শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গারো পাহাড়ে ৪ মাসেই কোটি টাকার সোলার ফেন্সিং প্রকল্প ভেস্তে গেছে

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৩:১৫ পিএম

শেরপুর গারো পাহাড়ে বন্যহাতি তাড়াতে কোটি টাকায় নির্মিত সোলার ফেন্সিং (বৈদ্যুতিক বেড়া) প্রকল্পটি ভেস্তে গেছে । জানা গেছে, তৎকালিন বন কর্মকর্তা ও নির্মাণকারীর যোগশাজসে নিন্মমানের কাজ করায় নির্মাণের ৪ মাসেই প্রকল্পের ব্যাটারি অকেজো. পরিচর্যা ও দেখভালের অভাবে চুরি দেখানো হয়েছে যন্ত্রপাতি। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বলছে, ব্যাটারি নয়, তারে গুল্মলতা আঁকড়ে, সৃষ্টি হচ্ছে শর্টসার্কিট। ফলে কাজে আসছে না বৈদ্যুতিক বেড়া। বন বিভাগের দাবি, প্রকল্প বাস্তবায়নের পর রক্ষণাবেক্ষণে লোক না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। হাতির তান্ডব থেকে বাঁচতে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকার আদলে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় গারো পাহাড়ের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী সীমান্তের ১৩ কিলোমিটার সৌর বিদ্যুত বেড়া নির্মাণ করে বন বিভাগ। ৯১ লাখ টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ঢাকার নিউ ন্যাশন সোলার লিমিটেড। বুয়েটের প্রতিনিধি দল বৈদ্যুতিক বেড়া পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দাখিলে ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্টার মামুন অর রশীদ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কাজটি নগদ নারায়নের বিনিময়ে বুঝে নেন। ফলে মাত্র ৪ মাসেই ক্রুটি দেখা দেয়। বন বিভাগ ও নিউ ন্যাশন সোলার লিমিটেডের প্রতিনিধি পরিদর্শন প্রতিবেদনে দক্ষ ইলেকট্রেশিয়ান না থাকা, নিয়মিত পরিচর্যার অভাব ও গুল্মজাতীয় গাছে বৈদ্যুতিক বেড়ার ক্রুটির কথা উল্লেখ করে। স্থানীয়রা বলছেন, ৩৫ বছর মশাল জ্বালিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়াতেন। বিদ্যুত বেড়া নির্মাণে প্রথম দিকে সুবিধা হয়। কিন্তু ৪ মাস না যেতেই অকেজো হয়ে পড়ে। ৫-৬ বছর বেড়া অকেজো পড়ে আছে। সরকারেরও কোটি টাকা গচ্ছা গেছে। তার পরও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা সরকার। স্থানীয় বিমল কোঁচ বলেন, কোটি টাকার প্রজেক্ট মাত্র ৪ মাসেই অকেজো হয়?। তদন্ত করা হোউক বন বিভাগ ও ঠিকাদার ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে। তাহলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে পড়বে। এ দিকে গারো পাহাড়ের লাখ লাখ মানুষ হাতির আক্রমণে জীবন ও ফসল হারানোর শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। রঞ্জিত সাংমা বলেন, হাতি আমাদের জীবন মরণ সমস্যা। ওই ব্যাটারি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়ীত্বতো জনগণের নয়। সমাধান না হলে পাহাড়ি মানুষ বন্যহাতির কবলে জীবন-মরন সমস্যায় পড়বে।

ওই সময় দায়িত্বে থাকা নাটের গুরু রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে ভেস্তে গেছে প্রকল্পটি। বিল পরিশোধের পর খোঁজ নেয়নি। চিঠি দিয়েও সমাধান পাওয়া যায়নি। তবে জনগণের অভিযোগ, নির্মাণকারী ও বনবিভাগের যোগশাজসেই নিন্ম মানের দায়সারা গোছের কাজ দেখিয়ে সরকারের বিপুল টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন, বিষয়টি বনবিভাগের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন