ইনকিলাব ডেস্ক : ৫০ অনুচ্ছেদকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের লেবার পার্টির সামনের সারির উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন নেতার পদত্যাগের পর একটি খোলা চিঠিতে দুই হাজার সদস্যের স্বাক্ষর দলের নেতৃত্বের জন্য আরো সঙ্কট ডেকে আনছে। এই পটভূমিতে জেরেমি করবিন লেবার দলের তৃণমূল সমর্থকদের দিক থেকে ব্যাপক বিদ্রোহের মুখোমুখি হচ্ছেন। অথচ এই তৃণমূলের সদস্যরাই ব্রেক্সিট নিয়ে বিভাজন যখন দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছিল, তখন দলের কঠিন সঙ্কটের সময় তারাই নেতা হিসেবে করবিনকে সমর্থন যুগিয়েছিল। তাদের ব্যাপক সমর্থনেই জেরেমি করবিন লেবার পার্টির নেতা হয়েছিলেন।
জেরেমি করবিন ৫০ অনুচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করার প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র পরিকল্পনা সমর্থন করায় দলের তৃনমূল নেতারা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তেরেসার প্রতি করবিনের সমর্থনের কারণে লেবার দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার ছায়া মন্ত্রীসভা থেকে ওয়েলস বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী জো স্টিভেন্স প্রথম পদত্যাগ করেন। এখন করবিনের সামনের সারির আরো অনেক সদস্য পদত্যাগের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন। এই অবস্থায় দলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বিদ্রোহ দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে।
শনিবার রাতে লেবার পার্টি প্রধানের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ খোলা চিঠি পাঠানো হয়, যা ফেসবুকেও ছড়িয়ে দেয়া হয়। এই চিঠিতে সারা দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার প্রায় দুই হাজার সদস্য স্বাক্ষর করেন। তাদের প্রায় অর্ধেকই নেতা নির্বাচনে জেরেমি করবিনকে ভোট দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
দলের ভেতরে ‘লেবার এগেইনস্ট ব্রেক্সিট’ নামের একটি গ্রুপ এই খোলা চিঠির উদ্যোক্তা। চিঠিতে তারা সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা এবং শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ক্ষুণœ করবে এমন নীতিকে সমর্থন করার জন্য করবিনকে অভিযুক্ত করেন।
উদ্যোক্তাদের অন্যতম নর্থ টাইনেসাইড নির্বাচনী এলাকার লেবার পার্টির নেতা জোনাথন প্রক্টর। তিনি বলেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য করবিনের বিরুদ্ধে গোলযোগ উস্কে দেয়া নয়, বরং এই উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে লেবার পার্টির নীতি ও আদর্শকে সমুন্নত রাখা। জোনাথন প্রক্টর বলেন, শুক্রবার এই উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে এর প্রতি সদস্যরা ব্যাপক সমর্থন ব্যক্ত করছেন।
তৃণমূলের এই খোলা চিঠিকে তার নিজস্ব নির্বাচনী ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলছে বলে অনেকে মনে করছেন। তাদের মতে করবিনের প্রতি তৃণমূলের নেতারা চরম ক্ষুব্ধ এই খোলা চিঠি তারই প্রথম বহিঃপ্রকাশ। তবে দলে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়লেও তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই এখনও এটা বিশ্বাস করেন যে করবিন লেবার পার্টিকে অধিকতর গণতান্ত্রিক একটি পার্টি হিসেবে গড়ে তুলবেন যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ সমর্থন করাসহ লেবার পার্টির সত্যিকারের মূল্যবোধ ও আদর্শ আরো সমুজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সূত্র : মাল্টা টুডে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন