আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে লিস্টেড এবং নন-লিস্টেড কোম্পানির মধ্যে বিদ্যমান কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি নন-লিস্টেড কোম্পানীর কর্পোরেট করের হার ২.৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।একইসাথে সংগঠনটি ব্যক্তিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁও রাজস্ব ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভাপতিত্ব করেন।
ঢাকা চেম্বাররের পক্ষ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এনবিআরের কাছে আয়কর, মূসক ও শুল্ক সংক্রান্ত মোট ৩০টি প্রস্তাব পেশ করা হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সাত্তার বলেন, লিস্টেড এবং নন-লিস্টেড কোম্পানীর মধ্যকার কর হারের ব্যবধান বেশি। এটা কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানীর কর্পোরেট করের হার আরও ২.৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতির ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যক্তিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ করার প্রয়োজন। সামীর সাত্তার বলেন, বর্তমানে ৩০ লাখ টিআইএনধারী আয়কর রিটার্ন দাখিল করে, যার কারণে আমাদের কর-জিডিপির হার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এমন বাস্তবতায় আগামী ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা কমপক্ষে ১ থেকে ২ কোটিতে উন্নীত করতে এনবিআরকে একটি দীর্ঘময়োদী পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়া কর ও মুসক প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলি সহজে সমাধানের লক্ষ্যে ‘ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স এ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইটিএএস)’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট এ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস)’ প্রবর্তনের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এইচএস কোড ব্যবহারে ভুল কমানোর লক্ষ্যে এনবিআরের পক্ষ হতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা চাইলে এনবিআর থেকে এ্যাডভান্স রুলিং নিতে পারেন। এইচএস কোড ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালন প্রক্রিয়া সহজ করতে নাানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তবে কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে এনবিআর সর্বদা কঠোর অবস্থানে থাকবে। ব্যবসায়িক কর্মকান্ড সহজ করতে তিনি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’-এর কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ভ্যাটের আওতা বর্হিভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারে ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা হতে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারনের প্রস্তাব করা হয়। কাস্টমস সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’-এর অতি দ্রুত বাস্তবায়নের জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন