শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

প্রযুক্তির সেরা চ্যাট জিপিটি

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

এ যুগে প্রযুক্তিই উন্নতির প্রধান সোপান। প্রযুক্তির উৎকর্ষ্য ও ব্যবহার বেড়েই চলেছে, যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বলে খ্যাত হচ্ছে। এই বিপ্লবকে যে যত বেশি কাজে লাগাতে পারছে, সে তত বেশি উন্নতি করছে। প্রযুক্তির আবিষ্কার ও ব্যবহার নিয়ে প্রচ- প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বিশ্বে। প্রযুক্তির মধ্যে সুফল বেশি হচ্ছে রোবট ও এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। এখন রোবট দিয়ে রান্না ও খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। ক্রোয়েশিয়ার জাগ্রেবের ‘বটস অ্যান্ড পটস’ রেস্তরাঁর কাটা-বাটা, খুন্তি নাড়া থেকে পাতে পরিবেশনের আগ পর্যন্ত পুরোটাই তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম মেধাযুক্ত গামাশেফ নামে রোবট চালিত কুকারে। সেখানে বসে অর্ডার করলে ১৫ মিনিটের মধ্যেই তা চলে আসে টেবিলে। স্বাদ এবং সুগন্ধও চমৎকার। মানুষের রান্নার মতোই। ৭০ রকমের ‘ওয়ান পট মিল’ তৈরি হয় সে কুকারে। কতটা তেল লাগবে, লবণ-মিষ্টি কতটা দিতে হবে, কতক্ষণে খাবার সেদ্ধ বা ভাঁজা হবে, পুরো বিষয়টাই সেখানে নিয়ন্ত্রণ হয়। তবে তার জন্যে কাজ শুরুর আগে মানুষ-রাঁধুনির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে গামাশেফকে। চীনসহ বিভিন্ন দেশে রোবট চালিত হোটেলের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এমন একটি রোবট তৈরি করেছে, যা চেহারা বা প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা লিখে দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি আঁকতে পারে। এ রোবটটির নামকরণ করা হয়েছে ‘দ্য ফ্রিডা’। নির্মাতাদের দাবি, চ্যাট জিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি থাকায় সহজেই যেকোনো দৃশ্যের ছবি আঁকতে পারে রোবটটি। সর্বোপরি রোবট দিয়ে নানা জটিল রোগের অপারেশন হচ্ছে। রোবট নার্স রোগীর যাবতীয় সেবা করছে। এছাড়া, রোবট অন্য সব ধরনের কাজও করছে। তবে, রোবট পরিচালনা করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দরকার হয়। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজস্বভাবেই চলে। তাই রোবটের চেয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপকারিতা বেশি। অর্থাৎ প্রযুক্তির মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই সেরা। তাই এর নিত্য নতুন আবিষ্কার ও ব্যবহার বাড়ছে কল্পনাতীতভাবে। সম্প্রতি জার্মানির একটি কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘর গরম রাখার পুরো ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় করেছে। তাতে জ্বালানিসাশ্রয় হচ্ছে। শীতপ্রধান দেশগুলোতে ঘর গরম রাখা অনিবার্য। এতে অনেক জ্বালানি খরচ হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক উৎকর্ষ্যে মানুষের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে আসছে তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বিকল্প হয়ে উঠছে বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে প-িত ব্যক্তিদের অধিকাংশের অভিমত হচ্ছে: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ও উৎকর্ষ্য যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, তবুও মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাবে। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করছে মানুষ কিংবা মানুষ সৃষ্ট যন্ত্র। উপরন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কার্যক্রমকে ধ্বংস করার মতো যন্ত্রও আবিষ্কার করতে পারে মানুষ। যেমন: ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এন্ট্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কার্যক্রমকে ধ্বংস করার জন্যও যন্ত্র আবিষ্কার করতে পারে মানুষ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আউটপুট যতই সর্বাধিক হোক না কেন, সে মানুষ তৈরি করছে না। সেটা করাও সম্ভব নয়। তবে, এটা ঠিক যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার যত বাড়ছে মানুষের প্রয়োজনীয়তা তত হ্রাস পাচ্ছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বাধুনিক অ্যাপ হচ্ছে চ্যাট জিপিটি। এতে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় সব তথ্য দেওয়া আছে। তথা ইন্টারনেটের ওয়েব পেজ, ওয়েব টেক্সট, বই, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে বিপুল ডাটা ইত্যাদি সম্বলিত ৩০০ বিলিয়ন শব্দের অবিশ্বাস্য বিশাল ভা-ার রয়েছে। ফলে ঐ সময়ের মধ্যে শিক্ষাসহ সব প্রশ্নের জবাব চ্যাট জিপিটি দিয়ে দিচ্ছে নিমিষেই। এমনকি এটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, গান বা কবিতাও লিখতে পারে। এটি বিনামূল্যের অ্যাপ। গত ৩০ নভেম্বর যাত্রার শুরুর পর থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এর গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ফলে এটি বিশ্বে সর্বাধিক আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব মিডিয়াতেও এ ব্যাপারে ব্যাপক খবর প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপগুলো চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি প্রযুক্তির জায়ান্ট গুগলও ঝুঁকিতে আছে। চ্যাট জিপিটি অ্যাপ সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা হচ্ছে: চ্যাট জিপিটির পুরো নাম চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার। এটি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন একটি অ্যাপলিকেশন যাকে বলা হয় ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল টুলস’। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি চ্যাটবট সিস্টেম বা আলাপচারিতা করার অ্যাপলিকেশন। এর আবিষ্কারক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকোর ওপেন-এআই। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা একটি গবেষণা সংস্থা। ২০১৫ সালে প্রযুক্তির হিরো ইলন মাস্ক, স্যাম অল্টম্যান এবং আরো কয়েকজন এর প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ২০১৮ সালে ইলন মাস্ক এই কোম্পানি ছেড়ে চলে যান। তার পর এর নেতৃত্ব দেন স্যাম অল্টম্যান। ওপেন-এআই কোম্পানিটি প্রথমে জিপিটি-৩ নামের একটি অ্যাপলিকেশন তৈরি করে। সেটি এমন বার্তা লিখতে পারতো, যা দেখে মনে হয় কোনো মানুষ লিখেছে। এরপর ডেল-ই নামের একটি অ্যাপ তৈরি করে। সেখানে কারও লেখা বার্তা দিয়ে চিত্র তৈরি করতে পারতো। অতঃপর জিপিটি-৩ এবং পরবর্তীতে তৈরি করা জিপিটি-৩.৫ মিলেই চ্যাট জিপিটি তৈরি করেছে সংস্থাটি। এ কোম্পানিতে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট ২০১৯ সালে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। উপরন্তু সংস্থাটি আরো কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে সম্প্রতি। সর্বোপরি সংস্থাটির সার্চ ইঞ্জিন ‘বিং’-কে ওপেন এআই এর সাথে যুক্ত করেছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ফলে মাইক্রোসফটের শেয়ারের মূল্য ৩% বেড়েছে। এক সময়ের বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সম্প্রতি বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পড়তে এবং লিখতে পারত, কিন্তু কোনো বিষয়বস্তু বুঝতে পারত না। তবে চ্যাট জিপিটির মতো নতুন প্রোগ্রামগুলি চালান বা চিঠি লিখতে সাহায্য করে অনেক অফিসের কাজকে আরো দক্ষ করে তুলবে। এটি আমাদের বিশ্বকে বদলে দেবে। ইতোমধ্যেই চ্যাট জিপিটি যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল লাইসেন্সিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। উপরন্তু গুগলের তৃতীয় ধাপের (এল ৩) সফটওয়্যার প্রকৌশলের চাকরির জটিল পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছে। এবারের বিশ্ব ভালবাসা দিবসে প্রেম পত্রও লিখেছে। অপরদিকে, চ্যাট জিপিটির ব্যাপক সাফল্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক অন্য এক প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যালফাবেটের গুগল তার অস্তিত্বকে ধরে রাখার জন্য নতুন চ্যাটবট ‘বার্ড’ আবিষ্কার করে কার্যক্রম শুরু করেছে গত ৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বার্ড গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিযোগিতায় নেমেই ব্যার্থ হয়েছে। একটি প্রচারণামূলক ভিডিওতে একটি সহজ প্রশ্নের ভুল উত্তর দিয়েছে। ফলে অ্যালফাবেট’র শেয়ার ৯% হ্রাস পেয়েছে। তাতে সংস্থাটির ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। এর পর হয়তবা সংস্থাটি তার ভুল সংশোধন করে পুনরায় যাত্রা শুরু করবে। তাই ওপেন এআই তার শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণœ রাখার জন্য চ্যাট জিপিটির চেয়ে অধিক ফলদায়ক চ্যাট জিপিটি প্লাস আবিষ্কার করার ঘোষণা দিয়েছে, যা ব্যবহার করতে মাসে ২০ মার্কিন ডলার লাগবে। উপরন্তু এটি প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারীরা ব্যবহার করতে পারবে। তবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশ থেকেও এটি ব্যবহার করা যাবে। প্রাথমিকভাবে কম্পিউটারে এ সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে, ভবিষ্যতে মুঠোফোন থেকেও এটি ব্যবহার করা যাবে। চ্যাট জিপিটি প্লাসের সুবিধা হচ্ছে: একই সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যবহারকারী (ট্রাফিক) থাকলেও এতে প্রবেশ ও বিভিন্ন সুবিধা দ্রুত ব্যবহার করা যাবে। দ্রুত প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পাশাপাশি চ্যাট জিপিটির সাহায্যে বিভিন্ন কাজ স্বচ্ছন্দে করিয়ে নেওয়া যাবে। উপরন্তু চ্যাট জিপিটিতে নতুন কোনো সুবিধা যুক্ত হলে বা হালনাগাদ সংস্করণ এলে সবার আগে ব্যবহারের সুযোগ পাবে চ্যাট জিপিটি প্লাস ব্যবহারকারীরা। এর পর হয়তো আরো কিছু প্রযুক্তি জায়ান্ট আরো অত্যাধুনিক অ্যাপ আবিষ্কার করবে। ইতোমধ্যেই এক ব্লগ বার্তায় গুগল জানিয়েছে, ধারণ করা ভিডিওতে ক্যাপশন-সুবিধা পাওয়া যাবে। নতুন এ সুযোগ চালুর জন্য নিজেদের ট্রান্সলেটেড ক্যাপশন-সুবিধা হালনাগাদ করা হয়েছে। আগামী ১৫ মার্চ থেকে গুগল ওয়ার্কস্পেস ব্যবহারকারীরা এ সুযোগ পাবেন। অন্য এক খবরে প্রকাশ, গোপনে চ্যাট জিপিটির মতো চ্যাটবট তৈরি করছে চীনের বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। গত কয়েক দিনে ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা, সার্চ ইঞ্জিন বাইদুসহ অন্তত পাঁচটি চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান চ্যাট জিপিটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মতো চ্যাট বট তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে আলিবাবার মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি অভ্যন্তরীণভাবে এআই চ্যাট বটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাইদু বলেছে, আগামী মার্চেই ‘এরনি বট’ নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাট বট আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।

প্রতিটি জিনিসের যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি খারাপ দিকও আছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাট জিপিটিরও কিছু খারাপ দিক আছে। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস ইনসাইডার পত্রিকার এক গবেষণা রিপোর্ট মতে, চ্যাট জিপিটির কারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে প্রযুক্তি নির্ভর চাকরি, গণমাধ্যম, আইন পেশা, মার্কেট রিসার্চ এনালিস্ট, শিক্ষকতা, আর্থিক খাতের চাকরি, পুঁজি বাজারের কাজ, গ্রাফিক ডিজাইন, হিসাবরক্ষণ, গ্রাহক সেবা ইত্যাদি। ফলে চ্যাট জিপিটির কম মানুষের দেশে ব্যাপক কল্যাণকর হলেও অধিক জনসংখ্যার ও বেকারের দেশে বেকারত্ব আরো বাড়বে। অন্যদিকে, অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, চ্যাট জিপিটি অ্যাপ ব্যবহার করলে শিশুদের যুক্তিবোধ কমে যাবে। তারা নিজ থেকে কিছু ভাবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। শিশুমনের তথা মানব জাতির ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে। তাই বিশ্বের বহু শিক্ষাবিদ শিক্ষার্থীদের জন্য চ্যাট জিপিটি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করছেন। সে প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই ফ্রান্সের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাট জিপিটি নিষিদ্ধ করেছে। আমেরিকায়ও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একই রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। তবুও চ্যাট জিপিটি এবং এ ধরনের অন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতি ও ব্যবহার বেড়েই চলবে। পৃথিবীতে এবং গ্রহ নক্ষত্রেও। যেমন: নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাকাশযান থেকে মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থানের দুর্লভ ও মহামূল্যবান ছবি ধারণ করে তা ধরিত্রীতে পাঠিয়ে দিচ্ছে, যা মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে, যা দেখে-শুনে বিশ্ববাসী বিমোহিত হচ্ছে। উপরন্তু বিজ্ঞানীরা এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রহ-নক্ষত্রে যাতায়াতের ও বসবাসের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।

যা’হোক, চূড়ান্ত বিশ্লেষণে প্রযুক্তির কল্পনাতীত উন্নতিতে কুফলের চেয়ে সুফল বেশি। ফলে প্রযুক্তির অগ্রগতি অব্যাহতই থাকবে। প্রযুক্তির এই ব্যাপক উৎকর্ষ্যে আমাদেরও শামিল হতে হবে। নতুবা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না। তাতে কাক্সিক্ষত উন্নতি হবে না। প্রযুক্তির উন্নতিতে শামিল হতে হলে মানুষকে প্রযুক্তিমনস্ক করতে হবে। শুধু শ্লোগান সর্বস্ব হলেই চলবে না। বাস্তবিকভাবে সব ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রাধিকার ও উদ্ভাবককে মূল্যায়ন এবং নতুন আবিষ্কারে গুরুত্ব দিতে হবে। সে জন্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানুষ তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে তরুণদের। সে জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে প্রযুক্তির দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সাথে বিজ্ঞান শিক্ষাকেও। কারণ, প্রযুক্তি বিজ্ঞানেরই অংশ।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন