খলিলুর রহমান : সিলেট নগরীর আখালিয়া খলাপাড়ার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নাজিম উদ্দিন। তাকে কুকুর কামড় দিয়েছে গত এক সপ্তাহে আগে। গত বৃহস্পতিবার সিলেট সদর হাসপাতালে এসে সে জলাতঙ্কের একটি ইনজেকশন দেয় বিনামূল্যে। নাজিম ডাক্তারের কথামত গতকাল শনিবার সকালে আসে দ্বিতীয় ইনজেকশনটি দিতে। কিন্তু হাসপাতালের স্টাফরা তাকে জানিয়ে দেয় ইনজেকশন শেষ হয়ে গেছে। তবে ৬শ’ টাকা দিলে ইনজেকশনের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। অথবা তার মত ৩ জন রোগী এক সঙ্গে এসে ২শ’ টাকা করে মোট ৬শ’ টাকা দিলে ইনজেকশন দেয়া হবে। নাজিম বেলা দেড়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে আরো দুইজন রোগীর। কিন্তু অন্য রোগীরা না আসায় সদর হাসপাতালের স্টাফরা বলে দেন আগামীকাল আসেন। দেখেন তিনজন রোগী মিলে ৬শ’ টাকা দিয়ে ইনজেকশন দিতে পারেন কি না। এছাড়া আমাদের কিছু করা নেই। এমন তথ্য দিয়েছেন, প্রতিবন্ধী নাজিম উদ্দিনের বাবা আবু সাহিদ। তিনি কান্নাজাড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ড রয়েছে। সেই কার্ড দিয়ে গত বৃহস্পতিবার আমি সদর হাসপাতালে এসে ইনজেকশন দিয়ে গেছি। কিন্তু আজ হাসপাতাল স্টাফরা টাকা দাবি করায় ইনজেকশন না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে। জানা গেছে, প্রতিবন্ধী রোগীকে সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তারা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে এলে রোগীর সারিতে দাঁড় করিয়ে না রেখে তাদের টিকিট দেয়া এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়ার পর হাসপাতালে ভর্তিযোগ্য হলে শয্যার ব্যবস্থা করতে চিকিৎসক এবং কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারিত একজন সেবা প্রদানকারীকে হাসপাতালে রাখার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশ সারাদেশের সিভিল সার্জন ও বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে রয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনা মেনেই আমরা তাদের চিকিৎসাসেবা দেই। তবে সিলেট সদর হাসপাতাল সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, সদর হাসপাতালের বিষয়টি ওসমানী হাসাপতাল দেখাশোনা করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন