স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের ডিএনসিসি ভবনে অগ্নিকাÐের পর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সব মার্কেটে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ বিষয়ে নগর ভবন থেকেও একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএসসিসি’র মুক্তাঙ্গন পার্কে আধুনিক পাবলিক টয়লেট উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, ১০০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য আমাদের প্রকল্প রয়েছে। নিজস্ব প্রকল্প ও বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় এ টয়লেটগুলো নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের একটি মার্কেটে অগ্নিকাÐে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই ঘটনা মাথায় রেখেই আমাদের দক্ষিণ সিটির সব মার্কেটে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছি।
তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাÐের পাশাপাশি সতর্কতার জন্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হবে। অগ্নিনির্বাপক যে যন্ত্র রয়েছে আমরা সেগুলো স্থাপন বাধ্যতামূলক করার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি।
এসময় মেয়র রাজধানীর গুলিস্তানের প্রধান সড়ক ও এর ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা শিগগিরই হকারমুক্ত করার আবারও ঘোষণা দিয়ে বলেন, রাজধানীতে নতুন করে হলিডে মার্কেট চালুর চিন্তা করছে সরকার। হকাররা সপ্তাহে বন্ধের দিন হিসেবে শুক্র ও শনিবার মার্কেটগুলো অস্থায়ীভাবে জনসাধারণের জন্য খোলা রাখবে। কাপড়, প্রসাধনী, জুতা, গৃহস্থালি ও নিত্যব্যবহার্য সকল প্রকারের জিনিস অস্থায়ী এসব বাজার থেকে সুলভ মূল্যে ক্রেতারা কিনতে পারবেন। হকারদের কোনো বক্তব্য থাকলে হকার নেতৃবৃন্দ আমার সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন। গুলিস্তানের রাস্তায় ও ফুটপাতে কোনো ধরনের হকার বসতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, গুলিস্তানের হকারদের তালিকা করা হয়েছে। তারা যাতে পথে না বসে তার জন্য তাদের পুনর্বাসন করা হবে। যেখানে তাদের পুনর্বাসন করা হবে সেখানে বসতে হলে তাদের একটি টোকেন নিতে হবে। টোকেন নেয়ার আগে সিটি কর্পোরেশনকে তারা রাজস্ব পরিশোধ করবে।
প্রথমে গুলিস্তান থেকে হকার উচ্ছেদ করা হবে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ফুটপাতকে হকার মুক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসির যেসব মার্কেটে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই, সেগুলোতে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সব ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাÐ প্রতিহত করতে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা মুক্তাঙ্গন পার্কটি দখল করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দখলমুক্ত করা হবে।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এ পাবলিক টয়লেট স্থাপন করে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় এবং এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে স্থাপিত নতুন টয়লেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিরি ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তবা জামান পপি, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলী, ওয়াটার এইউ বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অ্যান্ড প্লানিং অ্যাডভোকেসি লিয়াকত আলমসহ ডিসিসির কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে জানা যায়, মুক্তাঙ্গন ছাড়াও ওসমানী উদ্যানসহ ডিএএসসিতে কয়েকটি আধুনিক টয়লেট চালু করা হয়েছে। এসব পাবলিক টয়লেটে রয়েছে নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক কক্ষ, লকার, হাত ধোয়ার জায়গা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সিসি ক্যামেরাসহ পেশাদার পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং নারী কেয়ারটেকার নিয়োজিত থাকছে। টয়েলেটের জন্য ৫ টাকা, গোসল ১০ টাকা, খাওয়ার পানি প্রতি গøাস ১ টাকা, লকার সুবিধার জন্য ৫ টাকা চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য টয়লেটের আশপাশের এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
নগর স্বাস্থ্য রক্ষায় যথাযথভাবে পাবলিক টয়লেট ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিএসসিসি, ঢাকা ওয়াসা এবং ওয়াটার এইড বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির ধারাবাহিকতায় এ টয়লেটগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ডিএসসিসির উদ্যোগে এবং এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সানরাইজ প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাবলিক টয়লেট সংস্কার করেছে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন