ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহিন, যুবলীগ নেতা কৃষ্ণ ও রাজু আহম্মেদ ধর্ষণের দায়ে বুধবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। শাহিন কোটচাঁদপুর রেল স্টেশনপাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে। গ্রেফতারকৃত অন্য দুই ধর্ষক হচ্ছে স্টেশনপাড়ার হারেজ আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ ও বাজেবামুনদা গ্রামের যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি শ্রীকান্তের ছেলে কৃষ্ণ কুমার। পুলিশ আজগার আলী ও সবুজ নামে আরো দুই ধর্ষককে খুঁজছে।
কোটচাঁদপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানায় বুধবার দুপুরে ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ৯/২০১৭।
ওসি জানান, শেখ শাহিন, রাজু আহম্মেদ ও কৃষ্ণ নামে তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়া আজগার আলী ও সবুজ নামে আরো দুই ধর্ষককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মামলার এজাহার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে গত সোমবার কালীগঞ্জ উপজেলার নলডাঙ্গা ও মনোহরপুর গ্রামের দুই মেয়ে কোটচাঁদপুরে আসে সুন্দরবন এক্সপ্রেসে ঢাকায় যাওয়ার জন্য। তারা গার্মেন্টসে কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাচ্ছিলো। রাতে তারা ট্রেনের জন্য কোটচাঁদপুরে প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছিলো। এ সময় যুবলীগ নেতা কৃষ্ণ, রাজু, সবুজ, আজগার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহিন তাদের উঠিয়ে প্রথমে বিহারীপাড়া ও পরে সরকারী কেএমএইচ ডিগ্রী কলেজের পেছনে রিক্সা চালক আজিমের কলোনিতে নিয়ে যায়। সেখানে আজিমের স্ত্রীর সহায়তায় সারা রাত ধরে মেয়ে দুইটির উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ষাট হাজার টাকায় রফা করা হয়। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনাটি ব্যাপক ভাবে জানাজানি হয়ে পড়লে পুলিশ বুধবার তাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়।
কোটচাঁদপুর পৌর সভার মেয়র জাহিদুল জানান, ধর্ষকরা তার কোন দেহরক্ষী নয়। কৃষ্ণের বাবা চা বিক্রেতা ও রাজুর মা ভিক্ষাবৃত্তি করে। তারা ছাত্র ও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি বলেন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের কোন্দল থাকায় বিষয়টি নিয়ে গেম খেলা হচ্ছে।
মেয়ের চাচা ও নিকটাত্মীয় জানান, মেয়ে দুইটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তারা যার যার নাম বলছে এবং চিনতে পেরেছে পুলিশ তাদের তাদের আসামী করছে।
কোটচাঁদপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা জানান, বুধবার বিকালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়ে দুইটিকে ঝিনাইদহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আহম্মেদ জানান, যদি এমন ঘটনা ঘটেই থাকে তবে আমিও এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, যেহেতু কোটচাঁদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহিন গ্রেফতার হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়েছে আমরা তাকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠাবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন