নরসিংদী জেলা বিএনপির আভ্যন্তরীন দ্ব›দ্ব নিরসন
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে ঃ নরসিংদীতে বিএনপির আভ্যন্তরীন দ্ব›দ্ব নিরসনে বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এড. ফজলুর রহমানের রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছে নরসিংদী জেলা বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। বিএনপির ‘এক নেতা এক পদ’ নীতির আওতায় এড. ফজলুর রহমানের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই নরসিংদী জেলা বিএনপি আগামী দিনের যাত্রা শুরু হবে। বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকনের বর্তমানে দুটি পদ রয়েছে। একটি হচ্ছে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব এবং অপরটি হচ্ছে নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি। এক নেতা এক পদ নীতি কার্যকর হলে খায়রুল কবির খোকনকে যে কোন একটি পদ ছেড়ে দিতে হবে। পাশাপাশি নরসিংদী জেলা বিএনপির বঞ্চিত নেতাদেরকে নতুন করে পদায়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে খায়রুল কবির খোকনের দলীয় অবস্থান ও বিদ্রোহী তথা বঞ্চিত নেতাকর্মীদের অবস্থান নির্ণিত হবে এড. ফজলুর রহমানের রিপোর্টের মাধ্যমে।
জানা গেছে, দীর্ঘ দিন যাবত নরসিংদী জেলা বিএনপিতে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বিধা দ্ব›দ্ব চলে আসছে। খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বকে নিয়ে এই অংশটি প্রথম বিরোধীতা শুরু করে। তারা খায়রুল কবির খোকনের নির্বাচনেও বিরোধীতা করে। যার ফলে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খায়রুল কবির খোকনসহ ৫টি আসনেই বিএনপি প্রার্থীরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। বিএনপি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও বিদ্রোহী অংশটির কারণে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি জেলা বিএনপি। এরপর থেকে বিএনপির সরকার বিরোধী প্রায় প্রতিটি কর্মসূচীতে বিএনপির বিদ্রোহী অংশের নেতাকর্মীরা যোগ না দেয়ায় কর্মসূচীগুলো যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি। খায়রুল কবির খোকন প্রতিটি কর্মসূচীতেই সামনের সারিতে থেকে পুলিশের সাথে চ্যালেঞ্জ করে কর্মসূচী পালনের চেষ্টা করেছেন। তার সাথে বেশ কয়েকজন ত্যাগী নেতাও সামনের সারিতে থেকেই কাজ করেছে। কিন্তু এরপরও কর্মসূচীগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ না করায় দলীয় কর্মসূচীগুলো পালিত হয়েছে অত্যন্ত সংকীর্ণ পরিসরে। বিদ্রোহী অংশের নেতাকর্মীরা বর্তমানে খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে বিরোধীতা থেকে অনেকটা সরে এসেছে। তারা বলছে খোকন মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হোক তাতে তাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু দলীয় নেতৃত্বে খোকনকে আরো ছাড় দিতে হবে। তাদের দাবী হচ্ছে খোকন কেন্দ্রীয় নেতা, তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এমপি হোন। বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা সকলেই খোকনের নেতৃত্বে কাজ করবেন। পক্ষান্তরে খোকন সমর্থকরা বলছে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত খায়রুল কবির খোকন কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় দুই নেতৃত্বেই থাকবে। নির্বাচনের পর তিনি যে কোন একটি নেতৃত্ব ছেড়ে দিবেন।
এ প্রসঙ্গে বিদ্রোহী অংশের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, দ্বিধা দ্ব›দ্ব ভুলে সকল নেতাকর্মীরা একত্রে একযোগে কাজ করলেই কেবল আগামী নির্বাচনে ৫টি আসন থেকে বিজয় অর্জন করা সম্ভব হবে। পক্ষান্তরে বিরোধ রেখে নির্বাচন করলে বিজয় সুদূরপরাহত হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধাণের জন্যই বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তার উপদেষ্টা এড. ফজলুর রহমানকে নরসিংদীর বিরোধ মিমাংসার দায়িত্ব দিয়েছেন। এব্যাপারে তিনি গত শনিবার নরসিংদীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের প্রধান আতিথ্যে জেলা বিএনপির প্রতিনিধি সভা করেছেন। এই প্রতিনিধি সভায় বিদ্রোহী অংশের অনেকে উপস্থিত হলেও সকল নেতাকর্মী উপস্থিত হয়নি। সংস্কারবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত মনোহরদী-বেলাব’র সাবেক এমপি সর্দার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, সাবেক ছাত্র নেতা সানাউল হক নীরু, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রায়পুরার সাবেক এমপি আব্দুল আলী মৃধাসহ অনেককেই সমাবেশে দেখা যায়নি। তারা কেন প্রতিনিধি সভায় যোগ দেননি তার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন