রাঙামাটি জেলা সংবাদদাতা: রাঙামাটির সাপছড়িস্থ দেপ্পোছড়িতে গত ৩ই মে সংগঠিত গণডাকাতির ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত এক পাহাড়ি যুবককে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে আটক হওয়া এই যুবকের নাম রমেশ ত্রিপুরা (২৯)। তার বাড়ি শহরের কাঠাঁলতলীস্থ গর্জনতলী এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, রমেশের বিরুদ্ধে এর আগেও থানায় অন্তত ৬টি মামলা রয়েছে। রমেশ পেশাদার সন্ত্রাসী বলেও জানিয়েছে পুলিশ। আটকের পর রমেশের কাছ থেকে ডাকাতি করা টাকার কিছু অংশ ও দুইটি মোবাইল সেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটককৃত রমেশ জানায়, সে নিজে ছাড়া এই ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত সকলেই চাকমা সম্প্রদায়ের। এছাড়া প্রভাবশালী আঞ্চলিক দলের এক নেতার প্রত্যক্ষ মদদে এবং সেই নেতা কর্তৃক প্রদত্ত অস্ত্র দিয়েই সংগঠিত করে গণডাকাতি।
কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই আমরা শহরের বিভিন্ন স্থানে সোর্সের মাধ্যমে এবং সাদা পোশাকের পুলিশের মাধ্যমে নজরদারি করা হচ্ছিলো। এরই মধ্যে আমরা গোপনে সংবাদ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে রমেশকে আটক করি। এসময় তাকে থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, তারা ১০ জন মিলে ৩ই মে রাতে উক্ত গণডাকাতির ঘটনা সংগঠিত করে। তার সাথে আরো ডাকাতিতে অংশ নেয়া সকলেই রাঙামাটি শহর থেকে শুরু করে সাপছড়ি এলাকার বাসিন্দা। ডাকাতির টাকা ভাগাভাগি করে সেগুলো আনতে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে আটক হয় রমেশ।
এদিকে শনিবার পুলিশ রমেশকে রাঙামাটির আদালতে সোপর্দ করলে আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন।
শাস্তির দাবিতে রাঙামাটির সকল রুটে পরিবহন ধর্মঘট পালিত
রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌ-পথে অনির্দিষ্টকালের পরিবর্তে গতকাল দিনব্যাপী পরিবহন ধর্মঘট শান্তিপূর্নভাবে পালন করেছে রাঙামাটি জেলা সড়ক ও নৌযান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা। এই ধর্মঘটের কারনে জেলার অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লায় সবগুলো রুটে যাত্রীবাহি সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ ছিল। সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, ব্যাংক বীমা গুলো উপস্থিতির হার স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য কম থাকলেও দৈনন্দিন কার্যক্রম সুষ্টভাবে পরিচালিত হয়েছে। এদিকে ধর্মঘটের সমর্থনে গতকাল বেলা এগারোটার সময় সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরে বনরূপা ও কাঠালতলী এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করলেও কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে শুক্রবার (০৫মে) বিকেলে রাঙ্গামাটির সকল রুটে পণ্যবাহীর মালিক-চালকদের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী কর্তৃক হত্যা, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং জিম্মি দশা থেকে উদ্ধারের দাবিতে রাঙামাটি ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অনির্দিষ্ট্যকালের জন্য এ ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তাদের অনড় অবস্থানের প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রæতি দেওয়ায় অনির্দিষ্ট্যকালের পরিবর্তে শুধুমাত্র রবিবার রাঙামাটি জেলার সকল রুটে পরিবহন ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খুন,অপহরণ,চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ
পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কর্তৃক খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রোববার (০৭মে) দুপুরে শহরের বনরূপা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গনে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল প্রকার চাঁদাবাজি, খুন, ঘুম বন্ধ করতে হলে পাহাড়ে আরও সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে চাঁদাবাজি, খুন, ঘুম বন্ধ হবে না বলে বক্তারা জানান।
উল্লেখ্য, গত ৩ই মে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটের দেপ্পোছড়ি এলাকায় রাস্তায় যাত্রীবাহি ও মালবাহি অন্তত ১৫টি গাড়ি থামিয়ে আরোহীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ অর্ধশত মোবাইল সেট হাতি নেয় একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী। এই ঘটনায় একজনের গলায় ছুরি চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে উক্ত সন্ত্রাসীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন