বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

লক্ষ লক্ষ জাকেরান ও আশেকান সহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর উপস্থিতিতে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে উরশ শরিফ শুরু

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:৪৬ পিএম

জুমার নামাজন্তে পীর ছাহেবের রওজা শরিফ জিয়ারত ও দুপুরের খানা খাবার পরে সন্ধায় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নত শেষে দু রাকাত করে ৩ বারে ৬ রাকাত নফল নামাজ আদায় এবং ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে দোয়া মেনাজাতের মধ্যমে ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ৪ দিনব্যাপী বিশ্ব উরশ শরিফের সূচনা হল। এ উরশ শরিফে যোগদানে দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ জাকেরান ও আশেকান সহ মুসুল্লীয়ানবৃন্দ বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌছেছেন। আগামী মঙ্গলবার সকালে এ দরবার শরিফে আখেরী মোনাজাত অণুষ্ঠিত হবে।
এবারো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জাকেরান ও আশেকান এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীগনও বিশ^ জাকের মঞ্জিলের উরশ শরিফে সমবেত হয়েছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলা থেকেই অন্তত ৫শ জাকেরান ও আশেকান বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌছেছেন। ভারতের চেঙরাবন্দা ও বাংলাদেশের বুড়িমারি সীমান্ত দিয়ে এসব জাকেরবৃন্দ গত বুধবার রাতে বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌছেন।
পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব-এর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত প্রায় ২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা যুড়ে এ উরশ শরিফের প্রস্তুতি ইতোপূর্বেই সম্পন্ন হয়েছে। লক্ষ লক্ষ জাকেরান ও আশেকান সহ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীদের আল্লাহ আল্লাহ জিকির এবং নামাজ সহ বিভিন্ন ধরনের এবাদত বন্দেগীতে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহত এলাকাসমুহে এখন সম্পুর্ণ ভিন্ন পরিবেশ।
শুক্রবার সন্ধায় উরশ শরিফের প্রথম দিনেই কয়েক লাখ মুসুল্লী জুমা নামাজ আদায়ন্তে দু রাকাত নফল নামাজ ও মিলাদ শরিফ পাঠের পরে পীর ছাহেবের মাজার শরিফে ফাতেহা শরিফ পাঠ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন। বাদ আসর নামাজন্তে তওবা কবুলিয়াতের ফয়েজ আদায়ের পরে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শুরু হয়। মাগরিব নামাজ বাদে ছয় রাকাত নফল নামাজ এবং ফাতেহা শরিফ পাঠের পরে দোয়াঅন্তে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ ও জিকিরের মাধ্যমে উরশ শরিফের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগন ছাড়াও বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের বিশিষ্ট খাদেমবৃন্দও এ উরশ শরিফে বয়ান করছেন।
এ উরশ শরিফ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সমবেত লক্ষ লক্ষ মানুষের আহার ও বিশুদ্ধ পানি সরবারহ ছাড়াও জামাতের সাথে নামাজ আদায়ে সব ব্যাবস্থা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শান্তিÑশৃংখলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কয়েক হাজার সেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ ও র‌্যাবও মোতায়েন থাকছে।
এ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেবের আধ্যাতিক উত্তরাধিকারী ও বড় ছাহেবজাদা আলহাজ খাজা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব সমেবত জাকেরান ও আশেকানবৃন্দকে সাক্ষাত প্রদান সহ নানা অসিহত প্রদান করছেন। যানবাহন ও মুসুল্লীদের ভীড়ে বরিশালÑফরিদপুর এবং বরিশালÑঢাকা জাতীয় মহাসড়কের পুকুরিয়া, তালমা ও পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মালিগ্রাম পয়েন্ট থেকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পর্যন্ত সড়কে ট্রাফিক ব্যাবস্থা নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
আপন পীর, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফী সাধক হজরত মাওলানা শাহ সুফী সৈয়দ খাজা ইউনুস আলী এরায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নির্দেশে বাংলা ১৩৫৪ সনে শাহসুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু:ছে:আ:) ছাহেব ফরিদপুরের সদরপুরের আটরশী গ্রামে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত হন। সেদিন মাত্র সাড়ে ৬টাকায় খেজুরের খোলের বেড়া ও ছনের ছাউনি দেয়া ঘর কিনে আটরশীতে ‘জাকের ক্যাম্প’ প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন পীর ছাহেব। কালের বিবর্তনে সেই জাকের ক্যাম্পই আজকের ‘বিশ্ব জাকের মঞ্জিল’। পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব তার জীবদ্বশায় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হেদায়াত প্রদান করে গেছেন। ২০০১-এর ১মে ওফাত লাভ পর্যন্ত নানা গঞ্জনা ও প্রবল প্রতিকুলতা অতিক্রম করেই তিনি ইসলাম প্রচারে ব্রতী ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন