শিলং এর আদালত থেকে বেকসুর খালাস পেয়ে শিগগিরই দেশে ফিরে আসছেন সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ! কয়েকদিন থেকে এমন কথাই শুনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারী শিলং দায়রা জজ আদালতের বিচারক শ্রী আইসরমন রিমবইর আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদকে। এতে করে তিনি দেশে ফিরতে আইনী আর কোন বাধা থাকলনা।
এদিকে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা, শিলং এ মামলা থেকে সালাহউদ্দিন আহমদের খালাস পাওয়া সব মিলিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ দীর্গ নির্বাসন জীবনের সমাপ্তি টেনে
খুব শিঘ্রী দেশে ফিরে আসছেন এমন গুনজন শুনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ‘আত্মগোপন’ থাকা অবস্থায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী’ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ ৬২ দিন গুম থাকার পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরের গলফ কোর্স মাঠের পাশে অসুস্থ অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় তিনি পুলিশের হেল্প লাইনে ফোন করলে পুলিশ প্রথমে তাকে থানায় ও পরে মিমহামস নামের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করান।
১২ মে বাংলাদেশে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে সেখান থেকে সিভিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সপ্তাহখানেক রাখার পর তার অবস্থার অবনতি হলে শিলং-এর বিশেষায়িত হাসপাতাল নিগ্রিমসে ভর্তি করা হয় । সুস্থ হওয়ার পর জামিন পেলে শিলং শহরের বিষ্ণপুর সানরাইজ গেষ্ট হাউজে অবস্থান করে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
দীর্ঘ ৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর বেকসুর খালাস পান তিনি। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলেও কয়েকদফা সময় পিছিয়ে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আদালতের রায়ে অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় নির্দোষ হিসেবে রায় পান তিনি।
এ রায়ের ৫ মাস পর মেঘালয়ের সরকার পক্ষে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।
এ আপিলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর আইনী লড়াই শেষে আবারো খালাস পান তিনি। এবার দেশে ফিরতে আর কোন আইনী বাধা নেই।
সালাহউদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস হিসেবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমদ।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসন প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৩ বার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এসময় তিনি পেকুয়া উপজেলা
প্রতিষ্ঠা সহ কক্সবাজার জেলায় কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেন।
ওয়ান ইলাভেনের সময় তিনি কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী এডভোকেট হাসিনা আহমদ চকরিয়া-পেকুয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সালাহউদ্দিন আহমদ গুম হবার সময় বিএপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন এবং শিলং নির্বাসনে থাকা অবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
উল্ল্যেখ্য সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর এলাকায় এখনো জনপ্রিয় একজন নেতা। গুম হওয়ার পর দল মত নির্বিশেষে তাঁর জন্য দোয়া করেছিলেন এলাকার মানুষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন