বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

খুলনায় আ’লীগ প্রার্থীর প্রচারণায় বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য

প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন খুলনা জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জিএম কামরুজ্জামান টুকু। তিনি এবারের ইউপি নির্বাচনে জেলা বিএনপি’র মনোনয়ন বোর্ডের অন্যতম সদস্যসহ সমন্বয়কের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর হাতে-হাত রেখে মহড়া সহকারে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি এখন টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়ন ছাড়িয়ে রূপসা এলাকার রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের স্মার্টফোনে। দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সৈয়দ নিয়ামত আলীকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার এঘটনাটি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে ও ভিডিও ফুটেজ দেখে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেবার শেষদিনে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রূপসা উপজেলার টিএসবি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর শেখ মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় মহড়া সহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় চত্বরে আসেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর মহড়া দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার পথে সার্বক্ষণিক তার বাম পাশে ছিলেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জিএম কামরুজ্জামান টুকু। মাঝে-মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর শেখের হাত উচিয়ে জনগণকে অভিবাদন জানাতে সহায়তা করেন জেলা বিএনপি’র প্রার্থী মনোনয়ন বোর্ডের এই সদস্য। এসময় তার সাথে মহড়ায় এসে যোগ হয়েছিলেন ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ নিয়ামত আলীও। তার পাশেই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ মাহাবুবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, রূপসার টিএসবি ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হলেন জেলা বিএনপি’র মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক বিকাশ কুমার মিত্র। তিনি যোগ্য প্রার্থী হওয়ায় এই ইউনিয়নে বিএনপির আর কোন নেতা প্রার্থীতা দাবি করেননি। সেই যোগ্য ও দল মনোনীত প্রার্থী বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় নেমেছে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক। শুধু তাই নয়, তিনি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাথে তার মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া দলের জন্য চরম অপমানজনক বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এটি মনোবল ভঙ্গ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থা ভঙ্গের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চান না জেলা বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক ও দল মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিকাশ কুমার মিত্র।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, ‘আমার মনোনয়নপত্র তো সেই (কামরুজ্জামান টুকু) জমা দিয়েছেন। খাজাডাঙ্গা গ্রামের মানুষ একতাবদ্ধ। দল-মত নির্বিশেষে আমরা ঐক্যবদ্ধ। মনোনয়নপত্র জমা দেবার দিন ইউনিয়ন বিএনপির প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিও আমার সাথে ছিলেন। এ গ্রামের মানুষ এটাই ঐক্যবদ্ধ যে, আমাদের গ্রামে কেউ মেম্বারিতে দাঁড়ায়নি; তাদের কথা চেয়ারম্যান আমাদের চাই, চাই।’
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জিএম কামরুজ্জামান টুকু শনিবার রাত ৭টা ৩৯মিনিটে সেলফোনে বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। আমি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাইনি। আমি আমার দলীয় মনোনীত প্রার্থীর সাথে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন