মানুষের মধ্যে খুচরা পয়সা বা কয়েন (ধাতব মুদ্রা) জমানোর রীতি সেই ছোট থেকেই দেখে আসছি। বিশেষ করে, স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের ভিতর এই প্রবণতা বেশি। তাঁদের একটু একটু করে জমানো অর্থ দিয়ে পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী ছোট ছোট শখ বা প্রিয়জনদের আবদার মিটাত। আমার দাদুর কাছে বেশ কয়েকটি বড় বড় কাঁচের বয়্যাম ছিল। যেখানে দাদু প্রতি বয়্যামে আলাদা আলাদাভাবে ৫, ১০, ২৫, ৫০ পয়সার কয়েন জমিয়ে রাখতেন। তখনকার দিনে ১, ২ বা ৫ টাকার কয়েন ছিল না। তাই দাদু এসব ছোট ছোট পরিমাণের পয়সাগুলো জমাতেন। আমাদের কিছু কিনে খাওয়ার ইচ্ছা হলেই দাদুর থেকে চার আনা (২৫ পয়সা) বা আট আনা (৫০ পয়সা) নিয়েই দোকানে গিয়ে খাবার কিনতাম। অল্প কিছুদিনের ভিতরে ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার কয়েন অচল হয়ে গেল এবং যথারীতি ১, ২, ৫ টাকার কয়েনের প্রচলন হলো। পর্যায়ক্রমে কাগজি মুদ্রার চেয়ে এসব ধাতব মুদ্রার ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়ে গেল। অন্যদিকে ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা সবাই ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার ব্যবহার ভুলে গেল। আবার দেখা গেল, পণ্যের প্রচলিত মূল্যের সাথে সর্বনি¤œ বিনিময় মূল্যের সামঞ্জস্য করতে আকার বা পরিমাণের হেরফের করে সমন্বয় করা হলো। অর্থাৎ আগেকার দিনের সেই ৫ পয়সার সুঁই, ১০ পয়সার সেপ্টিপিন, ২৫ পয়সার চকলেট, বিস্কুট এবং ৫০ পয়সার দেশলাই বা আনুষঙ্গিক অন্যান্য পণ্যের মান সেভাবেই উন্নয়ন পূর্বক, পরিমাণে বেশি বা অন্যান্য উপায়ে সমন্বয় করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। যেখানে একজন ভোক্তাকে কখনো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি।
ইদানিং এই কয়েন বা খুচরা পয়সা নিয়ে নিদারুণ সব যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হচ্ছে মানুষকে। নিজের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা দিয়েই শুরু করি। বিগত চার বছর দেশের বাইরে ছিলাম। বাইরে যাওয়ার আগে মাটির ব্যাংকে বেশ কিছু খুচরা পয়সা, যেমন ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন জমা হয়েছিল। কিছুটা ব্যস্ততার কারণে এই জমানো খুচরা পয়সা নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা করিনি। তাছাড়া কখনো ভাবিনি এসব পয়সা অতি শীঘ্রই অচল হতে বসবে। তাই মাটির ব্যাংক দুইটি স্বযতেœ রেখে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, দেশে ফিরে জমানো টাকাগুলো ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু সেটা আর হলো না। ১ ও ২ টাকার কয়েন বর্তমানে আর কেউ নেয় না। মাঝেমধ্যে কিছু জায়গায় ব্যবহারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এগুলোর আশা এখন ছেড়ে দিয়েছি। ৫ টাকার কয়েনের ব্যবহার এখনো বাজারে থাকলেও ১ ও ২ টাকার লেনদেন ঢাকা শহরের ব্যবসায়ীরা বন্ধ করে দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনায় এমনটাই মনে হয়েছে। একদিন বাচ্চা দোকান থেকে ২ টাকা দামের ৩ রকমের তিনটি চকলেট কিনতে চাইলে দোকানী বলে, ৫টার কম বিক্রি হবে না। প্রতিটি চকলেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হিসেবে ২ টাকা লেখা থাকলেও দোকানী ১, ২, ৩ বা ৪টি কোনভাবেই বিক্রি করবে না। কারণ হিসেবে বলল, ৫টির কম চকলেট নিলে তাদের ফিরতি টাকা দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়। আবার ২টা নিলে ৫ টাকা দাম দিতে হবে। দোকানদারের এই ধরনের হিসাব দেখে একটু অবাকই হলাম। ওনার কথা, ১ ও ২ টাকার কয়েন বাজারে চলে না, কেউ নিতে চায় না। আমি দোকানীর কাছে জানতে চাইলাম, ১ ও ২ টাকার কয়েন যে বাজারে চলবে না, এ ধরনের কোনো সরকারি নির্দেশনা আছে কিনা। দোকানী সেসব কথার তোয়াক্কা না করে বলল, ওনার কাছে কয়েক হাজার কয়েন আছে, কেউ নিলে সে সেগুলো দেবে। এরপর আমি দোকানীকে একটা দেশলাইয়ের দাম জিজ্ঞাসা করলাম। সে বলল, ১ টাকা এবং ২ টাকার দেশলাই আছে। তবে আমরা ৫টা বা ১০টার কম বিক্রি করি না। আবার অনেক সময় ৫ টাকায় দুই ধরনের দেশলাই মিলিয়ে দিই। দোকানীর এমন উত্তর শুনে বুঝলাম, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এখন সত্যি সত্যিই বেড়েছে। সেইসাথে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন হয়েছে। তাই হয়ত সবাই এখন আর আগের মত ১টা চকলেট বা ১টা দেশলাই কেনে না।
একদিন ওষুধের ডিসপেনসারিতে গিয়ে ১ পাতা ৫০০ মি.গ্রা. এর প্যারাসিটামল ট্যাবলেট চাইলাম। দাম রাখল ১৫ টাকা। পূর্বে দাম জানা থাকায় ডিসপেনসারির ওই ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলাম, দাম ১২ টাকার জায়গায় ১৫ টাকা রাখার কারণ। সে বলল, ‘১ ও ২ টাকার লেনদেন নাই, সেজন্য ১৫ টাকাই রাখছি’। আবার অন্য এক ডিসপেনসারিতে দেখলাম, দুই বয়্যামে দুই ধরনের ১ ও ২ টাকা দামের চকলেট রেখে দিয়েছে। কোনো ক্রেতাকে ভাংতি ১ ও ২ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন পড়লে তার পরিবর্তে চকলেট দিয়েই প্রয়োজন মিটাচ্ছে। এতে করে ওই ডিসপেনসারিতে ওষুধের পাশাপাশি চকলেট বিক্রি করেও একটা অংশ লাভ হচ্ছে। ভুক্তভোগী মানুষ সবদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চকলেটের এই ব্যবস্থা অনেক জায়গাতে খেয়াল করেছি। বিশেষ করে চা, বিস্কুট, পান, বিড়ি বিক্রির দোকানে বেশি দেখা যায়। তবে এই বিষয়টি মন্দের ভালো বলা যায়। কেননা, এতে একজন ক্রেতা একেবারে কিছু না পাওয়ার চেয়ে চকলেটের মতো সামান্য কিছু হলেও পাচ্ছে।
অন্য একদিন বাসে করে যাচ্ছি। একজন যাত্রী ভাড়াস্বরূপ হেল্পারকে কিছু কয়েন দিলো। হেল্পার নিতে নারাজ। বাসভর্তি যাত্রী যখন হেল্পারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করলো তখন সে অনেকটা বিনয়ের স্বরেই বলল, ‘এখন আর এইগুলো কোথাও চালাইতে পারি না মামা, আপনার ভাড়া না থাকলে দেওয়া লাগব না। কিন্তু কয়েন দিয়েন না’। তখন বাসের যাত্রীদের অনেকেরই এই ১ ও ২ টাকার কয়েন নিয়ে নানা ধরনের কেচ্ছা বলাবলি করতে শুনলাম। কেউ বলছে, ‘এগুলো সবই সিন্ডিকেট, সরকার এগুলো বন্ধ করে নাই, সবাই ইচ্ছামত এগুলো নেওয়া বন্ধ করেছে’। কেউ বলছে, ‘ঢাকা শহরের কোথাও ১ ও ২ টাকার কয়েন কেউ নিতে চায় না’। বিষয়টির সাথে আমি পুরোপুরি একমত। গ্রামের দিকে এখন পর্যন্ত ১, ২ টাকার কয়েনের প্রচলন আছে। যদিও দোকানীরা কয়েন দেখলে অখুশি হয়, তারপরেও একেবারে নিতে অস্বীকৃতি জানায় না। কিন্তু সমস্যা বেঁধেছে ঢাকা শহরে। ঢাকা শহরের সবখানেই অঘোষিত নিয়ম হয়ে গেছে যে, ১ ও ২ টাকার কয়েন চলবে না। মানুষও সেভাবে মেনে নিয়েছে। মেনে না নিয়েও উপায় নেই। পেট চালাতে গেলে নিত্যপণ্য কিনতে হবে। দোকানদারের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্ষেত্রে দোকানদার যদি ১০ টাকার পণ্যের দাম দ্বিগুণও চায় তাহলে যেমন নিরীহ ক্রেতার কিছু বলার থাকে না। ঠিক তেমনই যদি দোকানদার বলে কয়েন নেবে না, তাহলেও কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে মানুষ অনেকটা নিরুপায় হয়ে এবং মন থেকে মেনে নিয়ে বিকল্প উপায়ে প্রয়োজন মিটাতে বাধ্য হচ্ছে।
একদিন এক মুদি দোকানে দেখলাম, ১ টাকা দামের কয়েক প্রকারের চকলেট রাখা আছে। তার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, ১ টাকা বা ২ টাকার কয়েন নিতে তার কোনো রকমের সমস্যা আছে কিনা। সেও একই উত্তর দিলো, এগুলো এখন আর চলে না। তার কাছে ১ টাকার চকলেট আছে কেন জানতে চাইলে বলে, ‘এগুলো ১ ও ২ টাকার বিকল্প হিসেবে রাখছি। মালামাল নেওয়ার পরে যখন কেউ ১ বা ২ টাকা পায় তখন তাকে টাকার বিনিময়ে ১টা বা ২টা চকলেট দিই। তাহলে খদ্দেরও কয়েন নিতে অস্বীকৃতি জানায় না আবার আমার চকলেটও বিক্রি হয়’। দোকানীদের এ ধরনের বুদ্ধি অবশ্য নতুন কিছু না।
অনেকেই ভাবে, এটাতো সামান্য টাকা, সেজন্য প্রতিবাদ না করেই নিরব থাকে। কিন্তু গরিব, মেহনতি ও দিনমজুরের কাছে এটা একেবারেই সামান্য নয়। তাদের কাছে এভাবে ১ টাকা ২ টাকা করেই ১০০ টাকা হয়। যদি ১ ও ২ টাকার কয়েনের বিনিময় মূল্য উঠিয়ে নেওয়া হয় তাহলে সরকারিভাবে তার ঘোষণা দেওয়া যেতে পারে। তার আগে অবশ্যই বাজারে বা মানুষের কাছে যে পরিমাণ উক্ত মুদ্রা প্রচলিত বা গচ্ছিত আছে সেটার বিনিময়ের সুযোগ দেওয়া উচিত। সেইসাথে বাজারে প্রচলিত যেসব পণ্যের মূল্য ১ বা ২ টাকা সেসব পণ্যের গুণগত ও পরিমাণগত মান উন্নয়ন করে সেগুলো প্রচিলত মূল্যের মধ্যে রাখা যুক্তিযুক্ত। কেননা, কোনরকম সরকারি ঘোষণা ছাড়াই ব্যবসায়ীমহলের ১ ও ২ টাকার কয়েন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত মানুষের ভোগান্তি বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি যেখানে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম সেখানে এ ধরনের অসঙ্গতি আদৌ শুভকর নয়।
বিগত দিনের পত্রিকার বরাত দিয়ে জানতে পারলাম, ২০১৫ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, বাজারে প্রচলিত ১ টাকা এবং ২ টাকার নোট ও কয়েন বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে। খুব শিগগিরই সর্বনি¤œ মুদ্রা হিসেবে ৫ টাকার কয়েন বা নোট চালু করা হবে। অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের এমন কথার প্রেক্ষিতে বাজারে কয়েনের প্রতি সবার অনাগ্রহ থাকলেও সরকারিভাবে ১ ও ২ টাকার কয়েন বা নোটের স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার মতো কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে কেন সবার কয়েন নিতে এতটা বিরক্তি সেটা বোধগম্য নয়। কয়েন নেওয়ার অস্বীকৃতিস্বরূপ ব্যবসায়ীমহলের অনেকেই ব্যাংকগুলোকে দায়ী করে। তাদের ভাষ্যমতে, ব্যাংকগুলো নাকি সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কয়েন নিতে চায় না। আবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলে, কয়েনের বদলে নাকি কাগজের নোট ব্যবহারেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি। যদিও লেনদেনে ১ ও ২ টাকার কয়েনের গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয়। তারপরেও বেশিরভাগ ক্রেতা নাকি কয়েন নিতে অস্বিকৃতি জানায়। অনেক ক্রেতাই বলে, পকেটে বা টাকা রাখার ব্যাগে কয়েন রাখতে নাকি অনেক সমস্যা হয়। কারো কারো ব্যক্তিগতভাবে কয়েন নিতে সমস্যা থাকতেই পারে। তাই বলে সরকারি কোনরকম প্রচার ছাড়াই ব্যবসায়ীমহল বা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এমন ধরনের হটকারি সিদ্ধান্ত মানুষের জন্য আদৌ কল্যাণকর নয়।
চার টাকা মূল্যের কোনো পণ্য কিনে পাঁচ টাকার কয়েন বা নোট দিলে দোকানীরা ভাংতি নেই বলে এক টাকা ফেরত দেয় না। আবার কেউ কেউ এক টাকার বদলে ধরিয়ে দেয় একটি চকলেট। কয়েন নিতে সবার যদি এতই অনাগ্রহ থাকে তাহলে অনলাইনে কেনাকাটার পরিধি আবশ্যিকভাবে বাড়ানো উচিত। সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে বৃহৎ পর্যায়ের প্রতিটি দোকানে অনলাইনে পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকা উচিত। যেখানে একজন ক্রেতা মোবাইলের অ্যাপ ব্যবহার করে কিউআর কোড স্ক্যান করে তার ক্রয়কৃত পণ্যের সমপরিমাণ মূল্য বিক্রেতাকে মুহূর্তের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবে। অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের ব্যাপক সুবিধা রয়েছে। যেমন ভাংতি বা পুরানো টাকা নিয়ে কারও ভিতরে কোনো আপত্তি থাকে না। সবসময় টাকা পকেটে নিয়ে ঘোরা লাগে না এজন্য টাকা চুরি বা ছিনতাই এর কোনো সুযোগ নেই। মুহূর্তের মধ্যে যে কাউকে যেকোন পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা যায়। যদিও আমাদের দেশে কিছু কিছু অ্যাপস চালু হয়েছে কিন্তু এগুলোর তেমন কোনো সুফল মানুষ পায়নি। কিছু মানুষ এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করলেও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ এগুলোর সুবিধা পায় না। কেননা, এগুলো ব্যবহার করতে হলে অনুকূল পরিবেশ যেমন নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ লাগে। যেটি এখন পর্যন্ত প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছায়নি।
আইন অনুযায়ী বিনিময়ের সময় কাগজি নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সব মূল্যমানের কয়েন নিতে সবাই বাধ্য। কিন্তু বাস্তবে লেনদেনের সময় ১ ও ২ টাকার কয়েন নিতে ব্যবসায়ী মহলে অনীহা। ফলে এসব খুচরা পয়সা নিয়ে ভোক্তা পর্যায়ের পাশাপাশি ব্যবসায়ীমহলসহ সকল পর্যায়ের মানুষই বিপাকে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের কাছে হাজার হাজার টাকার কয়েন পড়ে আছে। সেগুলো কোনভাবেই বাজারে ছাড়তে পারছে না। অন্যদিকে রিকশা বা বাস ভাড়া, মুদি দোকানের কেনাকাটায় কয়েন নিতে অনীহা। এমনকি ভিক্ষুকরাও ১-২ টাকার কয়েন নিতে নারাজ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘যেকোনো মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা বা নোট না নেওয়ার সুযোগ কোনো ব্যাংকের নেই। জনসাধারণও এ ধরনের মুদ্রা নিতে বাধ্য। তার পরও কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে কয়েন না নেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ডেকে সতর্ক করা হচ্ছে।’ যদিও এই নির্দেশের সুফল মানুষ এখনো পায়নি।
দেশে মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক আগেই হারিয়েছে ১, ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার কয়েন। যদি ১ ও ২ টাকার কয়েনের ব্যবহার ও বন্ধ করা হয় তাহলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু যথোপযুক্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তারপর এসকল মুদ্রার বিনিময় মূল্য উঠিয়ে নেওয়া সমীচীন বলে মনে হয়। তাহলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না পক্ষান্তরে ব্যবসায়ীমহলও দ্বিমত পোষণ করবে না।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
ajoymondal325@yahoo.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন