রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘরে দর্শনার্থী বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মালেক মল্লিক : সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘরে দর্শনার্থী বাড়ছে। প্রতিদিন আদালত প্রাঙ্গণে আসা বিচার প্রার্থী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নানা পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গগণ ঘুরে দেখছেন দেশের একমাত্র আদালত জাদুঘর। এদিকে দর্শনার্থী বাড়লে জাদুঘরের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তেমন বাড়েনি। গত এক বছরে সংগ্রহ করা হয় মাত্র ২টি ছবি। দর্শনার্থীদের মতে বাংলাদেশে একমাত্র আদালত জাদুঘর এর জন্য বিচার বিভাগীয় নানা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আসবাব পত্র সংগ্রহ করলে দর্শনার্থী আরো বাড়বে। বিচার বিভাগ সম্পর্কে নতুন ধারণা সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারজানা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর শুরু পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছি। জাদুঘরে সংগ্রহে রাখার জন্য এরইমধ্যে একটি তালিকা তৈরি করেছি। যেগুলো পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করে রাখা হবে।
জাদুঘর সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বিচার বিভাগের ভ‚মিকা এবং ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দিতে আদালত জাদুঘর হিসেবে ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘর উদ্বোধন কনের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন। উদ্বোধনের বিচার বিভাগ সম্পর্কিত ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান, গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্যাদি ও সামগ্রী কারও কাছে থাকলে তা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলা হয় চিঠিতে। কিন্তু শুরুর পর থেকে তেমন কোনো কিছুই এখানে নতুন করে সংযোজন করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট এবং বিচার সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে নতুন উদ্যোগ নিলেও জাদুঘরের জন্য তেমন কোনো কিছুই চোখে পড়েনি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে বাংলাদেশে একমাত্র আদালত জাদুঘর এর জন্য আরো নতুন নতুন নানা বিচার বিভাগীয় সংগ্রহ করলে দর্শনার্থী আরো বাড়বে। গত একবছরে সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘরে সাবেক প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন ও মহাত্মা গান্ধির ছবি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংরক্ষিত একটি বই এবং পূর্ব পাকিস্তান আমলের বাংলা টাইপ মেশিন, ইংরেজি টাইপ মেশিন ও পুরাতন গেস্টেটনার মেশিন ছাড়া বিচার সংশ্লিষ্ট আর কিছুই সংযোজিত হয়নি। প্রতিদিন ২০-৩৫ জন জাদুঘর প্রদর্শন করতে আসেন। আর এদের মধ্যে বেশির ভাগই আবার সুপ্রিম কোর্টের স্টাফ। এর বাইরে কোর্টে আসা বিচারপ্রার্থীরাও ছাড়া বিশিষ্টবক্তিবর্গগণ এখানে আসেন প্রদর্শন করতে আসেন। সম্প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি টিম এ জাদুঘর প্রদর্শন করেছেন বলে জানা যায়। জাদুঘর সূত্রে জানা যায়, জাদুঘরে পূর্ব পাকিস্তান সময়ের প্রধান বিচারপতির ব্যবহƒত ব্যান্ড, গাউন ও উইগ, হাইকোর্টে ব্যবহƒত দেয়াল ঘড়ি, চেয়ার, বিচারপতিদের ব্যবহƒত ড্রেসিং টেবিল, দোয়াত কলম ও নিব, এজলাসে ব্যবহƒত চেয়ার, চেম্বারে ব্যবহƒত চেয়ার, ইজি চেয়ার ও বাংলাদেশের প্রথম হাতে লেখা সংবিধান। এছাড়াও রয়েছে কিছু ফরম, ওকালতনামা, ক্যালেন্ডার এবং তালপাতায় সংস্কৃত ভাষায় লিখিত রায়। ইতোমধ্যে জাদুঘরে সংগ্রহে রাখার জন্য একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে থাকবে সকল প্রধান বিচারপতির ছবি, বিচারপতিদের কমপ্রিহেনসিভ লিস্ট, অ্যাটর্নি জেনারেলদের তালিকা ও ছবি, ১৯৪৭ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও সেক্রেটারির তালিকা ও ছবি, ১৯৭২ সালের প্রোভিশনাল কনস্টিটিউশনাল অর্ডার, হাইকোর্ট অফ বেঙ্গলের অরিজিনাল গেজেট নোটিফিকেশন, ১৯৭২ সালে সুপ্রিম কোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণ, ১৯৪৭ সালে হাইকোর্ট উদ্বোধনের সময় প্রদত্ত ভাষণ, ১৯৭৬ সালে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে দুজন প্রধান বিচারপতির গেজেট কপি, হাইকোর্ট বেঞ্চ করার গেজেট বঙ্গবন্ধু-সংক্রান্ত সব মামলার রায়, মাজদার হোসেন মামলার মূলকপি, টিপু সুলতান মামলার রায়, ঢাকার প্রথম জেলা জজের ছবি, ঢাকার প্রথম আদালত ভবনের ছবি এবং মি. ফার্ডের ছবি, যিনি একজন জেলা জজ ছিলেন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘরে অফিস সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাকসুদুজ্জামান। এছাড়া রেকর্ড অ্যারেঞ্জার হিসেবে গীতা রানী এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রয়েছেন মো. মোশারফ হোসেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন