এ মাসেই দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন তারানা হালিম
স্টাফ রিপোর্টার : ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, ইন্টারনেট সেবাকে আরো সহজলভ্য করতে বাংলাদেশে এ মাস থেকেই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মাসেই ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে বলেন তারানা হালিম। গতকাল বুধবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটা মাইটভাঙ্গা এলাকায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশন পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলে রবিশাল, খুলনা, ফরিদপুর, পটুয়াখালীসহ এ অঞ্চলে আরো স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দেয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনের ট্রান্সমিশন লিংক সম্পূর্ণ হয়েছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষা করে এ সংযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। নতুন সাবমেরিন ক্যাবল বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করলে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ কি করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ আমরা রফতানির উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ভুটান, নেপাল, ভারতের সেভেন সিস্টারসহ মালয়শিয়া, মায়ানমারে রফতানির চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেসিস) ট্রান্সমিশন লিংকের কাজ শেষ করেছে। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইডথ এর নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে এবং এর ফলে ইন্টারনেটের দাম আরো কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। নতুন এ সাবমেরিন ক্যাবলের মেয়াদকাল ২০ থেকে ২৫ বছর হবে বলেও উল্লেখ করেন মনোয়ার। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত এক হাজার ৫০০ গিগাবাইটের (জিবি) বেশি ব্যান্ডউইডথ পাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
একটি কনসোর্টিয়ামের আওতায় সি-মি-ইউ-৫ সাবমেরিন ক্যাবলে দক্ষিণ-এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের ১৭ দেশ সংযুক্ত হচ্ছে। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কনসোর্টিয়ামের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হতে মোট ৬৬০ কোটি টাকা প্রকল্পের খরচ ধরা হলেও ৬০০ কোটি টাকার মধ্যেই এ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে বলেও জানান মনোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও দেশের অভ্যন্তরে ক্যাবল স্থাপনের কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে তা হবে বলে জানিয়েছিল বিএসসিসিএল। এর আগে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন ক্যাবল ‘সি-মি-ইউ-৪’ এ যুক্ত হয়। যার মাধ্যমে প্রায় ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ পাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। সি-মি-ইউ-৪ ছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে ছয়টি বিকল্প সাবমেরিন ক্যাবল (আইটিসি বা ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেবল) সংযুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ জিবিপিএসের বেশি। এই ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিএসসিসিএলের মাধ্যমে আসে। বাকি ২৮০ জিবিপিএস আইটিসির ব্যান্ডউইথ, যা ভারত থেকে আমদানি করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন