বরিশালে হত্যা সন্দেহে মৃত্যুর তিন সপ্তাহ পরে কবর থেকে সাংবাদিক পুত্র মুসাব্বির খান জারিফের মরদেহ তুলে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি এবং আরটিভি’র প্রতিনিধি সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী খান জসিমের আবেদনে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের নির্দেশে বুধবার পুত্র জারিফ (১৮)-এর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু আব্দুল্লাহ খানের উপস্থিতিতে বুধবার বেলা ১১ টায় মুসলিম গোরস্থান থেকে জারিফের মরদেহ উত্তোলন করে সুরতহাল শেষে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পুনরায় ময়ন তদন্ত করা হয়েছে ।
মৃতের পিতা মোহাম্মদ আলী খান জসিম সাংবাদিকদের জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিজ ইচ্ছের বিরুদ্ধে বন্ধুদের সাথে নিজ বাসা থেকে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে বের হয় জারিফ। মাদারীপুর পৌঁছে একাধিকবার পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয় এবং ২৮ জানুয়ারি জারিফ তার মাকে বরিশালে ফিরে আসছে বলে জানায়। জসিম জানায়, ২৮ জানুয়ারি রাত ১২ টার দিকে জারিফের মোবাইলে ফোন করা হলে সে রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে ২৯ জানুয়ারি বেলা ১২ টায় আবারো জারিফের মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও সে রিসিভ করেনি। এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তার এক পর্যায়ে জারিফের বন্ধু বিকি’র মোবাইলে কল দিলে সেও রিসিভ করেনি। পরে বিকেল ৩ টার দিকে বিকি তার মোবাইল কল রিসিভ করে সে জানায় জারিফ মাদারীপুর লেকে গোসল করতে গিয়েছিলো বিধায় ফোন ধরতে পারেনি। কিন্তু তখন কথা বলতে চাইলে জারিফ বাড়ির সামনে গেছে জানিয়ে বিকি সাথে সাথে সেল ফোন কেটে দেয়।
২৯ জানুয়ারি জারিফের তিন বন্ধু দ্বীপ, ইব্রাহিম ও রাজন আমাদের বরিশালের বাসায় এসে জারিফের হাপানি বা শ্বাস কষ্টের কোন রোগ রয়েছে কিনা জানতে চায়। এ ধরনের কোন রোগ নেই জানিয়ে কি হয়েছে জানতে চাইলে তারা একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে কথা বলতে বলে। সেখানে কল দেয়া মাত্র জানতে পারি জারিফ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে সেখান থেকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে আমার ছেলে জারিফকে নিয়ে রওয়ানা দেয় বন্ধুরা। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে জারিফ’কে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
জারিফের পিতা জসিম জানায়, স্বাভাবিকভাবেই ছেলের দাফন সম্পন্ন করলেও সময় অতিবাহিত হলে বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া জারিফের মোবাইল খতিয়ে দেখে বিভিন্ন ছবিসহ ডাটা খুজে না পাওয়া, কয়েকদিন পর মোটর সাইকেল উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে জারিফের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে নিশ্চিত হই। এছাড়া যারা মাদারীপুরে জারিফের সাথে থাকা বিকি হাসপাতালেও আসেনি। এমনকি আমাদের সাথেও কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। আবার যে অংকনের নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো তার পরিবার সহ অন্য বন্ধুরাও যা বলছে তাদের একজনের সাথে অন্যজনের কথার মিল নেই। জারিফের পিতা তার ছেলেকে মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করাসহ মৃত্যুর রহস্য চাপিয়ে রাখার পেছনে বড় ধরনের কোন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি তার ছেলের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন সহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবী জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন