বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে নৌকা-ধানের শীষের ভোট যুদ্ধে সাড়া দেননি সাধারণ ভোটাররা। সোমবারের এই নির্বাচনে নজিরবিহীন কম ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্যকরা গেছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত প্রায় ৮টি কেন্দ্র ঘুরে ভোটারের কোথাও কোন লাইন দেখা যায়নি। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে তখন পর্যন্ত একশ এর নিচে ভোট পড়েছে। এই উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী নৌকা প্রতীকে এবং উপজেলা বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম রাসেল ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিকেল চারটা পর্যন্ত বড়াইগ্রাম ডিগ্রী কলেজ, বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীরামপুর, চামটা, দিঘইর, তিরাইল উচ্চ বিদ্যালয়, মৌখাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও মহিষভাঙ্গাসহ প্রায় ৩০টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কোন কেন্দ্রেই ভোটারের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। এসব কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের দাঁড়িয়ে বসে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। মাঝে মাঝে দু-একজন ভোটারকে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখা গেছে। অন্যান্য কেন্দ্রে খোঁজ নিয়েও একই রকম খবর পাওয়া গেছে। বিকাল চারটা পর্যন্ত শ্রীরামপুর কেন্দ্রে ৩০ভাগ এবং মহিষভাঙ্গা কেন্দ্রে সবচাইতে বেশি ৪০ভাগ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে এসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইর্ডি অফিসাররা। উপজেলার ২ লাখ ৭ হাজার ৩৭৬ জন ভোটার ৮১টি ভোট কেন্দ্রে ৫৪৪ টি বুথে সারা দিন যে ভোট প্রদান করেছেন তা কোন ভাবেই ৩৫ থেকে ৪০ ভাগের বেশি হবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। চামটা ও ভিটাকাজিপুরসহ কয়েকটি কেন্দ্রে বিএনপির ভোটারদের প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি শাহরিয়ার খান জানান, প্রত্যেক কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোবাইল ফোর্স ও চেকপোষ্ট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি ২ প্লাটুন বিজিবি ৪টি টিমে এবং র্যাবের ৬টি টিম নিয়োজিত রয়েছে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটসহ ১২ জন ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
মুল দুইদল নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরও ভোটার উপস্থিতি এত কম কেন জানতে চাইলে সাধারন ভোটাররা বলেছেন, উভয় দলের গ্রুপিং ও দলীয় কোন্দলের কারনে দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মীরাই ভোট দিতে আসে নাই। আর উপ নির্বাচন হওয়ায় সাধারন ভোটারদের কাছে এটা তেমন গুরুত্বও পায়নি। ফলে ভোটার উপস্থিতি এত কম হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের ২৭ডিসেম্বর বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ একরামুল আলম মারা গেলে এই পদটি শূন্য হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন