শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শব্দদূষণে অতিষ্ঠ কুবি শিক্ষার্থীরা

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৬:৪২ পিএম

শালবন বৌদ্ধ বিহারের কোল ঘেঁসে অবস্থিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। একে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যক্তিমালিকানাধীন অসংখ্য রিসোর্ট ও বিনোদন পার্ক। এতে গাড়ির হর্ন, মাইকের উচ্চ শব্দ, পার্কের ডিজে গানে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এতে পড়াশোনা ও বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এদিকে বিভিন্ন সময়ে এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও আলোর মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কাছেই তৈরি হয়েছে স্বপ্নচূড়া রিসোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তা পার হয়ে যেতে হয় বিনোদন কেন্দ্র ম্যাজিক প্যারাডাইস। এছাড়াও রয়েছে ডাইনোসর পার্ক ও ব্লু ওয়াটার পার্ক। ফলে প্রতিদিনই উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে কয়েক হাজার ট্যুর বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন গাড়ি এ পথে যাতায়াত করে। এতে যানজটের সমস্যায়ও পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোল ঘেঁসে তৈরি হওয়া এসব বিনোদন কেন্দ্র ও গাড়ির উচ্চ শব্দ আমাদের চূড়ান্ত পরীক্ষায়ও প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে।

তবে সেসব নিয়মের কোনোটির তোয়াক্কা করছেন না রিসোর্ট-পার্ক মালিক ও পর্যটক বাসগুলো।

বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, আমরা হল থেকে বের হলেই আতঙ্কে থাকি। কখন যে গাড়ির নিচে চাপা পড়ি তার ভয়ে থাকতে হয়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনগুলোতে রাস্তায় প্রচুর যান চলাচল বেড়ে যায়। এই দিনগুলো বিশ্রামের যেমন ব্যাঘাত ঘটে, তেমনি পড়াশোনা থেকে শুরু করে ক্লাসেও সমস্যায় পড়তে হয়। এ বিষয়ে কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চুপ থেকেছে যা আমাদের বোধগম্য নয়।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন সময় এ সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কোনো সুরাহা পাচ্ছি না। প্রশাসনের এমন অবহেলা আমার বোধগম্য নয়।

ম্যাজিক প্যারাডাইসের স্বত্বাধিকারী মোদাব্বের হোসেন নাসির বলেন, আমরা ত গাড়িগুলোকে প্রতিনিয়ত বলার পরো কথা শুনতেছে না। যতদ্রুত সম্ভব সাইনবোর্ড লাগিয়ে তাদেরকে সতর্ক করে দিব।

এ বিষয়ে স্বপ্ন-চূড়ার স্বত্বাধিকারী এনামুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের বিশেষ করে সপ্তাহে একদিন প্রোগ্রাম থাকে। তবে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি সবসময় আমাদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে। তাই আমরা গানবাজনার ক্ষেত্রে যত সম্ভব সাউন্ড নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আছে। তারপরও আমি পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।

কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক এস এম আতিকুউল্লাহ বলেন, আমরা যতদূর সম্ভব পার্কে যাওয়ার সময় গাড়িগুলো মাইকবাজনা না করার জন্য বলে দিয়েছি। কিন্তু আসার সময় বলা ত আর সম্ভব হয়ে উঠে না। বিষয়টি নিয়ে পার্ক মালিকদের সাথেও কথা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন