ডলারের অভাবে এলসি সংকটে দেশের চিকিৎসা-ব্যবসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। তিনি বলেছেন, ডলার সংকটের কারণে এলসি বন্ধ হওয়ায় জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানী বন্ধ হয়ে পড়েছে। এলসির অভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। গতকাল রোববার এক ভিডিও বার্তায় তিনি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে জিএম কাদের বলেন, দেশের ৯৬ ভাগ চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানী নির্ভর। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম আমদানীর জন্য ব্যাংকগুলোতে এলসি করা যাচ্ছে না। চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় মালামাল দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়ছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানীতে এলসি বন্ধ থাকলে, হার্টের রিং, সেলাইয়ের সুতা, এক্সরে প্লেট, ইসিজি রোল, আল্ট্রাসনো পেপার, ডায়াবেটিক মাপার ট্রিপস, বøাড ও ইউরিন ব্যাগ, ডায়ালাইজার এবং হ্যান্ড গøাভসসহ আমদানী নির্ভর সকল পণ্যের সংকট দেখা দেবে। এতে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা।
জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানীতে বিশেষ ব্যবস্থায় এলসি খোলার ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, জীবন রক্ষাকারী এসব চিকিৎসা সামগ্রী আমদানির পরিমাণ খুবই সামান্য।
দায়িত্ব পালনে আপাতত বাধা নেই
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে গতকাল রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট ‘নট টু ডে’ মর্মে আদেশ দেন। এর ফলে হাইকোর্টের আদেশই বহাল রইলো বলে জানিয়েছেন জিএম কাদেরের আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশ চেম্বার কোর্ট স্থগিত না করায় জিএম কাদেরের এ পদে থেকে দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা নেই। আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহীমের চেম্বারকোর্ট আদালত এ সংক্রান্ত শুনানি শেষে ‘নট টুডে’ মর্মে আদেশ দেন। গতকাল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
এর আগে গত ৯ ফেব্রæয়ারি জাপা চেয়ারম্যানের পদে থেকে জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন-মর্মে হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন দলটির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাপা চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মর্মে গত ৫ মে নিম্ন আদালতের রায় ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ওইদিনই তার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে জিএম কাদেরের কোনো আইনগত বাধা নেই। নিম্ন আদারতের রায়ের বিরুদ্ধে জিএম কাদেরের রিভিশন আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওইদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
দলের চেয়ারম্যানের পদে থেকে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে জিএম কাদেরের আপিল গত ১৯ জানুয়ারি নামঞ্জুর করেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন জিএম কাদের। পরে ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মামলার বাদী ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধাকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত বছর ৪ অক্টোবর জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন জিয়াউল হক মৃধা। জিএম কাদের যেন জাপার বিষয়ে কোনো ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন সে বিষয়ে গত বছর ৩০ অক্টোবর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। পরে এ আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে জিএম কাদেরের করা আবেদন ওই বছরের ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন