গত এক শ’ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ৪৫১ বর্গ কিলোমিটার। দখল এবং দূষণের ভারে আক্রান্ত সুন্দরবন। সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে ১৭ প্রজাতির মাছের দেহে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এসব মাছ খেলে মানুষের লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বনবিভাগের অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজসে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের অভয়াশ্রমে বিষ দিয়ে এবং অবৈধ ভাবে মাছ মারা হচ্ছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় মানুষের মুনাফালোভী বনবিনাশী কর্মকান্ড রুখতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে মোংলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত র্যালীপূর্ব সমাবেশ বক্তারা একথা বলেন। ”বাঁচাই সুন্দরবন বাঁচাই পরিবেশ, টেকসই হোক আমাদের বাংলাদেশ” শ্লোগানে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর মোংলার আহ্বায়ক মোঃ নূর আলম শেখ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার দীপংকর দাশ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ সুনীল কুমার বিশ্বাস, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জেমস্ শরৎ কর্মকার, সুন্দরবন একাডেমীর সুনীতি রায়, বাদাবন সংঘের অজিফা খাতুন, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম লিডার আলমগীর শিকদার, জেলে সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল, বাপা নেতা নাজমুল হক, আব্দুর রশিদ হাওালাদার, কমলা সরকার, শেখ রাসেল, হাছিব সরদার, ইয়ুথ পিস্ এম্বাসেডর শিকদার ইয়াসিন আরাফাত, ব্রেভ ইয়ুথ গ্রুপ লিডার মোঃ শাহ আলম প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয় ভাবে সুন্দরবন দিবস ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। বক্তারা বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সবাইকে সুন্দরবনকে ভালোবাসার অঙ্গীকার গ্রহণের আহ্বান জানান। সমাবেশের পরে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী মোংলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালী শেষে মোংলা পৌর শহীদ মিনারে সুন্দরবন বিষয়ক শিশু চিত্রাংকন-উপস্থিত বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, লাঠিখেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সুন্দরবন দিবসের কর্মসুচিতে সুন্দরবন জাদুঘর, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, ইয়ুথ পিস্ এম্বাসেডর, ব্রেভ ইয়ুথ গ্রুপ, চাঁদপাই ইউনিয়ন জেলে সমিতি, সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়, মোংলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), ছহির উদ্দিন লাঠিখেলা দলসহ বিভিন্ন বনজীবি সংগঠনের কয়েকশো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে তৎকালীন রাস্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ’র উপস্থিতিতে সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন