ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি-নেতাদের সম্বন্ধে জনগণ কি বলে তা শুনতে ছদ্মবেশে বাসে ও চায়ের দোকানে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংবিধান নিয়ে তামাশা করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক পেশাজীবী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। দৈনিক দিনকালসহ সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়া এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালা-কানুন বাতিলের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে দেশটা অর্জন হয়েছে, তারা (আওয়ামী লীগ) সেটা শেষ করে ফেলবে আর আমরা বসে থাকব তা তো হতে পারে না। আজকে সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। গ্রাম-গঞ্জে সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আগে মানুষ ভয় পেত এখন আর ভয় পায় না।
তিনি আরও বলেন, এমপিরা (সংসদ সদস্য) পারলে একদিন বাসে বসেন, খলিফা হারুন উর রশীদের মতো ছদ্মবেশে। শোনেন বাসের লোকেরা আপনাদের সম্পর্কে কি বলে। আল্লাহর কসম, এক-দুই স্টপেজের বেশি থাকতে পারবেন না। অতিষ্ঠ হয়ে যাবেন। পারলে কোনো ছোট-খাট চায়ের দোকানে গিয়ে বসেন। শোনেন গিয়ে কি বলে লোকজন আপনাদের সম্পর্কে। কিন্তু এগুলো শোনবেন না আপনারা।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধান নিয়ে তামাশা করতেছে। সংবিধানে লিখে রাখেন সমাজতন্ত্র কায়েম করবেন, আর চর্চা করেন মুক্তবাজার অর্থনীতির। একটার সঙ্গে আরেকটা কি যায়? সংবিধানে লিখে রাখেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আর মুখে বলে আপনারা ধর্মনিরপেক্ষ। সেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের আন্দোলন প্রতিহত করতে চান। পারবেন না। কেউ পারে নাই, আপনারও পারবেন না। আগামী দিনে আমরা বিজয়ী হব দাবি করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যেসব পত্র-পত্রিকা অন্যায়ভাবে বন্ধ করতেছে, সবগুলো খুলে যাবে। বরং যারা বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য দিয়ে উল্টা-পাল্টা জিনিস প্রতিদিন প্রচার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, আমরা বন্ধের পক্ষে নয়, কিন্তু যারা এগুলো করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন বারবার পেছানো নিয়ে প্রশ্ন তুলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এত ক্ষমতা তাদের (আওয়ামী লীগ) বিএনপির লোকজন রাস্তায় নামলে পা ভেঙে দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশেনের ময়লার গাড়িতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আগুন দিয়েছে, সেটা খুঁজে বের করে ফেলতে পারেন, সচিবালয়ের পাশে গিয়ে দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ভেতরে ককটেল নিক্ষেপ করেছে, তাদের অর্থ ও বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতা করেছে খন্দকার মোশাররফ, মির্জা আব্বাস, এটা খুঁজে বের করতে পারেন আর সাগর-রুনির হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ৯৫ বার সময় নেন। তার কারণ কি? সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বললেন, হত্যাকারী খুঁজে পেয়েছি, নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না কারণ গুরুত্বপূর্ণ লোক জড়িত আছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন আর সঞ্চালনা করেন কাদের গনি চৌধুরী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন