কক্সবাজারে শুকিয়ে গেছে, খাল-নদী-পুকুর। শুকিয়ে গেছে, প্রধান প্রধান নদী বাঁকখালী, মাতামুহুরীসহ শাখা নদী গুলোও। এর উপর অনাবৃষ্টি ভাবিয়ে তুলেছে কক্সবাজারের কৃষকদের। এতে করে সমস্যা হচ্ছে বুরো চাষ ও শব্জী চাষে। আর এতে অনেকে আশঙ্কা করছেন খাদ্য ঘাটতির।
বাঁকখালী, নাফনদী, ঈদগাঁও, ফুলেশ্বরী ও মাতামুহুরীসহ নদীগুলোর উৎপত্তিস্থলের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানা না থাকলেও ভারত ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই নদীগুলোর স্রোত। খরস্রোতা বাঁকখালী নদীর কিছু অংশ ঘিরে রয়েছে
জেলার কক্সবাজার সদর, রামু ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি।
একদিকে অনাবৃষ্টি, অপরদিকে ভূমি দস্যুতার কবলে পড়ে যেন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে জেলার খাল,নদী,পুকুর। খাল নদীগুলো অনেকটাই এখন হারাতে বসেছে অস্তিত্ব ও নাব্যতা। নিধন হচ্ছে নদীর পাশের প্যারাবন। বিভিন্ন স্থানে দখল হয়ে যাচ্ছে উকূলীয় বনভূমি। অবাধে কর্তন হচ্ছে সৃজিত প্যারাবনের গাছ। এ কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপরও।
এই সুযোগে বাঁকখালী ও মাতামুহুরীর উজানে গড়ে তুলা হয়েছে তামাক, শব্জী ও ধান চাষ। অপরদিকে সুযোগ বুঝে ভূমিদস্যুরা ভাটিতে গড়ে তুলেছে ঘর-বাড়ি ও দালান কোঠা।
প্রভাবশালীদের কালো থাবায় যেন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে বাঁকখালী নদী। প্রশাসনের লোকজন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা।
কক্সবাজার শহরের লাগোয়া কস্তুরাঘাট পয়েন্টে বিস্তীর্ণ প্যারাবন কেটে সরকার দলের প্রভাবশালীরা একটি নতুন শহর গড়ে তুলেছে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ দেড় ডজন প্রভাবশালীদের নাম উল্লেখ করে একাধিক মামলা হলেও কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। দখলদারদের উচ্ছেদ তো দূরের কথা এই মামলা যেন তাদেরকে নিরাত্তা দিচ্ছে।
এদিকে চলতি শুষ্ক মৌসুমে পুকুর, নদী-খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায়
কক্সবাজার জেলায় খাদ্যে উদ্বৃত্তের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। জেলার ফসলি জমিতে পানি সরবরাহের অন্যতম খাল-নদী শুকিয়ে গেছে। প্রধান নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ নেই বললেই চলে। প্রধান নদী বাঁকখালী ও মাতামুহুরীর দুই পাড়ে বুরো আর রবিশষ্যের যে উৎপাদন হত তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ভোক্তভোগী কৃষকদের মতে প্রায় ৫০০ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষক। তবে কৃষি কর্মকর্তা ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় পানির সংকট দেখাদিয়েছে।
অনেক কৃষকের মতে, 'নদীতে এক ফোটা পানি নেই স্কিম কর্তৃপক্ষ কয়েকটি গভীর নলকূপ বসিয়েও পানি সরবরাহ করতে পারছে না। সব মিলে চলছে পানির তীব্র সংকট।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া দ্বীপের কক্সবাজার খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা হিসেবে স্বীকৃত। প্রতি বছর গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টন ফসল উদ্বৃত্ত থাকে। নতুন নতুন ফসল উৎপাদন, এক ফসলি জমিকে চার ফসলিতে উন্নীত, লবণাক্ততা জয়সহ নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে জেলার কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। এই অর্জন এবার পানির সংকটে হুমকিতে পড়েছে। #
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন