গোদাগাড়ী (রাজশাহী ) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুরের জঙ্গি হামলায় নিহত ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দেবে পুলিশ।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতিনিধি হিসেবে সকালে হাসপাতালে নিহত আবদুল মতিনের লাশ দেখতে যান আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি নিহত আবদুল মতিনের স্ত্রী তানজিলা বেগমকে জানান, তাকে ১০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেবে পুলিশ সদর দপ্তর।
উপ-পরিচালক জানান, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) একেএম শাকিল নেওয়াজ ঢাকা থেকে রাজশাহী এসেছেন। তিনি নিহতের পরিবারকে ব্যক্তিগতভাবে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
আবদুল মতিনের দাফনের জন্য বিভাগ আরও ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। আর কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হওয়ায় আবদুল মতিনের পরিবার ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা পাবে। এছাড়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কল্যাণ তহবিল থেকে আবদুল মতিনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করবেন। তবে সেটা কত টাকা তা জানাতে পারেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের এই জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। জঙ্গিদের ওই বাড়িটিতে পানি স্প্রে করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও যোগ দেন। এ সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে জঙ্গিরা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে নিহত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিন। এ সময় পুলিশের এক এএসআই ও এক কনস্টেবলও আহত হন।
নিহত আবদুল মতিন ফায়ার সার্ভিসের গোদাগাড়ী সদর স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি একই উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের মাটিকাটা ভাটা গ্রামে, বাবার নাম মৃত এহসান আলী।
এদিকে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় একই পরিবারের দুই নারীসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে, তারা আত্মাহুতি দিয়েছে। ওই বাড়ি থেকে এক নারী আত্মসমর্পণ করেছেন। উদ্ধার করা হয়েছে ৮ বছর ও তিন মাস বয়সী তার দুই সন্তানকেও। ৮ বছর বয়সের ছেলে জুবায়ের হোসেন ও তিন মাসের মেয়ে আফিয়া খাতুনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে সকাল থেকে বাড়িটি এখনও ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যর। ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও সোয়াট টিম। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর একতলা ওই টিনের বাড়িটিতে অভিযান চালানো হবে।
নিহত জঙ্গিদের লাশ এখনও বাড়িটির পাশে কেটে নেওয়া ধানের জমিতে পড়ে আছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাড়ির ভেতর এখনও কোনো জঙ্গি জীবিত অবস্থায় আছে কী না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ জন্য প্রস্তুতি হয়েই বাড়ির ভেতরে ঢুকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন