মুসলমানদের ঈমান, আকিদা ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পাঠ্যপুস্তক সংশোধন অতিব জরুরি। পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের অসংগতি বিষয়টি এখন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিমাবদ্ধ নেই বরং এটি জাতীয় ইস্যুতে রূপ নিয়েছে। ইসলামের স্বার্থে দল মত সিলসিলা নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গত শনিবার শ্যামলী ক্লাব মাঠে ঐতিহ্যবাহী কামাল্লা দরবার শরীফের উদ্যোগে আয়োজিত বার্ষিক ইসালে সওয়াব মাহফিল ও সূফী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজী তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন, দল ও ইসলামি স্কলার, চিন্তাবিদগণের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দুটি বই বাতিল ঘোষণা করায় তাকে সশ্রদ্ধ মোবারকবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও বেশকয়েকটি পুস্তকে ইসলামি মূল্যবোধ, ইতিহাস ঐতিহ্য ও শরিয়াহ্ পরিপন্থি বিষয় সন্নিবেশিত রয়েছে, যা সংশোধন করা ঈমানী দায়িত্ব। তিনি সকল দরবার, খানকা’র পীর সাহেবান, খলিফা, মুতাওয়াল্লিগণের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাজহাব ও দরবারভেদে নিজেদের মাঝে যেসকল মতানৈক্য রয়েছে, তা ভুলে দ্বীনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি। ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না কারা হলে দেশে অন্যায়, অবিচার, স্বজনপ্রিতি, সুদ, ঘুস, হত্যা, গুম, ছিনতাই, ধর্ষণসহ সকল ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। একটা সময় দেশ থেকে ইসলামি সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যা আমাদের কাম্য নয়। তাই সময় থাকতে সকলে ঐক্যবধ্যভাবে ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।
জমিয়াত মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ। মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে অসংখ্য অবদান তার রয়েছে, এছাড়াও তিনি সারা দেশে মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজের ধর্মভীরুতার প্রমাণ রেখে সকলের মনে স্থান পেয়েছেন। তার এ সুনাম-সুখ্যতি বিনষ্টের জন্য নেপথ্যে কোনো কুচক্রি মহল এহেন কর্মকাণ্ড সংগঠিত করছে। আমি আশা করছি, তিনি তার সুদক্ষ মেধা ও দূরদর্শিতাকে কাজে লাগিয়ে, দেশ জাতীর শৃঙ্খলা উন্নয়ন ও কল্যাণে, সর্বপরি ইসলামের খেদমতে আত্মনিয়োগ করবেন। একইসাথে ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে পরবর্তী প্রজন্মকে নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন একটি বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। মদিনার জামাত কামাল্লা দরবার শরীফের প্রধান খলিফা ও মাহমুদা খাতুন মহিলা কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতী বদিউল আলম সরকারের পরিচালনায় আয়োজিত বার্ষিক ইসালে সওয়াব মাহফিল ও সূফী সম্মেলনে পীর সাহেব শাহ্ সূফী মো. হাবিবুর রহমান খন্দকার বলেন, ইসলাম ও সুন্নিয়তের খেদমতে কামাল্লা দরবার যুগযুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। এ দরবারে মূল উদ্দেশ্য পথহারা মানুষদের সঠিক পথের অনুসন্ধান দেয়া। সত্যিকারের আল্লাহওয়ারা ও রাসূল (স.) প্রেমী মানুষ তৈরি করে ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বত্র দ্বীনের আলো ছড়িয়ে দেয়া। এসময় কামাল্লা দরবার শরীফের মুরিদান, ভক্ত ও আশেকানে শ্যামলী ক্লাব মাঠ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। আয়োজিত মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মো. আহসান উল্লাহ, মাওলানা ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, মাওলানা শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা মুফতী মো. মিজানুর রহমান, ড. সাইয়্যেদ মো. এমদাদ উদ্দীন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন