শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

মাস্ক পড়ে তেমন লাভই হয়নি কোভিড সংক্রমণের সময়, চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষণায়

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২:৪৬ পিএম

আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগে বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনে ঘটে গিয়েছিল এক বিপুল পরিবর্তন। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মানুষের দৈনন্দিন জীবনচর্যাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছিল। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছিল ফেস মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তখন রাস্তায় বেরোলে মুখে মাস্ক, সঙ্গে স্যানিটাইজার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক ছিল। এখন পরিস্থিতি তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা চমকে দিয়েছে সবাইকে। মাস্ক কোভিড সংক্রমণের হাত থেকে মানুষকে সেভাবে রক্ষা করতে পারেনি, এই তথ্যই উঠে এসেছে এই গবেষণায়।

কোভিড-পর্বের শুরুর দিকে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন দাবি করেছিল যে, ফেস মাস্ক পরার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। যদিও ২০২০ সালের এপ্রিলে ফেস মাস্ক বাধ্যতামূলক হয়ে যায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপে। সেই বছর সেপ্টেম্বরে সিডিসি-র ডিরেক্টর ডাঃ রবার্ট রেডফিল্ড জানান, করোনা প্রতিরোধে ফেস মাস্ক সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। অর্থাৎ, নিজেকে কোভিড-১৯-এর হাত থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সেই সময় সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার ছিল ফেস মাস্ক। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণার দাবি এই তথ্যকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে।

কোকরান লাইব্রেরির দ্বারা প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ফেস মাস্ক ব্যবহার করেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়ানো যায়নি। অর্থাৎ, ফেস মাস্ক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ। ১২ জন গবেষক কোভিড পরিস্থিতিতে মাস্ক ও হাত ধোয়া কতটা কার্যকর ছিল, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন। ৭৮টি ট্রায়ালে গবেষণা করা হয়েছে। ওই গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে, মুখে মাস্ক পরে খুব একটা উপকার হয়নি। যারা মাস্ক পরেননি এবং যারা মাস্ক পরেছিলেন, তাদের স্বাস্থ্যে খুব একটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়নি।

শুধু ফেস মাস্ক পরা নয়, মেডিক্যাল বা সার্জিক্যাল মাস্ক, N95 মাস্ক পরা নিয়েই নানা মতভেদ উঠেছিল সেই সময়। কিন্তু ওই গবেষণায় এরও উল্লেখ রয়েছে যে, সার্জিক্যাল মাস্ক, N95 মাস্কের মধ্যে বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। ৮৪০৭ মানুষের মধ্যে পাঁচটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, N95/P2 মাস্ক পরা সত্ত্বেও জ্বর-সর্দি এবং এই সংক্রান্ত সমস্যায় কোনও বিশেষ তফাৎ নেই। একইসঙ্গে ৭৭৯৯জন মানুষের মধ্যে করা ৩টি গবেষণায় শ্বাসজনিত সমস্যাতেও মাস্ক পরে বিশেষ কোনও উপকার হয়নি বলে দেখা গিয়েছে।

গবেষকরা ২০০৯ সালের H1N1 ফ্লু, ঋতুকালীন সর্দি-কাশি এবং ২০১৬ সাল পর্যন্ত হওয়া ফ্লু এবং কোভিড-১৯-এর তথ্যের উপর নির্ভর করে এই গবেষণা করেছেন। যদিও এই গবেষণার মধ্যে করা কিছু সমীক্ষা কোভিড-১৯ পরিস্থিতির আগে করা হয়েছিল। সেই সময় মানুষের মধ্যে এত বেশি মাস্ক পরার প্রচলন ছিল না। তাছাড়া তখন এত বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিও ছিল না। যদিও কোভিডের সময়ও সকলে যে সঠিকভাবে যে মাস্ক পরেছেন, তা নিয়েও সন্দেহ ছিল। তবে, আরও অন্যান্য গবেষণা এটাই প্রমাণ করেছে যে, মাস্কের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কোভিড সংক্রমণের হারকে কমাতে পেরেছে। যদিও এক্ষেত্রে মানুষ বাড়ির ভিতরেই বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছে। সূত্র: টিভি৯।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন