শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

পবিত্র মিরাজের অশেষ গুরুত্ব

আফতাব চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০২ এএম

নবীশ্রেষ্ঠ হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর রাত্রিকালীন ঊর্ধ্বলোকে ভ্রমণের ঐতিহাসিক ঘটনার নাম মিরাজ। এটি ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর অন্যতম। মিরাজের তারিখ সম্বন্ধে একাধিক মত পরিলক্ষিত হয়। কেউ বলেন, রবিউল আউয়াল। কেউ বলেন, রবিউল আখের। আল্লামা ইবনে আব্দুল বার এবং ইমাম রাফি, ইমাম নববীসহ বহু হাদিস বিশারদ রজব মাসের কথা উল্লেখ করেছেন। নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী, তায়েফ থেকে ফেরা এবং মদিনা শরিফে হিজরত করার মধ্যবর্তী সময়ে রজব মাসের ২৭ তারিখ এই মিরাজ পর্ব সম্পন্ন হয়। এই ভ্রমণকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। মিরাজ ও আসরা। মক্কা শরিফের মসজিদে হারাম থেকে ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত প্রথম ভাগ এবং সেখান থেকে সোজা উপরদিকে লা-মাকানে ভ্রমণ হলো দ্বিতীয় ভাগ। প্রথম ভাগকে আসরা এবং দ্বিতীয় ভাগকে মিরাজ বলা হয়। পরিভাষাগত অর্থে পুরো যাত্রাটিই হলো মিরাজ।

হযরত মোহাম্মদ (সা.) রাতে মক্কা শরিফের মসজিদে হারামে অবস্থান করছিলেন। জিবরিল আমিন (আ.) এসে তাঁকে জাগ্রত করেন। তাঁর বক্ষবিদীর্ণ করে জমজমের পানি দ্বারা অন্তরকে ধুয়ে দেন। এরপর বোরাক নামের বাহনযোগে বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত নিয়ে যান। সেখানে পূর্ববর্তী নবীগণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। ফিরিশতা জিবরিল (আ.)-এর ইশারায় মহানবী (সা.) এই জামাতে ইমামতি করেন। কার্যত এর মাধ্যমে অন্যান্য নবী শেষনবীকে তাঁদের নেতা হিসেবে বরণ করে নিলেন। কুরআন শরিফের ‘লাতুয় মিনুন্না বিহি ওয়ালা তানসুরুন্নাহু’ বলে নবীদের জন্মের আগে তাঁদের কাছ থেকে মহানবী (সা.)কে বিশ্বাস ও সাহায্য করার যে শপথ গ্রহণ করা হয়েছিল, এবার মহানবীর নেতৃত্বে সকল নবীর নামাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে তা-ই বাস্তবায়িত হলো। এরপর মিরাজ বা ঊর্ধ্ব আরোহণের সূচনা। আকাশে তখন বিশিষ্ট নবীগণ তাকে অভিনন্দন জানান। প্রথম আকাশে আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তারপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আকাশে অন্যান্য নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হযরত ইব্রাহিম (আ.) মর্যাদাসম্পন্ন ‘খলিলুল্লাহ’ উপাধি অর্জন করার ফলে সপ্তম আকাশে অবস্থান করেন। কিন্তু খলিলুল্লাহর চেয়েও বড় উপাধি হলো হবিবুল্লাহ। তাই শেষনবী সপ্তম আকাশের আরও ঊর্ধ্বে ওঠার সৌভাগ্য লাভ করেন।
মহানবী (সা.) বলেন, আমি ঊর্ধ্বলোকে যাওয়ার পথে ইব্রাহিমকে (আ.)-কে সপ্তম আকাশে অবস্থিত বায়তুল মা’মুরের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসা অবস্থায় দেখেছি। তিনি আরও বলেন, বায়তুল মা’মুর সম্বন্ধে আমি জিবরলিকে জিজ্ঞেস করলাম যে, এটা কী? তিনি বললেন, এটা ফিরিশতাদের কিবলা। এখানে রোজ সত্তর হাজার ফিরিশতা সালাত আদায় করেন। যাঁরা একবার এই ইবাদত করে চলে যান, কেয়ামতের আগে তাঁরা আর সুযোগ পান না। মহানবী (সা.) বলেন, অতঃপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। আরবি ভাষায় কুল বা বরই গাছকে সিদরাতুন বলা হয়। আর মুনতাহা মানে শেষ। শাব্দিক অর্থে সিদরাতুল মুনতাহা অর্থাৎ শেষ প্রান্তের বরই গাছ। প্রশ্ন হলো, শেষ প্রান্ত বলতে কী? বিভিন্ন বর্ণনা মতে, ফিরিশতাদের জ্ঞানের পরিধি এ বৃক্ষ পর্যন্ত এবং শেষনবী ছাড়া অন্যান্য নবীদের শেষ পরিসীমা হলো এ বৃক্ষ। এছাড়া নিম্নভূমি থেকে যা কিছু ঊর্ধ্বগামী হয়, সব এ বৃক্ষ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। এসব কারণেই একে সিদরাতুল মুনতাহা বা শেষপ্রান্তের বরই গাছ বলা হয়। ক্রমশ প্রিয়নবী (সা.) আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। জান্নাত, জাহান্নাম, আরশ, কুরসি, লৌহ, কলম ইত্যাদি অদৃশ্য জগতের অচিন্তনীয় বহু কিছু পরিদর্শন করেন। সবশেষে তিনি ফিরে আসেন মক্কা শরিফের পবিত্র ভূমিতে, যেখান থেকে ভ্রমণের সূচনা করেন।
মহানবী (সা.)-এর আসরা ও মিরাজ কোনও অবস্থাতেই আত্মিক বা স্বপ্নযোগে ছিল না। ছিল সজাগ, সজ্ঞানে ও সশরীরে, যা কোরআন-হাদিস ও ঐতিহাসিকদের বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয়। এতে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। যেমন, মহানবী (সা.)’র এ ঘটনা সম্পর্কে কোনও অবকাশ নেই। যেমন, মহানবী (সা.)’র এ ঘটনা সম্পর্কে কোরআন শরিফে ‘সুবহান’ শব্দ এসেছে। যে শব্দটি কোনও আশ্চর্যজনক বিষয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। মিরাজ যদি নিছক স্বপ্নজগতের ব্যাপার হতো, তবে তাতে আশ্চর্যের কী আছে? স্বপ্নে তো অনেক মানুষই আকাশে ওঠে এবং একই ঘুমে বহু অবিশ্বাস্য কাজ করে ফেলে। কোরআন শরিফে ওই মিরাজ সম্পর্কিত আয়াতে ‘আবদ’ শব্দও ব্যবহৃত হয়েছে। আত্মা ও দেহ- এ দু’টির সমষ্টিকে আবদ বা ব্যক্তি বলা হয়। এতেই প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাহকে সশরীরে নিজের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন। প্রিয়নবীকে প্রথমেই পরমার্শ দেওয়া হয়েছিল, মিরাজের ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য। কারণ, এত আশ্চার্জনক ঘটনা হয়তো কেউ বিশ্বাস করবে না। পরে যখন জানাজানি হয়ে যায়, তখন বিরোধীরা ঠাট্টাবিদ্রƒপ শুরু করে। কিছু মুসলমান মিরাজের ঘটনা অস্বীকার করে ধর্মত্যাগী হয়ে যায়। ব্যাপারটা যদি স্বপ্নের হতো, তবে এতসব বাকবিতন্ডার মোটেই প্রয়োজন ছিল না। আরও কারণ রয়েছে। কাজেই, মিরাজ নিঃসন্দেহে সজাগ ও সশরীরে সংঘটিত হয়েছে।

আজকের বিজ্ঞানের যুগে মানুষ গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে চষে বেড়াচ্ছে। দেড় হাজার বছর আগে মহানবী (সা.) যে-সব বাণী প্রদান করে গেছেন, তাই এখন বিজ্ঞানের হাত ধরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সহজ কথায়, বিজ্ঞানের গবেষণা সবেমাত্র শুরু হয়েছে। এ যুগের বিজ্ঞানীরা যদি রকেটের সাহায্যে আকাশে ভ্রমণ করতে পারে, মাসের পর মাস সেখানে আত্মা ও দেহ নিয়ে অবস্থান করতে পারে, তা হলে শ্রেষ্ঠ নবীর আকাশ ভ্রমণ অস্বীকার করা যায় কোন যুক্তিতে? এ যুগের চন্দ্র অভিযানকে যদি বিজ্ঞানের চমকপ্রদ ঘটনা মনে করা হয়, তবে শেষ নবীর চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করার ঘটনা মিথ্যা মনে করা হবে কোন বিবেচনায়? মিরাজ বিষয়ে সময়ের প্রশ্নটা অত্যন্ত জটিল। মক্কা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস এবং সেখান থেকে সোজা উপরদিকে সেই উঁচু মাকাম ‘ছারিফল আকলাম’ (ফিরিশতাদের লেখালেখির আওয়াজ)-এর স্তর পর্যন্ত বা আরও উপরে পৌঁছে সব কাজ সেরে ফিরে আসতে কত সময় লেগেছিল, এ এক বিরাট প্রশ্ন। এই দীর্ঘ পথের দূরত্বে কত হাজার না কত লক্ষ মাইল, কে জানে। অথচ, একই রাতের কিছু সময় ব্যয় হয়েছে মাত্র, তা কী করে? এখানে সহজ উত্তর এই যে, সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব কয়েক লক্ষ মাইলের কম নয়। তবু সূর্য উদিত হলে তার আলো পৃথিবীতে পৌঁছে যায় এক নিমিষে। মিরাজের ব্যাপারটা এরকমই। ‘বরাক’ বা বিদ্যুতের গতিসম্পন্ন বোরাক নামের বাহনযোগে ‘নুর’ বা আলোর তৈরি নবী (সা.)’র সফর বলে কথা। আলোর গতিবেগে চললে আরও বেশি দূরত্বের পথ অল্প সময়ে অতিক্রম করা সম্ভব। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে এ বিষয়টি অস্বীকার করার জো নেই। এ কথাটিও স্মরণ করা যেতে পারে যে, সাধারণ বিলকিসের সিংহাসন চোখের পলকে যদি বহু দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, তা হলে আদমসন্তানদের সর্দার নবী (সা.)’র ঊর্ধ্ব আরোহণ কেন এক পলকে সম্ভব হবে না? অন্যদিকে, সময় ও দূরত্বের সৃষ্টিকর্তা ও মিরাজের আহ্বায়ক তো আল্লাহ। তিনি তাঁর প্রিয় মাহবুবের জন্য সবকিছু সংকুচিত বা প্রসারিত করতেই পারেন।
(এক) মহানবী (সা.) মিরাজ রাতে ঊর্ধ্বজগতে গমন করেছেন। সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে লা-মাকান বা শেষ পরিসীমা পর্যন্ত সফর করেছেন। আরও ভেঙে বললে- ‘কাবা কাউছাউনি আও আদনা’ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছেন। যে স্তর পর্যন্ত ফিরিশতাদের প্রধান জিবরিল আমিন পর্যন্ত যেতে পারেননি। অন্য কোনো নবীও এত ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি পাননি। কিন্তু ওসব বেশ আশ্চর্যের বিষয় নয়। আল্লাহ তাঁর হাবিবকে একেবারে কাছে নিয়ে যাবেন, এ আবার আশ্চর্য কীসের?

(দুই) শেষনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আকৃতি মানবসদৃশ হলেও মর্যাদার দিক দিয়ে এত উচ্চাসনে ছিলেন যে, ঊর্ধ্বজগতের সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছা একেবারে সহজ ছিল। অথচ, জিবরিল (আ.) সকল ফিরিশতাদের চেয়ে মর্যাদাশীল এবং নূরের তৈরি হয়েও নবীজির সঙ্গে শেষ পরিসীমা পর্যন্ত যাওয়ার সাহস পাননি। এক পার্যায়ে তিনি বলেন, আমি আর অগ্রসর হব না। এক চুল পরিমাণ অগ্রসর হলেই আল্লাহর নূরের তজল্লিতে আমার পালক জ্বলে ভস্ম হয়ে যাবে।

(তিন) মহানবী (সা.)’র অন্যতম পরিচয় হলো, তিনি রাহমাতুল্লিল আলামিন বা সমস্ত সৃষ্টিজগতের রহমত। সাত আসমান, আরশ-কুরসি, লৌহ-কলম, বায়তুল মা’মুর, সিদরাতুল মুনতাহা- এগুলোও আল্লাহর সৃষ্টি জগতের অন্তর্ভুক্ত। যদি তাই হয়, তবে এগুলো রাহমাতুল্লিল আলামিন নবীর রহমত থেকে বঞ্চিত হবেন কেন। বনের হরিণী, ওহুদ নামের পর্বত, মুতকল্লিম নামের জড় পদার্থ যে নবীর রহমতে ভাগ বসাতে পারে। ঊর্ধ্বাকাশের তারকারাজি, ফিরিশতাকুল ও অদৃশ্য জগৎ উপেক্ষিত থাকবে কেন? ঊর্ধ্বজগতে তাঁকে সশরীরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখানেই। অর্থাৎ মিরাজের অন্যতম কারণ, সবকিছু যাতে প্রিয়নবীর রহমত লাভে ধন্য হয়। তাঁর রহমত প্রাপ্তিতে অংশীদার হতে পারে।
(চার) সাত আসমান, বায়তুল মা’মুর, বেহেস্তদোজখ, আরশে আজিম বা তৎসংলগ্ন আরও যা কিছু আছে, তা সত্য। এখানে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। আগেকার লক্ষ লক্ষ নবী তা প্রচার করে গেছেন। তবে ওহির মাধ্যমে অবগত হয়ে, সরেজমিনে দেখে এসে নয়। আগেকার লক্ষ লক্ষ নবী যা প্রচার করে গেছেন, মহানবী (সা.)কে তাই দেখানো হয়েছে। এতে তাঁর শ্রেষ্ঠত্বও ঘোষিত হয়েছে।

(পাঁচ) আগেকার অনেক নবীর ওপরও আল্লাহ তাঁর ‘সালাম’-এর হাদিয়া পেশ করেছেন। পবিত্র ক্বোরআন শরিফে এসেছে : ছালামুন আলা ইব্রাহিম, ছালামুন আলা নুহিন ফিল আলামিন, ছালামুন আলা মুছা ও হা-রুন। কিন্তু কাউকে কাছে ডেকে নিয়ে নয়। বাহক জিবরিল আমিনের মাধ্যমে। ব্যতিক্রম শুধু শেষ নবীর ক্ষেত্রে। তাঁকে আল্লাহ পাক সালাম জানিয়েছেন পাশে বসিয়ে।

(ছয়) মিরাজের রাতে আল্লাহ তাঁর হাবিবকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানান। ফেরার পথে হযরত মুসা (আ.) নবীজীকে পঞ্চাশ থেকে কিছুটা হ্রাস করার আবেদন জানান। শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশের স্থলে পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। নামাজ যে শেষে পাঁচ ওয়াক্তই বহাল থাকবে, তা তো আল্লাহ আগেই জানেন। তা হলে প্রথমে পঞ্চাশ, অবশেষে পাঁচ ওয়াক্ত, রহস্য কী? নবীজী নয়বার যাতায়াতের পর যে ৪৫ ওয়াক্ত কমানো হয়েছে, তা একেবারেই তো সম্ভব। হ্যাঁ, রহস্য অনেক গভীরে। একটি রহস্য হলো- আল্লাহর ইচ্ছা। হে পিয়ারা হাবিব, আপনি বরাবর চাইতে থাকুন, আর আমি যেন দিতেই থাকি। এই চাওয়া-পাওয়ার নাম মিরাজ। আরেকটি রহস্য, নামাজ মূলত পঞ্চাশ ওয়াক্ত ফরজ ছিল। কেবল নবীজীর অনুরোধ উপেক্ষা করতে না পেরেই পাঁচ ওয়াক্ত করা হলো। আল্লাহর আহ্বান- হে দুনিয়াবাসী মানুষ। তোমরা দেখে নাও যে, আমার কাছে নবীর সুপারিশের গ্রহণযোগ্যতা কী বেশুমার। পবিত্র মিরাজের গুপ্তরহস্য এখানেই।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন