বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন, টানা জার্নিতে অসুস্থ ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত চাইলেন পা ধরে ক্ষমা

ইবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২১ পিএম

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও অভিযুক্তরা। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন ভবনে তাদেরকে নিয়ে আসা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডলের কক্ষে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরীর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ফুলপরী খাতুন বলেন, অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা আমার হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন, আমাকে মাফ করে দাও। অভিযুক্তের প্রতিউত্তরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ৪-৫ দিন আগে আপনারা আমাকে র‍্যাগ করলেন। এখন সবকিছু প্রশাসনের হাতে, আমার কিছুই করার নেই। সেসময়ে আপনারা আমাকে নিয়ে ভাবেননি।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা ও ড. মুর্শিদ আলম।

তবে হাত-পা ধরে মাফ চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত অন্তরা এই বিষয়ে মুখ খুলেননি। অভিযুক্ত তাবাসসুম বলেন, যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলেছি। কান্নার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখে কি মনে হয় কান্না করেছি? তবে এই বিষয়ে মুখ খুলেননি প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. রেবা মন্ডল।

জানা গেছে, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতরা বুধবার গোপনে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন। এদিকে তদন্তের স্বার্থে বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে এসেছে ভুক্তভোগী। পরে হল কর্তৃক তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে দুপুর ৩টার দিকে শেখ হাসিনা হল থেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের রুমে নিয়ে আসা হয়৷

এদিকে ক্যাম্পাসে এসেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ফুলপরী। এ নিয়ে পাবনা থেকে টানা চারদিন কুষ্টিয়ায় গেছেন তিনি। আর টানা ৪ দিন দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। তার চোখেমুখে দেখা যায় অসুস্থতা ও ক্লান্তির ছাপ। এসময় গণমাধ্যমকর্মীরা তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি এটুকুই বলেন, খুব বেশি ভালো না। এ সময় মেয়ের অবস্থার বর্ণনা দেন ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মোট চারদিন আসছি ক্যাম্পাসে। দেখা গেছে, বিকেলে ফোন দিচ্ছে সকালে আসুন। তখন সকালে কিছু খেয়েই ভ্যানে করে মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে পড়ি। তবু আসছি। কেবল সুষ্ঠু তদন্ত, সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে। মেয়েটা আমার শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমাদের আসতে হবেই। নির্যাতনের বিচাররের দাবিতে আমরা আসব, না আসলে বিচার পাব না।

এ বিষয়ে হল তদন্ত কমিটির আহবায়ক ড. আহসানুল হক বলেন, তদন্তের স্বার্থে ভুক্তভোগীকে আজও ডাকা হয়। আমরা তার সাথে বিস্তারিত কথা বলেছি। অভিযুক্তদের সাথেও কথা বলবো। কতদূর অগ্রগতি হলো এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে চাই না।

সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদুর রহমান টিটু বলেন, আমরা ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দিয়ে আলাউদ্দিন নগর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। পরে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাসায় যান।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রী গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হলের প্রভোস্ট ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। যার জন্য আজকে তাকে ডাকা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন