সাধারণত মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়ে কোন স্ত্রীর ডিম্বানু স্বামীর শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত হলে একটি ভ্রƒণ বা জীবনের সৃষ্টি হয়। এই ভ্রƒণের কিছু কোষ বিভাজিত হয়ে গর্ভফুল বা পাসেন্টা এবং গর্ভথলি বা স্যাক তৈরি করে। গর্ভফুল এক ধরনের হরমোন তৈরি করে। প্রস্রাবে বা রক্তে উক্ত হরমোনের উপস্থিতির মাধ্যমে জানা যায় একজন মহিলা গর্ভধারণ করেছেন কিনা। এ অবস্থায় যদি ভ্রƒণটি আর অগ্রসর না হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায় তবে এ ধরনের গর্ভধারনকে ভ্রƒণহীন গর্ভধারণ বা বাইটেড ওভাম বলা হয়।
কি কারণে বাইটেড ওভাম হয়ে থাকে?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভ্রƒণের জেনেটিক বা ডিএনএ ঘটিত ত্রুটির কারণে এরকম ঘটনা ঘটে থাকে। স্বামী বা স্ত্রী কাউকে এজন্য দায়ী করা ঠিক নয়।
কীভাবে বাইটেড ওভাম নির্ণয় করা যায়?
বাইটেড ওভাম গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই ঘটে থাকে যখন অনেক মহিলাই জানতে পারেননা যে তিনি গর্ভবতী। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, তলপেটে সামান্য ব্যথাসহ অল্প রক্তক্ষরণ ইত্যাদি লক্ষ থাকে। আলট্রাসনোর মাধ্যমে জরায়ুতে শুধু গর্ভথলি বা স্যাক দেখা যায় কিন্তু হৃদস্পন্দনসহ ফিটাল পোল বা পরিণত ভ্রƒণ দেখতে পাওয়া যায় না।
বাইটেড ওভাম হলে কি করণীয়?
বাইটেড ওভাম হলে প্রাকৃতিক নিয়মেই তা জরায়ু থেকে বের হয়ে আসে। তাছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হলে চিকিৎসক মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়েও জরায়ু থেকে সবকিছু বের করার ব্যবস্থা করতে পারেন। শতকরা প্রায় পাঁচ ভাগ ক্ষেত্রে ডি এন্ড সি’র প্রয়োজন হতে পারে।
শেষ কথা
প্রথম তিন মাসে যে পরিমাণ গর্ভ নষ্ট হয় তার অর্ধেক হয় এই বাইটেড ওভামের কারণে। পূর্বে বাইটেড ওভাম হয়েছে এমন মহিলারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। তবে বার বার বাইটেড ওভামের ঘটনা ঘটলে স্বামী-স্ত্রীর দরকারী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই কেবল সন্তান ধারণের চেষ্টা করা উচিত।
ষ ডা. রেজাউল করিম কাজল
সহযোগী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
মোবাইল : ০১৯৭৯০০০০১১
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন