শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ত্রিশালে চলছে অবাধ নদী দখল

প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদাতা : ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌর শহরের সোতিয়া নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন নদী দখল করে মার্কেট নির্মাণ, ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন ও মৎস্য ফিসারি করার মহোৎসব শুরু হয়েছে। সচেতন মহল দাবি করছেন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় উৎসবের আমেজে নদী দখল করছেন প্রভাবশালীরা। দখলদারদের কারণে নদী ভরাট হয়ে নদীর চেহারা পাল্টে খালের আকার ধারণ করছে। ফলে নদী হারাচ্ছে নব্যতা ও তার আপন গতি। অপরদিকে প্রশাসনের লোকজনের কাছে কথা বলে জানাগেছে তারা দখলদাররা যতই প্রভাবশালী হোক তারা সরকারের চাইতে প্রভাবশালী নয়, দখলদারদের দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ত্রিশাল পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে উপজেলা পরিষদের দেয়াল ঘেঁষে পৌরশহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুতিয়া নদীর ব্রীজ সংলগ্ন নদীর অধিকাংশ দখল করে ইসমাইল প্লাজা নামে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ইসমাইল হোসেন। ধানীখোলা উজান ভাটিপাড়া এলাকায় সুতিয়া নদীর পাড় দখল করে কয়েক একর জমির উপর মাছের ফিসারি করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী নাদিম, নাহিদ, আজাদ ও সোহেল মিয়া। নদীর দুইপাশে এমন ভাবে ফিসারি খনন করা হয়েছে যে, সেখানে নদীর চেহারা পাল্টে খালের আকার ধারণ করেছে।
অপরদিকে উপজেলার চেলেরঘাট খিরু নদীর ব্রীজের পূর্বপাশে আরিফ গ্রুপ কোম্পানির একটি প্রজেক্ট খিরু নদীর বিশাল একটি অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালে বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ হলেও পরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় প্রাচীরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় বলে জানা গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া বলেন, আরিফ গ্রুপ সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নিয়ে আমি কয়েকবার বাধা প্রয়োগ করলেও আরিফ গ্রুপের লোকজন জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে। খিরু নদীতেই চেলের ঘাট ব্রীজের পশ্চিম পাশের্^ রায়মনি নামক স্থানেও আকিজ গ্রুপও প্রায় অর্ধেক নদী দখল করে ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করে যাচ্ছে। এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জুয়েল অভিযোগ করে বলেন আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বার বার বাধা দিয়েছি ও প্রশাসনকেও জানিয়েছি কিন্তু নদী দখল ঠেকাতে পারেনি কেউ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড ব্যানার ব্রীজ সংলগ্ন সাইনবোর্ড বিহীন একটি কোম্পানি বানান নদীর অধিকাংশ দখল বহুতল ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সচেতন মহলের দাবি প্রশাসনিকভাবে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে নদী দখলরোধ সম্ভব হবে না। দখলদারদের হাত থেকে নদীগুলো রক্ষা না পেলে ইরি-বোরো আবাদে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন কৃষকরা। এতে ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতি ও শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও খরস্রোতা নদীগুলো হারাবে তার রুপ ও আপন গতি।
ইসমাইল প্লাজার মালিক ইসমাইল হোসেন জানান, ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করছি। বাধা দেয়া হয়েছিল পরে আদালত থেকে অনুমতি এনে কাজ করছি।
এসকল বিষয়ে আকিজ গ্রুপ ও আরিফ গ্রুপের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য কোম্পানির গেইটের ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে ডুকতে দেওয়া হয়নি এবং কর্তৃপক্ষের কারো সাথে মোবাইলেও যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়নি।
নদী দখলের বিষয়ে ত্রিশালে নব নিযুক্ত ইউএনও মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, ইসমাইল প্লাজা নির্মাণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে মার্কেটের মালিক আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানতে পেরেছি। খোঁজ খবর নিয়ে অন্যগুলোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রভাবশালীদের কোন দাপটের কাছে অসহায় কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন সরকারের চাইতে প্রভাবশালী কেহই নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন