অবশেষে বরিশাল সেক্টরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রী বান্ধব সময়সূচীতে ফিরছে। তবে এজন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো অন্তত ২২ দিন। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দাবী অনুযায়ী বরিশাল সেক্টরে দৈনিক ফ্লাইটও আপতত চালু হচ্ছে না। উপরন্ত বুধবার থেকে বরিশাল সেক্টরে বিমান-এর ভাড়া ২শ টাকা বাড়িয়ে ৩২শ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু বেসরকারী নভো এয়ার একই দিন থেকে ২৮শ টাকায় ফ্লাইট পুণর্বহাল করেছে বরিশাল সেক্টরে। অপর বেসরকারী এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলা বরিশাল সেক্টরে সর্বনি¤œ ভাড়া ৩ হাজার টাকাই বহাল রাখছে।
আগামী ২৩ মার্চ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র আকাশ পথে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান-এর গ্রীষ্মকালীন সময়সূচীতে কিছুটা পরিবর্তন আনার পাশাপাশি বর্তমানে সপ্তাহের ৩টি ফ্লাইট ৪টিতে উন্নীত করছে বলে জানা গেছে। সময়সূচীতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বর্তমানে বৃহস্পতি, শুক্র ও রোবববার বরিশাল সেক্টরে বিমান দুপুরের দিকে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। যা মোটেই যাত্রী বান্ধব নয়। তবে ২৩ মার্চ থেকে শণিবারেও ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান। এ তথ্য বিমান-এর দায়িত্বশীল সূত্রের।
পরিবর্তিত সময়সূচী অনুযায়ী বিমান বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বিকেল সোয়া ৪টায় ও বরিশাল থেকে বিকেল ৫.৩০টায় এবং শুক্র, শণি ও রোববার ঢাকা থেকে সকাল ৮.২৫টায় ও বরিশাল থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে। পরিবর্তিত এ সময়সূচীকে সাধারন যাত্রীগন সাধুবাদ জানালেও অবিলম্বে দেশের অন্য সব সেক্টরের সাথে দুরুত্ব ভেদে বরিশাল সেক্টরে ভাড়া নির্ধারন করে দৈনিক নিয়মিত ফ্লাইট প্রবর্তনের দাবী জানিয়েছেন। বরিশাল প্রেস ক্লাব এবং বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র বটব্যাল ও ইসমাইল হোসেন নগাবান ছাড়াও চেম্বার অব কমার্স-এর সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বরিশাল সেক্টরে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান-এর নিয়মিত ফ্লাইট চালু ছাড়াও দেশের অন্যসব অভ্যন্তরীণ সেক্টরের সাথে দুরত্ব বিবেচনায় নিয়ে ন্যায্য ভাড়া প্রবর্তনেরও দাবী জানিয়েছেন। পাশাপাাশি ঢাকা-বরিশাল-চট্টগ্রাম-ঢাকা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-বরিশাল-ঢাকা সহ ঢাকা-বরিশালÑযশোর-ঢাকা ও ঢাকা-যশোর-বরিশাল-ঢাকা রুটেও বিমান ফ্লাইট পারিচালনের দাবী জানান হয়েছে।
১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বরিশাল বিমান বন্দর ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ফ্লাইট চালুর পারে দীর্ঘ চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে ২০২১-এর ২৬ মার্চ বরিশাল সেক্টরে বিমান-এর দৈনিক ফ্লাইট চালু হয়েছিল। সে থেকে অত্যন্ত নির্ভরতায় অন্য দুটি বেসরকারী এয়ারলাইন্স-এর সাথে সুষ্ঠু প্রতিযোগীতার মাধ্যমে এ সেক্টরে বানিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালন অব্যাহত রাখছিল রাষ্ট্রীয় বিমান। অভিযোগ রয়েছে, গত বছর ২৭ জুন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পরে একটি মহলের অপতৎপড়তায় বরিশাল সেক্টরকে বেসরকারী এয়ারলইন্স-এর মনোপলি ব্যবসার লক্ষ্যে বিমান বন্ধের তৎপড়তা শুরু হয়। তবে নানামুখি আত্মঘাতি কর্মকান্ড ও যাত্রী বান্ধব সময়সূচী থেকে সরে আসার পরেও গত বছর বরিশাল সেক্টরে বিমান-এ যাত্রী ভ্রমনের হার ছিল ফ্লাইট প্রতি ৭০%-এরও বেশী। এমনকি বরিশাল সেলস অফিসে রাজস্ব আয় এখনো লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুন বলে জানা গেছে।
এসব ব্যাপারে বিমান-এর বরিশাল সেলস অফিসের জেলা ব্যাবস্থাপকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য না করে ‘ এখনো নতুন সময়সূচী তাদের কাছে পৌছেনি বলে জানিয়ে ফ্লাইট বৃদ্ধি সহ যাত্রী বান্ধব সময়সূচীতে ফেরার লক্ষ্যে কাজ চলছে’ বলেও জানান। পাশাপাশি ‘বরিশাল সেক্টরের সার্বিক পরিস্থিতি কতৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত’ করার কথাও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন