স্টাফ রিপোর্টার : হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশে গরু জবেহ নিষিদ্ধের এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের দাবি করায় তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের অসাম্প্রদায়িক পরিবেশকে বিনষ্ট করার লক্ষ্যেই এ সংগঠনটি বিশেষ মহলের এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ইসলাম, দেশ, রাষ্ট্রধর্ম ও জাতির পিতার বিষয়ে চক্রান্ত শুরু করেছে। সাম্প্রদায়িক এ সংগঠনটির উস্কানি প্রতিহত করা হবে।
ইসলামী আন্দোলন মহানগর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন বলেছেন, ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের’ রাষ্ট্রধর্ম, ইসলামের বিরোধিতা এবং বাংলাদেশে গরু জবেহ নিষিদ্ধ করতে হবে’ এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা লাগাতে চায়। ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের’ উস্কানিমূলক এসব বক্তব্য সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের উস্কানির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের স্পর্ধা দিন দিন বেড়েই চলছে। নেপাল, ভুটান ও ভারতে বিভিন্ন উৎসবে লক্ষ লক্ষ পাঁঠা ও গরু বলি দেয়া হলেও ঐক্য পরিষদ এসব বিষয়ে কোনো কথা বলছে না। কাজেই তাদের উস্কানি বন্ধ করতে হবে। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে বসে মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে ধর্মীয় উস্কানি ও উন্মাদনা সৃষ্টি করতে চায়। তিনি বলেন, ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ’কে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা বারবার উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার দায়ে তাদের নিষিদ্ধ করা সময়ের অনিবার্য দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে চলমান দেশব্যাপী দাওয়াতী মাসের কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, সেক্রেটারি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম।
ঐক্য পরিষদ ইসলাম দেশ জাতির পিতা নিয়ে চক্রান্ত করছে
মুসলমানদের ঈমান, আক্বিদা ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তথাকথিত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তাদের অপতৎপরতা চালিয়েই যাচ্ছে। স্বাধীনতা ও মানবতাবিরোধীদের অর্থায়নে এবং সুরঞ্জিত ও গয়েশ্বর গং মার্কাদের গোপন পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠনটি বাংলাদেশে গরু জবেহ বন্ধের দাবি নিয়ে এখন মাঠে নেমেছে। এইভাবে দেশে-বিদেশে বসে শ্যামল চক্রবর্তী গংরা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্ট করতে গভীর চক্রান্ত করেই চলছে। আওয়ামী ওলামা লীগের বর্ষীয়ান নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, পীর আখতার হোসেন বুখারী, নির্বাহী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজি মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী ও নূর মোহাম্মদ আহাদ আলী সরকার গতকাল এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে বিরাজমান ঐতিহ্যবাহী সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টিকারী সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, তথাকথিত সংগঠনটি মুসলমানদের বিভিন্ন আকিদা নিয়ে সমালোচনা করার পাশাপাশি অর্থলোভ ও হিংসার বশবর্তী হয়ে বাঙালি জাতির জনক শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জাতির পিতা হিসেবে মানতে চায় না। শুধু তাই নয়, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধেও অশালীন ভাষা ও কুৎসা রটনা করে যাছে। তথাকথিত এই সংগঠনটির নেতারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্রদের অর্থের নিকট বিক্রি হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। সরকারদলীয় সুরঞ্জিত, বিএনপির গয়েশ্বর গং এবং স্বাধীনতাবিরোধী নেতারা এই সংগঠনটিকে অর্থ সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে শান্তিপূর্ণ দেশে অশান্তির দাবানল জ্বালানোর নীল নকশার ছক একে চলছে।
বিবৃতিতে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সাম্প্রদায়িক সংগঠনটি তাদের মিশন-ভিশন নিয়ে যতই অপতৎপরতা চালাক না কেন তারা হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পুণ্যভূমি এবং শহীদ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় নবীপ্রেমিক মুসলমানরা তা বাস্তবায়ন করতে দিবে না। ইসলামের বিধান অনুযায়ী মুসলমানরা মহান আল্লাহ পাক উনার গায়েবী সাহায্য নিয়ে উল্লেখিত মিশন-ভিশনকে ব্যর্থ করে দিবে, ইনশাআল্লাহ!
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি, সংগঠন, দল সম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে টিকে থাকতে পারেনি, আপনারাও পারবেন না। ফেরাউন, নমরুদ, সাদ্দাম, আবু জেহেল, আবু লাহাবের জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন