেক্টিভিটি। কিন্তু আমরা শুরু করতে পারিনি। মাঝে এমন একটি বাধা এসেছিল। এই সড়ক প্রথমে চার লেন করা উচিত ছিল। জানি না কেন এটা দুই লেন হলো। এটা আমাদের প্রথমে ভুল ছিল। সাইফুর রহমান সাহেব (সাবেক অর্থমন্ত্রী) কী হিসেবে এটা করেছিলেন জানি না। সিলেটের মানুষ আজ সব থেকে বেশি খুশি হবে কারণ ছয় লেন কাজ হচ্ছে।
সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ডিএস-৫ এর আওতায় সরাইল ইন্টারসেকশন থেকে বুধন্তী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কাজের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের উব্লিউপি-০৩ প্যাকেজের লট নং ডিএস-০৬ এর নির্মাণকাজ যৌথ উদ্যোগে চীন ও বাংলাদেশের তিনটি কোম্পানি বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি চেসিইটিস ও এসএলজিসি এবং বাংলাদেশের পিডিএল। এতে খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ টাকা।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল রওশন আরা মান্নান এমপি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন