বার বার নিজ নাম, বাবা-মা এর নাম ও ঠিকানা পাল্টে দীর্ঘ দিনের পলাতক দুই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২।
সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি শিহাব করিম এসব তথ্য জানায়।
র্যাব জানায়, ২০১১ সালেএ ১১ এপ্রিল ডিএমপি সবুজবাগ থানায় মাদক মামলা এবং ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপি যাত্রাবাড়ী থানায় মাদক মামলার আসামী মো. রনি ওরফে রাশেদ মাহমুদ ওরফে রনি (৩৫) এর বিরুদ্ধে উক্ত থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। আদালত মাদক মামলা দুটির অবগত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য প্রমাণ সহ দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিশেষ দায়রা জজ ও বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩, ঢাকা দুইটি মামলায় যথাক্রমে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর এবং ২০২২ সালে ১৬ অক্টোবর ২০২২ সালে রনিকে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত রনি মামলাগুলোর রায়ের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে আত্মগোপনে ছিল।
এরই ধারাবাহিকতায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গতকাল রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এএসপি শিহাব করিম জানায়, আসামি এক জন পেশাদার মাদক চক্রের সদস্য। তার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি, দস্যুতা ও মাদকের ৪টি মামলা সহ সর্বমোট ৬ টি মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনীভাবে সীমান্ত জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেশা জাতীয় মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল রাজধানীর ঢাকায় নিয়ে এসে তার অন্যান্য সংঘবদ্ধ সহযোগীদের কাছে সরবরাহ ও মাদক ব্যবসা করে আসছিলো।
র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক বলেন, আসামি মামলা দুটিতে মোট ১৬ মাস জেল খেটেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে থেকে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যায়। রনি তার খালুর কাছে থেকেই বড় হয়েছে এজন্য মামলাগুলোতে মা-বাবার নামের পরিবর্তে খালা-খালুর নাম দিয়ে থাকে, যা সে মিথ্যার আশ্রয় নেয় বলে প্রমাণিত হয়।
এছাড়াও ২০২৩ সালে দস্যুতা মামলায় নিজের পিতার নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে দেয়। সে ২০০৭ সালে তার এনআইডি করেছে এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালে নিজেকে আত্মগোপনে রেখে মাদক ব্যবসা করার জন্য উক্ত এনআইডি পরিবর্তন করতে চেয়েছিল, যা কর্তৃপক্ষ ব্লক করে দিয়েছে। এভাবে রনি যখনই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরা পড়ে তখনই সে একটা ভুল নাম ও ঠিাকানা দিয়ে দেয় যার কারণে তার প্রকৃত মামলা কয়টি আছে ও বিস্তারিত তথ্য জানা যায় না।
র্যাব-২ এর এএসপি আরও বলেন, একটি মামলায় ধরা পড়লে বাকি মামলা গুলো অনলাইনে চেক করলে দেখা যাওয়ার কথা থাকে যেহেতু নামের বিভ্রান্ত থাকে সেহেতু তাকে ধরা যায় না। এভাবে সে পরিচয় গোপন করে মাদকের ব্যবসা করে যাচ্ছে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখছে।
আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন