বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বরগুনায় প্রভাবশালীদের কাছ থেকে নদী কিনে মাছ ধরতে হচ্ছে জেলেদের

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২৩, ৪:৩৪ পিএম

বরগুনার পায়রা নদীতে মাছ ধরতে লাখ লাখ টাকায় নদী কিনতে হচ্ছে জেলেদের। নদী কিনতে না পারায় অধিকাংশ জেলেই কর্মহীন জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

জেলেদের অভিযোগ, পায়রা নদীতে মাছ শিকার করার জন্য জেলেদের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে নয়, স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে এমনই সিন্ডিকেট। জেলেদের কাছ থেকে তারা নদী বিক্রির নামে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদী বিক্রির এই টাকার সিংহভাগই যাচ্ছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীর পকেটে। যে কারণে নদী না কিনে মাছ শিকারে গেলে কিংবা প্রতিবাদ করলে জেলেদের হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা।

স্থানীয় জেলেরা জানান, পায়রা নদীর ৫০০ হাত বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায়। আর ১ হাজার হাত নদী বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়।

বরগুনা সদরের বালিয়াতলী ইউনিয়নের জেলে আবদুল মান্নান বলেন, তালতলীর ছোট ভাইজোড়া গ্রামের ইদ্রিসের কাছ থেকে আমি ৬ লাখ টাকায় ১ হাজার ২০০ হাত পায়রা নদী কিনে সেখানে মাছ শিকার করছি। আমার মতো অনেকেই এভাবে নদী কিনে মাছ শিকার করছেন।

একই ইউনিয়নের আরেকজন জেলে মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, স্থানীয় পনু মল্লিক ও তার সহযোগীরা জেলেদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নদী বিক্রি করেন। নদী না কিনলে মাছ ধরতে দেন না তারা। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মামলার হুমকি দেন তারা।

জেলে নাসির খান বলেন, আমরা মাছ শিকার করে কয় টাকাই পাই? এর মধ্যে আবার লাখ লাখ টাকা দিয়ে নদী কিনতে হয়। নদী বিক্রির এই চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। প্রশাসনও নিরব ভূমিকায় রয়েছে।

এদিকে নদী বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। এ নিয়ে অভিযুক্তদের একজন পনু মল্লিক ইতিপূর্বে প্রকাশিত স্থানীয় সাংবাদিকদের সংবাদের প্রতিবাদও দিয়েছেন সংবাদপত্রে।

পনু মল্লিক বলেন, নদী বিক্রির কোনো প্রমাণ নেই৷ এসব কথা বললেও কেউ টাকা নেওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারবে না।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য উত্থাপন করব।

এ ব্যাপারে বরগুনার পুলিশ সুপার আবদুস ছালাম বলেন, এভাবে নদী বিক্রি করা বেআইনি। খোঁজ নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর জেলেরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ ধরতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন