স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সরকারের আমলে তিস্তা চুক্তি যাতে না হতে পারে সেজন্য বিএনপি ‘চক্রান্ত’ করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি ইস্যু তৈরির কারখানা। তাদের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই।
গতকাল সোমবার সকালে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু যাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটা ইস্যু তৈরির দল, এখন তাদের হাতে ভারতবিরোধী ইস্যু। তিনি বলেন, আসলে তিস্তা চুক্তি শেখ হাসিনার আমলে যাতে না হয়, এর জন্য যত রকমের চেষ্টা আছে তা করে যাচ্ছে বিএনপি। কথায় বলে, ‘যাকে দেখতে নাড়ি তার চলন বাঁকা’। মোট কথা তাদের উদ্দেশ্য তিস্তা চুক্তি শেখ হাসিনার আমলে যাতে না হয়। এটাই তাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চের শপথ ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করা, বিজয়ী হওয়া, স্বাধীনতা অর্জন করা। কাদের বলেন, আজ অনেক বছর পর ২০১৭ সালের এই দিনে আমাদের শপথ হবে, পঁচাত্তর-পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যারা ভ‚লুণ্ঠিত করেছে, অস¤প্রদায়িক চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে সা¤প্রদায়িক ডালপালা বিস্তার করে বিষবৃক্ষ তৈরি করেছে, তাদের মূলোৎপাটন করা। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোজাফফর হোসেন পল্টু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসন হুমায়ুন, মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না -ওবায়দুল কাদের
মেহেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান : মুজিবনগরে দেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়েছিল। তাই ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসটি যথাযোগ্য মযাদায় দেশের মানুষের পালন করা উচিত। গতকাল (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আরো বলেন, বিএনপি এখন নালিশি দলে পরিণত হয়েছে। তারা বিভিন্ন দেশে শুধু নালিশ করে বেড়ায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৭ এপ্রিল যারা পালন করে না, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও বিশ্বাস করে কি না আমার সন্দেহ আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যারা লালন করে, ১৭ এপ্রিল সরকার গঠনের চেতনাকেও তাদের লালন করতে হবে। যারা লালন করে না, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেও প্রকারন্তে অস্বীকার করে। এটাই হচ্ছে আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতা। তাদের আজ কোনো চেতনা নেই, মূল্যেবোধ নেই, সৌজন্যবোধ নেই।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন শুধু ইস্যু তৈরি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে। বিএনপিকে এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টি বলা হয়। নির্বাচনে নিজেরাই ভুল করে যায়নি। চোরাবালিতে আটকে গেছে। পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে জনগণের শুধু ঘৃণা পেয়েছে। একটার পর একটা ইস্যু তৈরি করা ছাড়া আর কাজ নেই। এখন সবশেষে ভারত জুজু। গেলরে গেল, ইন্ডিয়া হয়ে গেল। শেখ হাসিনা কেন গেলেন ইন্ডিয়া, কেন এত সম্মান। সর্বোচ্চ সম্মান। এটা তাদের গাত্রদাহ। তিস্তা তাদের অন্তরে নাই। সেখানে একটার পর একটা ইস্যু করা হয়। ইস্যু জনগণের কোনো কাজে আসে না। ইস্যু মাঠে মারা যায়। বিএনপির এখন মরা গাঙ। জোয়ার আর আসে না।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। বিগত দিনে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে এবং সেই সরকারের আমলে মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনও এই সরকারের অধীনেই হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। যে কোনো মূল্য আগামী নির্বাচনের শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আমরা আবার সরকার গঠন করব।
জনসভায় আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও আব্দুর রহমান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবর রহমান সিরাজ, নির্বাহী সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন, সদস্য পারভিন জামান কল্পনা, মেহেরপুর জেলা সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপি, সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি আবদুুল হাই এমপি, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, মেহেরপুর-২ আসনের এমপি মকবুল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগর টগর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, মুজিবনগর উপজেলা সভাপতি জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন