কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জন, ঢাকার মহাখালীতে আইসিডিডিআর,বি ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এই পরিদর্শনের মাধ্যমে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আইসিডিডিআর,বি’র জীবন রক্ষাকারী কাজ এবং কানাডার সঙ্গে এর অংশীদারিত্বের বিষয়ে অবগত হলেন। তার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অন্যান্য সদস্যরাও ছিলেন।
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বসবাসকারী প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য সমস্যার উদ্ভাবনী ও সাশ্রয়ী সমাধান প্রত্যক্ষ করার উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর এই সফর। আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানায়। ড. তাহমিদ আহমেদ তাকে আইসিডিডিআর,বি’র কাজের বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করেন যা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে। মন্ত্রী আইসিডিডিআর,বি’র ঢাকা হাসপাতালে কিছু সময় কাটান, যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বল্প খরচের বিভিন্ন উদ্ভাবন, গুরুতর নিউমোনিয়া এবং হাইপোক্সেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য বাবল সিপিএপি এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা কানাডার সহযোগিতায় পরিচালিত একটি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কিত কাউন্সেলিং সেবা - উদ্দীপ্ত সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়াও তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষসহ প্রান্তিক এবং সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের উপর আইসিডিডিআর,বি’র বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে অবহিত হন এবং কয়েকজনের সাথে কথা বলেন।
মন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জন আইসিডিডিআর,বি’র জীবন রক্ষাকারী গবেষণা এবং উদ্ভাবন দেখে মুগ্ধ হয়ে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটিকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমি আইসিডিডিআর,বি-তে যা দেখেছি তাতে আমি খুবই মুগ্ধ। এখানে যে উদ্ভাবনগুলো হচ্ছে তা মানুষের জীবন বাঁচায়। যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে তা হল, এখানকার বিজ্ঞানী ও কর্মীরা কানাডার বিনিয়োগকে ব্যবহার করে জটিল চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সহজ সমাধান বের করছেন যা পৃথিবীর সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জায়গায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, আমি সমানভাবে মুগ্ধ যে তারা এখানে যে জ্ঞান অর্জন করছে তা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে।
ড. তাহমিদ আহমেদ আইসিডিডিআর,বি’র কাজের বিষয়ে জানার আগ্রহের জন্য মন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জনের প্রশংসা করেন এবং বলেন, বিগত পঁয়তাল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কানাডা আমাদের অব্যাহতভাবে সহায়তা করে আসছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সহায়তার ফলেই, আমরা ধারাবাহিক ভাবে আমাদের গবেষণা করতে সক্ষম হয়েছি, যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলির জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে কাজ করে আমরা বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি, যা কানাডা সহ আমাদের অন্যান্য দাতাদের দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার ফলে সম্ভব হয়েছে।
হাইকমিশনার লিলি নিকোলস আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণা এবং উদ্ভাবনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আইসিডিডিআর,বি এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে তা লাখ লাখ জীবন বাঁচাচ্ছে। আমরা খাবার স্যালাইন, ডায়রিয়ার চিকিৎসায় জিঙ্কের ব্যবহার, ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন এবং বার্থিং ম্যাটের মতো অনন্য উদ্ভাবন দেখেছি। এগুলো সহজ, কার্যকরী, সাশ্রয়ী এবং বাংলাদেশে তৈরি। কিন্তু এগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর সত্যিই অসাধারণ প্রভাব ফেলে। আমরা এই বিশ্বখ্যাত উদ্ভাবনগুলো দেখে খুবই আনন্দিত, এবং আমরা গর্বিত যে কানাডাও আইসিডিডিআর,বি’র সাথে রয়েছে। গবেষণা ছাড়াও, কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআর,বি ঢাকা এবং চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে বছরে দুই লাখেরও বেশি রোগীকে বিনামূল্যে ডায়রিয়া এবং অপুষ্টির চিকিৎসা প্রদানে সহায়তা করে।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন