মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রায়পুরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অচলাবস্থা নিরসনে নেই কোন উদ্যোগ

প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী নরসিংদী থেকে : দীর্ঘ মাসাধিককাল ধরে সরকারী দল সমর্থিত দলিল লেখকদের অবরোধে জিম্মি থাকার পর রায়পুরার সাব-রেজিস্ট্রার হেলেনা পারভীনকে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত ১০ জন অসাধূ দলিল লেখকের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সৃষ্ট অচলাবস্থা দূরীভূত হচ্ছে না। নতুন সাব-রেজিস্ট্রার যোগদানের পরও রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদিত হচ্ছে না। শত শত জমি বিক্রেতা জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে এসে বিফল মনোরথে ফিরে যাচ্ছে। গত মাসাধিককালে দলিল সম্পাদন বন্ধ থাকায় সরকার কমবেশী ১০ কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। বঞ্চিত হয়েছে এ রাজস্বের ভাগীদার রায়পুরা উপজেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সংস্থাসমূহ। এলাকার সচেতন লোকজনের মতে দলিল লিখকদের অন্যায় দাবীর কাছে সরকার পরাভূত হয়েছে। নরসিংদী জেলা রেজিস্ট্রার মীর্জা মো. আতহার অচলবস্থা নিরসনে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়ে পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রথমে সরকার সমর্থিত ১০ জন দলিল লিখককে কারণ দশানোর নোটিশ দিলেও পরবর্তীতে তাদেরই চাপের মুখে পুনরায় আরো সাধারণ ১৫ জন দলিল লিখককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। শুধূ তাই নয় সরকারী দল সমর্থিতদের চাপে এ সব সাধারণ দলিল লিখকদেরকে রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন।
এলাকার লোকজন জানিয়েছে, রায়পুরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারী শর্ত ভঙ্গ করে দলিল সম্পাদিত হতো। এক শ্রেণীর দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রারের উপর চাপ সৃষ্টি করে নামজারী, খাজনা রশিদ ও বন্টন নামা ছাড়া এবং মৌজার রেট বর্হিভূতভাবে দলিল রেজিস্ট্রি করতো। এ সব অসাধূ দলিল লিখকদের চাপের সাব-রেজিস্ট্রার অনেক সময় ভুয়া দলিলও রেজিস্ট্রি করতে বাধ্য হতো। সাব-রেজিস্ট্রার হেলেনা পারভীন রায়পুরায় যোগদান করার পর এ সব অসাধূ দলিল লেখকরা পূর্ববতী রেওয়াজ অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রি করতে গেলে হেলেনা পারভীন এতে অসম্মতি জানায়। এক পর্যায়ে অসাধু দলিল লেখকরা হেলেনা পারভীনকে উৎকোচের বিনিময়ে দলিল সম্পাদন করার অনুরোধ জানালে তিনি তাও প্রত্যাখ্যান করেন। এতে অসাধূ দলিল লেখকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অপসারণের দাবীতে মাসাধিকাল পূর্বে দলিল লিখা বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, তারা সাধারণ দলিল লিখকদেরকেও চাপ প্রয়োগ তথা ভয়ভীতি দেখিয়ে দলিল লিখা বন্ধ রাখে। এ সব দলিল লিখকরা এলাকার মাস্তানদেরকে নিয়ে গোটা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস অবরোধ করে রাখে। সাধারণ দলিল লিখকরা দলিল নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে তাদেরকে অফিস থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অসাধূ দলিল লিখকরা সরকারী দল সমর্থিত বিধায় তাদের এ অন্যায় দাবী ও অবরোধের বিরোধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলার পর রায়পুরার এমপি রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজুর হস্তক্ষেপে সাব-রেজিস্ট্রার হেলেনা পারভীন বদলী হন। কিন্তু হেলেনা পারভীন অবৈধ আন্দোলনকারী যে ১০ জন অসাধূ দলিল লিখকের বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। সাধারণ দলিল লিখকরা বলেছেন, জেলা রেজিস্ট্রার মীর্জা মো. আত্হার বিনা অভিযোগে ১৫ জন সাধারণ দলিল লিখকদের কারণ দর্শানোর নোটিশসহ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দলিল রেজিস্ট্রি কাজে নিজেই বাধা সৃষ্টি করে রেখেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন