‘এখন তুমি কেমন আছো, কোথায় আছো পত্র দিও। এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালি তালপাখাটা খুব নিশীথে কেমন আছে, পত্র দিও।’ কবি হেলাল হাফিজের কবিতার এ চরণই যেন নিয়ে যায় চিঠি বিনিময়ের যুগে। কিন্তু সেটি শুধু কল্পনাতেই শোভা পায় বর্তমানে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে হারিয়ে গেছে হাতে লেখা চিঠির ব্যবহার। এখন আর ডাকপিয়ন এসে কড়া নাড়ে না বাড়ির ফটকে, বলে না আপনার একটা চিঠি এসেছে! ডাকঘরগুলো আজ চিঠিশূন্য। কাগজ কলমের ছোঁয়ায় আর লেখা হয় না কোনো পত্র। সবার হাতে আজ মোবাইল ফোন। দুয়েক ক্লিকেই পাঠানো যায় মনে ভেসে ওঠা সমস্ত আবেগ। কিন্তু আদৌ কি তাতে প্রকৃত আবেগ থাকে! একটু কাটাকাটি আর আঁকাবাকা অক্ষরে লেখা চিঠিতে যে অনুভূতির ছাপ থাকে, আজকের উন্নত প্রযুক্তিতে সে অনুভূতির ঠাঁই নেই বললেই চলে। জীবনের তাগিদে বাড়ি থেকে দূরে থাকা ছেলেটা আজ তার বাবা-মা’র লেখা চিঠির অপেক্ষায় থাকে না। ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙ্গা ভাঙ্গা হতে, লণ্ঠন জ্বালাইয়া নিভাইয়া চমকে চমকে রাতে।’ মনির খানের এ গানের মতো গভীর আগেও আর দেখা যায় না এখন। ডাকঘরের সেই ব্যস্ততাও আর নেই। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় যেন ঝিমিয়ে পড়েছে ডাকঘর। কিন্তু মানুষ চায় সুপ্ত আবেগের সাক্ষী হতে, পেতে চায় নিত্য ভালোবাসা। সেই আবেগ, ভালোবাসা আবার ফিরে আসুক। ফিরে আসুক সেই চিঠি লেখার প্রেরণা।
মো. আবির হাসান
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন