শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

ওজন কমানোর সহজ উপায়

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ওজন বেড়ে গেছে। আড়ালে অবডালে শুনতে হচ্ছে- তুমি বেশ মুটিয়ে গেছ। বন্ধু-বান্ধুবীরা যখন-তখন খোঁচা মারে। চরম বিরক্ত আপনি এ অবস্থার অবসান চান। তবে পথটা জানা নেই। একদল আছেন ব্যায়াম করেন ঠিকই। তবে খাবার নিয়ন্ত্রণের ধারে-কাছেও যান না। এক বসার এক কেজি গরুর মাংস খেয়ে ফেলেন। আরেক দল আছেন কম খান। তবে ব্যায়াম করতে তাদের প্রচন্ড অনীহা। শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজই করতে চান না। দু’দলই সঠিক পথে নেই। তাহলে কিভাবে ওজন কমাবেন? জেনে নিন সে রকম কিছু উপায়। প্রতিদিন ৪০ মিনিট হাঁটুন। সকালে হাঁটতে পারলে ভালো। অ্যালকোহল জাতীয় সকল পানীয় পরিহার করুন। খাদ্য তালিকা থেকে ক্যালরি কমানোর চেষ্টা করুন। একটু একটু করে ক্যালরি কমান। ওটস, ডিম, আপেল, কাঁচামরিচ, রসুন, মধু, গ্রিন টি, টমেটো খাদ্য তালিকায় রাখুন। রসুনে আছে অ্যালসিন, যা শরীরের চর্বি কমায়। কোলেস্টেরল প্রতিরোধ করে। মধু যদি খাঁটি হয়, তাহলে তা ওজন কমাতে সহায়ক। আপেলে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া কমিয়ে দিন। মাংস থেকে চর্বিকে পৃথক করে খেতে পারেন। সপ্তাহে মাত্র একবার। রান্নায় আগেই চর্বি পৃথক করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ মগ পানি খান। শীতকালেও কম পানি খাবেন না। কুসুম গরম পানি হলেও খান। ফলমূল খেতে কোনোই বাধা নেই। মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। রাতের খাবার খেয়েই ঘুম নয়। কমপক্ষে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এ সময় গল্পের বই পড়তে পারেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প করতে পারেন। ছাদে পায়চারি করলেও ক্ষতি নেই। লম্বা অনুযায়ী আপনার ওজন কতটুকু থাকা দরকার। সেটা জেনে নিন। যুদ্ধটা হবে অতিরিক্ত ওজন কমানোর। অতিরিক্ত ওজন অসুখ-বিসুখ বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজনের কারণে হৃদরোগ, জরায়ু, প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ৫ ভাগ বেশি। আমিষযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। যা শরীরের চর্বি কমাবে। কার্বোহাইড্রেডযুক্ত খাবার (যেমন ভাত) কম খেতে হবে। দুপুরের খাবারটা একটু ভালো হলে দোষ নেই। তবে রাতের খাবার মোটেও ভারি হতে পারবে না। এক বাটি সবজি, ২টা রুটি, যে কোনো একটি ফল, এক মগ দুধ হতে পারে রাতের আদর্শ খাবার। সকালে নাস্তা না খেলে ওজন কমবে। এই ধারণা একদমই সঠিক নয়। সকালের নাস্তায় ১টি ডিম রাখুন। ডিমে আছে প্রচুর প্রোটিন। সকালে এক মগ পানিতে লেবুর রস, মধু দিয়ে খেতে পারেন। আঁশ জাতীয় খাবার বেছে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে দূর হবে। কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমি শাক, পুদিনা পাতা, ডাটা শাক, লাউ শাক, কলার মোচা, ঢেড়শ, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সজনে, গাজর, সিম, কচু, বরবটি আঁশজাতীয় খাদ্য। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বলেছেন, আঁশ জাতীয় খাবার মানুষের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের ঝুঁকি, অকালমৃত্যুর আশঙ্কা কমায়। চোখের ক্ষুধা নয়। যখনই প্রকৃত ক্ষুধা লাগবে। ঠিক তখনই খেতে হবে। পেট ভরে কিংবা গলা অবধি খাওয়া চলবে না। খাবার যতই সুস্বাদু হোক না কেন। চিনি, ক্যাফেইন, আইসক্রিম খাওয়া বন্ধ করে দিন। যতদিন না স্বাভাবিক ওজনে আসেন।
টিভি দেখতে দেখতে খাওয়া পরিহার করতে হবে। যারা টিভি দেখতে দেখতে খায় তারা অন্যদের চেয়ে ২৮৮ ক্যালরি বেশি খায়। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করা হয়েছে। বিন্দুমাত্র নিশ্চয়তা নেই। তাই বাইরের খাবার পরিহার করুন। ঘরের তৈরি খাবারকে প্রাধান্য দিন। সপ্তাহে অন্তত ২ বার সামুদ্রিক মাছ খান। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা ৩ আছে। বাংলাদেশে টুনা ফিসসহ অনান্য সামুদ্রিক মাছ সহজলভ্য। দাম খুব কম। ওমেগা ৩ হৃৎপিÐ এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী। রুটি খেতে হলে লাল আটার রুটি খান। চালের বেলায় বাদামি চালকে প্রাধান্য দেন। এই খাবারগুলো ধীরে ধীরে হজম হয়। পেট ভর্তি থাকে অনেক সময়। ব্যায়াম, পরিমিত খাবার গ্রহণ, লোভ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকলে বাড়তি ওজন কমানো শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ফ্রী ল্যান্স সাংবাদিক
মিরপুর, ঢাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন