বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

পরোক্ষ ধূমপান

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অনেকের ধারণা প্রত্যক্ষ ধূমপান ক্ষতিকর। পরোক্ষ ধূমপান তেমন ক্ষতি করে না। আসলে এ ধারণা সত্য নয়। প্রত্যক্ষ ধূমপানের মত পরোক্ষ ধূমপানও ক্ষতিকর। এ বিষয়টি সবাইকে বুঝতে হবে।
ধূমপান একটি মারাত্মক বদভ্যাস। এর কোন উপকারিতা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। ধূমপানের ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোক হয়। হয় ক্যান্সার। ধূমপানের ফলে ফুসফুস, মুখ গহ্বর, খাদ্যনালী, শ্বাসনালী, কিডনি, অন্ত্র, স্তন, জরায়ু, প্রভৃতি স্থানে ক্যান্সার হয়। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গেই ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া ধূমপানের কারণে পায়ের পচন, কম ওজনের বাচ্চা প্রসব, অসুস্থ বাচ্চা জন্ম নেয়া, প্রজনন সমস্যাসহ আরো বিভিন্ন সমস্যা হয়।
অনেকেই গণপরিবহনে ধূমপান করেন। কেউ কেউ অফিস আদালত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধূমপান করেন। এতে শুধু যে ধূমপায়ীর ক্ষতি হয় তা নয়। পাশের মানুষেরও ক্ষতি হয়, কষ্ট হয়। একথা ধূমপায়ী বুঝলেও ধূমপান বন্ধ করেন না। অনেক সময় ধূমপান বন্ধের জন্য বললে বিরক্ত হয়। কিছু ক্ষেত্রে গালাগালি বা হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। কিন্তু বন্ধ হয় না ধূমপান।
প্রত্যেক্ষ ধূমপানে যেমন সমস্যা হয় তেমনিভাবে পরোক্ষ ধূমপানের ফলেও ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, স্ট্রোক, প্রজনন সমস্যা হতে পারে। অর্থাৎ একজনের কুকর্মের ফল আরেক জনকে বহন করতে হয়। অনেক সময় হাসপাতালে মহিলাদের ফুসফুসের ক্যান্সার পাওয়া যায়। মহিলাদের ফুসফুসের ক্যান্সার তেমন হয় না। সেক্ষেত্রে ভালোভাবে ইতিহাস নিলে দেখা যায় স্বামী ধূমপায়ী। মহিলাও যখন বুঝতে পারেন তার স্বামীর কারণেই এমনটি হয়েছে তখন অভিশাপ দিতে দিতে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান।
পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বেশি হয় নারী ও শিশু। আজকাল রাস্তা ঘাটে বাবা সিগারেট খাচ্ছে আর পাশে তার অবুঝ সন্তান এ দৃশ্য মোটেও বিরল নয়। বাচ্চার যে কত বড় ক্ষতি হচ্ছে সেটা পিতা হয়েও ঝুঝছেন না। যখন বুঝতে পারছে তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। ঘরের ভেতর অনেকে ধূমপান করেন। স্ত্রীরা হয়তো বা ভয়ে কিছু বলতে পারে না। কিছু ক্ষেত্রে বললেও কাজ হয় না। ঝগড়াঝাটি হয়। হয় মান অভিমান। ধূমপান যারা করেন তাদের এ বিষয়টি দেখা দরকার। নিজের কারণে অন্যের ক্ষতি করা কখনো ঠিক নয়। গণপরিবহণ, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজারে কখনো ধূমপান করা উচিত নয়। এ বিষয়ে কঠোর আইন করা দরকার। শুধু আইন করাই যথেষ্ট নয়। বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেদিকেও দেখতে হবে। জনসচেতনতা দরকার এ বিষয়ে। সবার নিজের অবস্থান থেকে চেষ্টা করা দরকার।
জীবন অনেক সুন্দর। ধূমপান করে এই সুন্দর জীবনে নষ্ট করা মোটেও ঠিক নয়। ধূমপান শুধু কষ্টই ডেকে আনে। একার কষ্ট না। সবার কষ্ট। এদিকে সকলের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন