রুমু, চট্টগ্রাম থেকে : আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৩টায় লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৮তম আসর। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও শারীরিকভাবে সক্ষম করে তুলতে নগরীর বদরপাতি এলাকার আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে বলীখেলার সূচনা করেন। তারপর থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা উপমহাদেশে বাঙালীর ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক ও অহংকারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা এখনও ধরে আছে তার কীর্তিময় ইতিহাস। তাই বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় লোকজ উৎসব হিসেবে এটাকে চিহ্নিত করা যায়।
আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে আজ (সোমবার) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো পণ্যের স্টল নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় লোকসমাগমও বাড়ছে। তবে বৃষ্টির কারণে মেলায় কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়ছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা হরেক পণ্যের হাজারো পসরা সাজিয়ে বসেছে বিক্রেতারা রাস্তার দু’ধারে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল ও ঢাকা সাভারের মৃৎশিল্প প্রতিষ্ঠান, বগুড়া, নরসিংদী, জামালপুর, ঢাকা ও বলীর হাটের আসবাবপত্র নির্মাতা মালামাল নিয়ে এসেছেন। ক্রেতাদের ভিড়ে যান্ত্রিক শহরের প্রাণকেন্দ্র ঐতিহাসিক লালদীঘির আশপাশ এলাকায় বৈশাখী মেলা বসে গ্রামীণ আবহ সৃষ্টি করেছে।
আন্দরকিল্লা, বোস ব্রাদার্স, রাইফেল ক্লাব, কোতোয়ালী মোড়, জেল রোড ও লালদীঘির পাড়ে দোকানিদের অনেকেই পছন্দের জায়গা নিয়ে বসে গেছেন পসরা নিয়ে। বরাবরের মতো হাত পাখা, ফুলের ঝাড়ু আর গৃহস্থালির সামগ্রী এসেছে এবারও। হাত বাড়ালেই মেলায় পাওয়া যাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির পণ্য দা, বটি, ছুরি, পিঠা তৈরির পিঁড়ি, বেলচা, মাটির তৈরির কারুকার্যখচিত আকর্ষণীয় ব্যাঙ্ক, ফুলের টব, ফুলদানী, শোপিচ, শীতল পাটি, আস্তফলসহ গাছের চারা, বাঁশ ও বেতের তৈরি মোড়া, বাচ্চাদের খেলনা, বাঁশি, মুড়ি-মুড়কি, ফলমূল আর গহনা। আরো আছে চুড়ি-ফিতা, রঙিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, ঢোল, কাঠের তৈরি পুতুল, নকশী কাঁথা, খাঁচার পাখি ও মাটির কলস। সারাবছর মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনে এই মেলার জন্য। তারা বছরের গৃহস্থালি সামগ্রী এই মেলা থেকে সংগ্রহ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন