স্টাফ রিপোর্টার : কিডনী রোগিদের স্বল্পমূল্যে অত্যাধুনিক চিকিৎসা দেবে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল। সামাজিক শ্রেণি বিন্যাসে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের অল্পমূল্যে এবং অতি দরিদ্রদের বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস ও কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ রয়েছে এখানে। পাশাপাশি মাত্র ছয়শ’ টাকায় সাপ্তাহিক এরিথ্রেপোয়েটিন ইনজেকশন সুবিধা ও শহরের প্রান্তে বসবাসকারী রোগিকে মাত্র একশ’ টাকায় রাতে এ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ি পৌছানোর সুব্যবস্থা থাকছে। গতকাল হাসপাতালের ধানমন্ডি শাখায় ১০০ বেডের ডায়ালাইসিস সেন্টার ও আইসিইউ ইউনিট স্থাপন এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবাসমূহের সঙ্গে পরিচিত করার জন্য সংবাদ সম্মেলন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ডা. মো. হাফিজুর রহমমানের সভাপতিত্ব এ সময় বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ, গণস্বাস্থ্যের কিডনী বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল হামিদ, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার ডা. মাহবুবুর রহমান, ব্রাকের ডা. তাহমিনা প্রমুখ।
আলোচনায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্তমানে দেশে কিডনী রোগি বাড়ছে। কিন্তু এর চিকিৎসা সেবা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই বিনা চিকিৎসায় অকালে মারা যাচ্ছে। তাই কিডনি রোগিদের চিকিৎসা সুবিধার্থে আগামি ১৩ মে থেকে গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতালে অত্যাধুনিকমানের ডায়ালাইসিস কেন্দ্রে চালু হচ্ছে। এখানে নামমাত্র ফি’তে কিডনী রোগিদের সেবা দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, উত্তর আমেরিকার কানাডা কিউবা ছাড়াও এশিয়ার তাইওয়ান, জাপান, ইরান ও পাকিস্তানের সিন্ধু ও ইন্দাজ হাসপাতালে সকল করাচীবাসিদের জন্য বিনা খরচে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়া হয়। এছাড়া পার্শ্ববতী দেশ ভারতে মাত্র ১ হাজার থেকে ১২ শ’ রুপি খরচ লাগে। অথচ বাংলাদেশে প্রতি মাসে একজন রোগিকে শুধু ডায়ালাইসিস করাতেই ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। এছাড়াও ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি দেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চিকিৎসা পদ্ধতি উচ্চ মূল্যের কারনে অর্থের যোগান দিতে না পারায় ৯৫ ভাগ রোগি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে পারছেনা। মূলত সরকারি ব্যবস্থাপনার গাফিলতিতে এমনটা হচ্ছে। তাছাড়া এখানে মিউনিসিপ্যালিটি ট্যাক্সও অনেক বেশি। তাই গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সমাজের বিত্তবান মানুষদের সহযোগিতায় চিকিৎসার প্রয়োজন এমন অসহায় মানুষদের গোড়ায় সেবা পৌছায়ে দিতেই এই অন্দোলন।
তিনি বলেন, এখানে একশ’টি অত্যাধুনিক মানের ডায়ালাইসিস মেশিন ও ৬ বেডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বেড চালু থাকছে। সংক্রামক রোগাক্রান্ত বিকল কিডনী রোগিদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ওয়াইফাই সুবিধাসহ অডিও-ভিডিও যুক্ত ৭৫ টি আরামদায়ক শয্যা ও ২৫ টি রেনাল চেয়ার সুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি রোগিদের সার্বিক সেবার মান্নোয়নে ৫ জন সিনিয়র বিশেজ্ঞ, ৪ জন জুনিয়র বিশেষজ্ঞ, ১০ জন রেজিষ্টার ও প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক, ৫০ জন নার্স ও ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১০ জন টেকনিশিয়ান রয়েছে। সর্বস্তরের রেজিষ্টার্ডভুক্ত রোগিরা দিন-রাত ২৪ ঘন্টাব্যাপী চালুকৃত এই ইউনিটের মেশিনে সেবা নিতে পারবে। এভাবে দৈনিক ৫০০ জন বিকল কিডনী (ইএসআরডি) রোগি চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়াও প্রতিদিন ২৫ জন অতি দরিদ্র রোগিকে বিনা পয়সায় ডায়ালাইসিস করা হবে। তাদের চিকিৎসার মান নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবেন। এভাবে আরেকটি হার্ট ও ক্যান্সার সেন্টার গড়ে তুলতে চাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন